ইমরুলের সাফল্যের গল্পে মিশে আছেন মুশফিকও

এক যুগ আগের কথা। যখন বাংলাদেশের সাবেক কোচ ডেভ হোয়াটমোর লর্ডসে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে বলেছিলেন, এ হলো এমন একজন ক্রিকেটার, যে কঠোর অনুশীলন ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজের সামর্থ্যকেও ছাড়িয়ে যায়।

১৩ বছর আগে মুশফিককে নিয়ে সাবেক কোচ যা বলেছিলেন, ক্যারিয়ারে অসাধারণ সব কীর্তি গড়ে সেই কথাটাই যেনো প্রমাণ করে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে তার উইকেটে নামা মানেই বাংলাদেশের দর্শককের স্বস্তিতে থাকা। এশিয়া কাপে একটি সেঞ্চুরি ও একটি ৯৯ রানের ইনিংস খেলে মুশফিক ধরে রেখেছেন আশ্চর্য ধারাবাহিকতা। অনুশীলনে বা ঐচ্ছিক অনুশীলনে সবার আগে উপস্থিত হওয়া এবং সবার পরে অনুশীলন শেষ করার যে কঠোর পরিশ্রম, তাই মুশফিককে ক্রমেই নিয়ে যাচ্ছে আরো উঁচুতে।

কঠিন পরিশ্রমে পাওয়া এই সফলতার গল্প অনুপ্রাণিত করে ইমরুল কায়েসকেও। দশ বছরের ক্যারিয়ারে যাকে দলের বাইরে চলে যেতে হয়েছে আট থেকে নয়বার। ইমরুল আবার ফিরেও এসেছেন নানাভাবে।

রোববার ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে খাদের কিনার থেকে টেনে তুলার পর, ইমরুল জানালেন তার এমন খেলার পেছনে অনুপ্রেরণা হয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম। ইমরুল বলেন, ‘আমি একটি ব্যাপার বিশ্বাস করি, কেউ যদি কঠোর পরিশ্রম করে, সে তার ফল পাবেই। আমি মুশফিককে দেখে অনেক কিছু শিখি। মুশফিক যেভাবে কষ্ট করে; ও কিন্তু কষ্ট করেই আজকের মুশফিকুর রহিম হয়েছে। আমি সব সময় এটা অনুসরণ করার চেষ্টাটা করি। বিশ্বাস করি যে কষ্ট করলে তার ফল পাওয়া যায়।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৩৯ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে বসেছিলো বাংলাদেশ। মাশরাফিরা ২০০ রান করতে পারবেন কি না, তখন সংশয় ছিলো এ নিয়েই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ পায় ২৭১ রানের বিশাল পুঁজি। তাতে সবচেয়ে বড় অবদান ইমরুলের ১৪৪ রানের। এ ছাড়া হাফ সেঞ্চুরি করে চমকে দিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও।

ম্যাচ শেষে সাইফুদ্দিনকেও কৃতিত্ব দিয়েছেন ইমরুল। তিনি বলেন, ‘সাইফুদ্দিন অনেক দিন পর দলে ফিরেছে। ওই পরিস্থিতিতে যেভাবে ব্যাট করেছে, অবশ্যই ওকে কৃতিত্ব দেব। তরুণ একটা ছেলে, চাপটা খুব ভালো সামলেছে। আমি ওর সঙ্গে খেলার সময় কথা বলছিলাম অনেক। শুরুতে একটু নার্ভাস ছিল, পরে ঠিক হয়ে গেছে।’

ইমরুল আরো বলেন, 'এভাবে মনে হয় যে আস্তে আস্তে তরুণরা বুঝতে পারছে যে দলের কী দরকার, কোন পরিস্থিতিতে কী করতে হয়। যখন পাঁচ জন থাকবে না, ওরা হয়ত আরও পরিণত হবে। আরও ভালোভাবে সামলাতে পারবে এই ধরনের পরিস্থিতি।'

মোটিভেশনার স্পিকাররা প্রায়ই বলেন যে, দিন শেষে অভিজ্ঞতাই গড়ে দেয় সবচেয়ে বড় পার্থক্য, কঠোর পরিশ্রমই ঠিক করে দেয় ভাগ্যের পথরেখা। ভাঙাগড়ার ক্যারিয়ারে ১৪৪ রানের ইনিংস খেলে নায়ক হওয়া ইমরুলের কথায় যেনো মোটিভেশনার স্পিকারদের কথারই প্রতিধ্বনি। অবশ্য এ দিন তার চেয়ে বড় মোটিভেশন দেয়ার মতো অবশ্য কারো থাকার কথা নয়!