অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ

ত্রিপানোর বাউন্সারটা আলতো করে লেগে ঠেলেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরি হচ্ছে। কিন্তু কোনো উল্লাস নেই ইমরুল কায়েসের। সেঞ্চুরির রানটি পূর্ন করার পর প্রথমে হেলমেট খুলে ফেললেন। তারপর ব্যাটটা দু'হাতের ওপর ফেলে দোল খাওয়াতে লাগলেন ইমরুল। মনে হচ্ছিল, কোনো এক শিশুকে কোলে করে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছেন। আহা! কী সুন্দর সেঞ্চুরি উদযাপন।

সদ্য বাবা হয়েছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ওপেনার। সেটাই মিশে থাকল তার সেঞ্চুরি উদযাপনে। সেঞ্চুরি পূর্ন করার আগে তার ইনিংসটা যতোটা সুন্দর ছিল তার চেয়ে অনেকগুন বেশি ছিল ওই সেঞ্চুরি উদযাপন। ওরকম উদযাপনের পর ইমরুলের ব্যাটিংটাও যেন অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে উঠল! সেঞ্চুরির পর জিম্বাবুইয়ান বোলারদের স্রেফ কচুকাটা করেছেন ইমরুল। সেঞ্চুরির পর মাত্র ২১ বলে করেছেন ৪৪ রান।

জাতীয় দলে উপেক্ষিত ছিলেন দীর্ঘ দিন। গত এশিয়া কাপে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের লজ্জাজনক ব্যর্থতার পর ডাক পেয়েছিলেন। এশিয়া কাপে মাঠে নেমেই নিজের অভিজ্ঞতার ধার বুঝিয়েছিলেন ইমরুল। তার পুরস্কার হিসেবে জিম্বাবুয়ে সিরিজের দলে সুযোগ পাওয়া।

কিন্তু দলে সুযোগ পেলেও ইমরুলের একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল। তরুণ নাজমুল হোসেন শান্তকে আবারও সুযোগ দেয়ার জন্য ইমরুলকে নাও নেওয়া হতে পারে একাদশে এমন কথাও শোনা যাচ্ছিল। সেই শঙ্কা একদিকে রেখে আজ তাকে রাখা হলো একাদশে। এরপরই দেখিয়ে দিলেন ইমরুল।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটিতে আজ টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে ১৭ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। মুশফিক-মিঠুনরা মাঝে ধাক্কা কাটিয়ে তোলার চেষ্টা করেও ব্যর্থ। একটা সময় ১৩৯ রানের মাথায় ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বসে মাশরাফির দল। 'পচা শামুকে' পা কাটছে না তো আবার! তখন উকি দিচ্ছিল এমন সম্ভাবনা। কী দুর্দান্তভাবেই সেই সম্ভাবনাটাকে অনেকদূর পাঠিয়ে দিলেন ইমরুল।

অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়াল বাংলাদেশ, যার নেতৃত্ব দিলেন ইমরুল। ৪৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১৪৪ রান করেছেন। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলতে ১৪০টি বল খেলেছেন ইমরুল। তার ইনিংসে চারের মার ১৩টি, ছক্কা ৬টি।

একটা সময় ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৭১ রান তুলেছে। আট নম্বরে নেমে ৬৯ বলে ৫০ করেছেন তরুণ সাইফুদ্দিন।