ভারতে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর দায় নিচ্ছে না কেউ!

রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে হিন্দুধর্মীয় প্রধান উৎসব দূর্গা পূজার আনন্দ করছিলেন স্থানীয় হিন্দুরা। দশমীর সন্ধ্যায় জমায়েত হওয়া সেই মানুষগুলোর উপর দিয়ে ট্রেন চালিয়ে দেয়া হয়। মর্মান্তিক এ ট্রেন দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, আহত হন কয়েকশত মানুষ। কিন্তু ভারতের অমৃতসরে এত মানুষের প্রাণহানির দায় নিতে কেউ রাজি নয়।

আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ভারতের পশ্চিমের রাজ্য পাঞ্জাবের অমৃতসরের নিকটবর্তী চৌরা বাজার এলাকায় দশেরা অনুষ্ঠান করে স্থানীয় একজন কংগ্রেস কাউন্সিলর। জায়গাটি ছোট হওয়ায় অনেকে রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে অনুষ্ঠান দেখছিলেন। এমন সময় ৯১ কিলোটিমার বেগে হাওড়ামুখী অমৃতসর এক্সপ্রেস ভিড় চিরে চলে যায়। কয়েক মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় অসংখ্য মানুষ।

এ মর্মান্তিক ঘটনার পর স্থানীয়রা বলছেন, অনুষ্ঠানের একটি অংশে আগুন লাগার পরও একদিকে পূজার বাজির শব্দ শোনা যাচ্ছিলো, অন্যদিকে আলোর ঝলকানির মধ্যেই ছুটছিল ডেমু ট্রেন। এর মধ্যেই ছোটাছুটি করছিল মানুষ। এমন সময় ট্রেনটি ১ নম্বরে লাইনে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা মানুষগুলোকে কচুকাটা করে চলে যায়।

ঘটনার পরদিন সরকারি হিসেবে ৬১ জনের মৃত্যুর কথা বলা হলেও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, নিহতের সংখ্যা শতাধিক হবে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুরো এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে অমরেন্দ্রের সরকার এ দুর্ঘটনার দায় নিজেদের কাঁধে নিতে নারাজ।

এদিকে এ ঘটনার জন্য অনেকেই স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনকে দায়ী করছেন। কিন্তু তারাও এ ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। এখন পর্যন্ত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ আলাদা তদন্তের ঘোষণা দিলেও ঘটনার দায় নিচ্ছে না। তারা বলছে, এ ঘটনায় ডেমু চালকের কোনো দোষ নেই।

রেল প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা এ ঘটনার জন্য অনুষ্ঠান আয়োজকদের দায়ী করে বলেন, ‘রেললাইনের ধারে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা ঠিক হয়নি।’ এজন্য রেলের জমিতে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগে উল্টো একটি এফআইআর করা হয়েছে।

এরপর থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজক কংগ্রেস নেতা মিঠ্ঠু লাপাত্তা রয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, ঘটনার দায় এড়ানোর প্রতিযোগিতা চলছে!