ইন্টারপোল প্রধান প্রথমে নিখোঁজ, পরে আটক দেখালো চীন

গণমাধ্যমের কথাই সত্য হলো। নিখোঁজ ইন্টারপোল প্রধান মেং হোংউ আইকে আটকে রেখেছে চীন। বেইজিং বলছে, আইনভঙ্গের কারণে দেশটির দুর্নীতি তদন্তকারী সংস্থা মেংকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

মেং হোংউআই গত ২৫ সেপ্টেম্বরে ফ্রান্স থেকে চীনে যাওয়ার পর নিখোঁজ হন। তার পরিবার অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাধ্য হয়েই গত বৃহস্পতিবার ফরাসি পুলিশের কাছে অভিযোগ করে। তখনই আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো মেংকে চীন আটক রাখতে পারে বলে খবর প্রকাশ করেছিল।

গত শুক্রবার ফরাসি পুলিশ জানায় তারা চীনের সঙ্গে মেংয়ের বিষয়টি নিয়ে কথা বলছে। তখনো চীন মেংকে আটক রাখার কথা অস্বীকার করেছিল। 

বেশকিছু দিন ধরেই চীনে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান চলছে। এতে অনেক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা, রাজনীতিক ও অভিনয় শিল্পী গুম হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনার সপ্তাহ বা মাস খানেক পর তাদের আটক দেখানো হচ্ছে। গত জুলাইয়ে নিখোঁজ হন দেশটির জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফান বিংবিং। এ সপ্তাহের শুরুর দিকে তিনি জনসম্মুখে আসেন। অবশ্য ৮৮৩ মিলিয়ন ইউয়ান জরিমানাও দিতে হয় তাকে।

আর মেং হোংউআই সর্বশেষ ব্যক্তি যাকে একই কায়দায় নিখোঁজের পর আটক দেখানো হলো।

এদিকে মেংকে আটক করার ঘটনা জানার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারপোল জানিয়েছে তারা মেং-এর পদত্যাগপত্র পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শর্ত অনুসারে দক্ষিণ কোরিয়ার কিম জং ইয়াংকে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট করা হলো।

স্কাই নিউজের কূটনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ডমিনিক ওয়াঘর্ন জানান, চীনের কম্যুনিস্ট পার্টির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের নিখোঁজ হওয়ার খবর নতুন নয়। দেশটির সরকারের জন্য কোনোভাবে হুমকি কিংবা প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ এমন ব্যক্তিকে প্রথমে তুলে নেয়, কয়েকদিন জিজ্ঞাসাবাদের পর আটক দেখায়। মেং হংওয়ের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাও এমনটি বলে ধারণা করছেন ডমিনিক ওয়াঘর্ন। ২০১২ সালে শী জিন পিং ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে ১০ লাখের বেশি দলের কর্মকর্তাদের এভাবে শৃঙ্খলাজনিত শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে।

মেং ১৯৫৩ সালে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হিলংজিয়াংয়ের হার্বিনে জন্মগ্রাহণ করেন। ২০১৬ সালে ইন্টারপোলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার আগে চীন সরকারের জন নিরাপত্তা বিষয়ক উপমন্ত্রী ছিলেন। এ ছাড়াও তিনি দেশটির কম্যুনিস্ট পার্টির একজন উচ্চ পর্যায়ের নেতা।