সাকিবের ইনজুরি, চিকিৎসকের পরামর্শ এবং বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন তো সাকিব আল হাসান? বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সেরা ক্রিকেটারকে নিয়ে প্রশ্নটা ওঠেই গেছে। সাকিবের আঙ্গুলে ইনজুরি, ইনফেকশন, চিকিৎসকের পরামর্শ, অস্ত্রোপচার ইত্যাদি নিয়ে হিসাব কষলে প্রশ্নটা ঘুরপাক খেতেই পারে মনে।

বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ইনজুরিতে পড়েছিলেন চলতি বছরের প্রথম দিকে, দেশের মাটিতে ত্রিদেশিয় সিরিজে। তারপর একটা সময় জানা গেল ইনজুরিতে পড়া সাবিকের কনিষ্ঠ আঙ্গুলে অস্ত্রোপচার করতেই হবে। তখন চিকিৎসকরা এটাও জানান, অস্ত্রোপচার পরে করলেও খুব বেশি সমস্যা হবে না।

দলের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার বলে ওই কথার ওপর ভিত্তি করেই ব্যথার ওষুধ নিয়ে উইন্ডিজ সিরিজ খেলেছেন। এশিয়া কাপের সময় অস্ত্রোপচারের কথা শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত খেলতে গেছেন সাকিব। দলের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে ব্যথার ওষুধ নিয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এশিয়া কাপটা। বিপত্তি ঘটল সেখানেই।

এশিয়া কাপের চার ম্যাচ খেলার পর ব্যথা বেড়ে যাওয়ার কারণে দেশে ফিরতে বাধ্য হন সাকিব। দেশে ফেরার একদিন পর প্রচন্ড ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন ইনজুরির জায়গায় ইনফেকশন হয়েছে। তড়িৎ পুঁজ বের করে বেশ কয়েকদিন রাজধানীর একটি হাসপতালে ভর্তি থাকতে হয়েছে সাকিবকে।

তারপর গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন বাংলাদেশের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সেখানে গিয়ে জানতে পারলেন আরেক দুঃসংবাদ। চিকিৎসক জানান, ইনফেকশন তৈরি হওয়ার কারণে ছয় মাসের আগে অস্ত্রোপচার করা যাবে না তার হাতে।

অস্ট্রেলিয়া থেকে সাকিব জানিয়েছেন, 'এই মুহূর্তে ইনফেকশনের যে অবস্থা তাতে ৬ মাসের মধ্যে সার্জারি করানো যাবে না। ইনফেকশন থাকা অবস্থায় সার্জারি করালে হাতের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাবে। তাই ডাক্তাররা ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। যখন সব পরীক্ষা শেষে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে আর কোন ইনফেকশন নেই বা ফিরেও আসবে না তখনই কেবল সার্জারি করানো হবে। সব মিলিয়ে ৬ মাস থেকে এক বছর লাগতে পারে সেরে উঠতে।'

অবশ্য এটাও জানিয়েছেন অস্ত্রোপচার করার আগেই ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন তিনি। অস্ত্রোপচার না লাগার ক্ষীণ সম্ভাবনাও আছে। কিন্তু অস্ত্রোপচার যদি লাগে তবে সেটা ছয় মাসের আগে করা যাবে না।

ভয়টা সেখানেই। কারণ ইংল্যান্ডে আগামী বিশ্বকাপ শুরু হবে মে মাসে। আট মাসের মতো সময় বাকি। ফলে ঠিক ছয় মাসের মাথায় অস্ত্রোপচার করলেও বিশ্বকাপে হয়তো শতভাগ সাকিবকে পাওয়া যাবে না। কারণ অস্ত্রোপচারের পর সেরে উঠার একটা ব্যাপার আছে। তারপর ক্রিকেটে ফেরা, লম্বা বিরতির পর ছন্দ খুঁজে পাওয়ার বিষয়গুলোও থাকবে। এমনটা হতে পারে, ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেই বিশ্বকাপ খেলতে যেতে হচ্ছে সাকিবকে। তখন দীর্ঘ বিরতিটা ভোগাতে পারে তাকে।

আবার অস্ত্রোপচার লাগবে, লাগবে না -এমন দোটানায় বিশ্বকাপের সময়ও ছুরি-কাচির নিচে যেতে হতে পারে সাকিবকে। বিষয়টি অবশ্যই বড় চিন্তা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য।

সাকিব নিজেও জানিয়েছেন বিশ্বকাপে তার খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'খেলা শুরুর পর যদি দেখা যায় ব্যথা একেবারেই উধাও হয়ে গেছে তখন অপারেশন না-ও লাগতে পারে। তবে ব্যথা হলে অপারেশন লাগবেই। আমার যে হাড়টাতে সমস্যা, সেখানে ইনফেকশন হয়ে গেলে অ্যান্টিবায়োটিকেও কাজ না সম্ভবত। তখন বিশ্বকাপে খেলাও অনিশ্চিত হয়ে যাবে।'