ইসরায়েলকে শায়েস্তা পুতিনের, সিরিয়াকে দিচ্ছেন এস-৩০০

সিরিয়ায় লাতাকিয়া উপকূলে ১৫ আরোহীসহ রুশ সামরিক গোয়েন্দা বিমান ভূপাতিতের ঘটনায় তাৎক্ষণিক ইসরায়েলকে দায়ী করে রাশিয়া। অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক থাকায় তখন তেমন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি ক্রেমলিন।

তবে ১৫ সামরিক কর্মকর্তার মর্মান্তিক এই মৃত্যুকে যে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একেবারে উপেক্ষা করে যাবেন বিষয়টি তেমন নয়। ইসরায়েলকে শিক্ষা দিতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে একটি হচ্ছে সিরিয়াকে অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ হস্তান্তর।

আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিরিয়াকে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৩০০ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। ভূমধ্যসাগর থেকে সিরিয়ার ওপর যেসব বিমান হামলা চালানো হয় তা বন্ধের ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

সোমবার টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে সের্গেই শোইগু বলেন, ‘বিমান ভূপাতিতের ঘটনায় সিরিয়ায় মোতায়েন রুশ সেনা ও সামরিক ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করতে বাধ্য হয়েছে মস্কো।’

প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় এফ-১৬ যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরায়েল। সিরীয় সেনাবাহিনী তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে পাল্টা জবাব দেয়। ওই সময় ১৫ আরোহীসহ রাশিয়ার সামরিক গোয়েন্দা বিমান আইএল-২০ ভূমধ্যসাগরের লাতাকিয়া উপকূল ঘেঁষে উড়ছিল।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, হামলার পর সিরীয় আকাশসীমা ছেড়ে যাওয়ার সময় রুশ গোয়েন্দা বিমানটিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো। এসময় সিরীয় সেনাবাহিনীর ছোঁড়া বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র ভুলক্রমে রুশ গোয়েন্দা বিমানে আঘাত হানলে এটি বিধ্বস্ত হয়।

এঘটনায় ইসরাইলের প্রতি ক্ষুব্ধ হয় রাশিয়া। বিমান ভূপাতিত হওয়ার জন্য ইসরায়েলকে দোষারোপ করে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। পুতিন মুখে তেমন কড়া কিছু না বললেও ব্যবস্থা নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, ‘কী ব্যবস্থা নেয়া হবে শিগগিরই দৃশ্যমান হবে।’

মূলত পুতিন তার বক্তব্যে সিরিয়াকে অত্যাধুনিক এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা আসাদ বাহিনীকে দেয়া হলে সিরিয়ায় ইসরায়েলের অবাধ বিমান এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

কয়েক বছর আগে দামেস্ক এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনলেও ইসরাইলের আপত্তির কারণে তা সরবরাহ করছিল না রাশিয়া। সিরিয়ার কাছে এখন যেসব ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, সেগুলো অনেক পুরনো মডেলের। এস-৩০০ ক্ষেপণাস্ত্রের আওতা ২৫০ কিলোমিটার। এটি সিরীয় সেনাবাহিনীতে যুক্ত হলে দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আমূল বদলে যাবে।