মালিঙ্গার ঝড়ের পর মুশফিকের অসাধারণ বীরত্ব, বাংলাদেশ ২৬১

প্রথম ওভারেই দুই উইকেট নেই। পরের ওভারে আউট না হয়েও নাই আরো এক উইকেট। এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম দুই ওভার ছিলো এমনই ভীতিকর। যে ভীতির বেশির ভাগই ছড়িয়েছেন ল্যাসিথ মালিঙ্গা। এক বছরেরও বেশি সময় পর ওয়ানডে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই তিনি নিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। পরে মালিঙ্গা নিয়েছেন আরো দুই উইকেট।

ম্যাচের প্রথম ইনিংসের গল্পটা হতে পারতো ল্যাসিথ মালিঙ্গাকে নিয়েই। কিন্তু মুশফিক ও তামিম যে জমা রেখেছিলেন গল্পের অন্য একটা অধ্যায়। যে অধ্যায়ের পরতে পরতে ছিলো বীরত্বের অসাধারণ সব পক্তি।

তার আগে, মাত্র এক রানে দুই উইকেট পড়ে যাওয়ার পর ১৩১ রানের অসাধারণ জুটি গড়েন মোহাম্মদ মিঠুন ও মুশফিকুর রহিম। মিঠুন তার ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করে আউট হন। এই জুটির পর দাঁড়িয়ে প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশ বুঝে নেয় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ।

কিন্তু ২৬তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে মালিঙ্গা বিদায় করেন মিঠুন ও মোসাদ্দেক হোসেনকে। টিকতে পারেননি মাহমুদুল্লাহও। মিঠুনের বিদায়ের পর মিডল অর্ডারের এ ভঙ্গুরতার কারণে আবার বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মুশফিক এক প্রান্ত আগলে করে করে ফেলেন সেঞ্চুরি। কিন্তু অন্য প্রান্ত দিয়ে চলতে থাকে ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়া।

বাংলাদেশের নবম উইকেট হিসেবে আউট হন মোস্তাফিজুর রহমান। স্কোরবোর্ডে তখন উঠেছে ২২৯ রান। সেখানেই বাংলাদেশের থামার কথা ছিলো। কারণ আর যে উইকেট ছিলো না। হাতে আঘাত নিয়ে তামিম ছিলেন মাঠের বাইরে। ততক্ষণে জানা হয়ে গেছে যে, ছয় সপ্তাহ আর ক্রিকেটই খেলতে পারবেন না এই ব্যাটসম্যান।

কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে তামিম নামলেন আবার! দেখা গেলো তার বাঁ হাতে জড়ানো মোটা ব্যান্ডেজ। সেটা নিয়েই খেলতে শুরু করলেন তিনি। মোস্তাফিজের আউট হওয়ার পরের বলটা তামিম খেললেন এক হাতে।

কে জানে, তামিমের এই বীরত্বই বোধহয় তাতিয়ে দিলো মুশফিককে। তিনি নিজে পাঁজরের ব্যথায় ভুগলেও তামিম মাঠে নামার পর মুশফিক মারলেন তিনটি করে চার ও ছয়! যাতে বাংলাদেশের রান গেলো আড়াইশ ছাড়িয়ে! শেষ পর্যন্ত ৫০তম ওভারে ১৪৪ রান করে আউট হন মুশফিক। যা তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস তো বটেই, এশিয়া কাপে যে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানর সেরা ইনিংসও।

ম্যাচের শুরুতে মালিঙ্গা যে ঝলক দেখিয়েছেন, প্রথম ইনিংস শেষে মুশফিক ও তামিমের বীরত্বের কাছে তা ম্লান হয়ে গেছে অনেকটাই। এখন ম্যাচটাও বাংলাদেশ জিতে ফেলতে পারে, ম্যাচের পর হয়তো মালিঙ্গার এক বছর পর ফেরার পরের ঝলকটার কথা কারো মনেই থাকবে না!