গরুর বাতকর্মের গ্যাসে দিশেহারা ভারত!

গাভীকে দেবতা হিসেবে মানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কিন্তু সেই গরুর অন্ত্রের গ্যাস তথা বাতকর্মে রীতিমতো দিশেহারা ভারত! এমন খবরই দিয়েছে দেশটির একটি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম। এনিয়ে নতুন বিতর্ক দেয়া দিয়েছে ভারতজুড়ে।

বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার বলছে, ভারতে ত্রাস ছড়াচ্ছে ‘শোভনগন্ধা’ গাভীর বাতকর্ম ও উদ্গার। গরুর অন্ত্রে বেশ কিছু জীবাণুর উপস্থিতি রয়েছে। এর ক্রিয়ায় খাদ্য হজমের পর পায়ুপথে বায়ু নিঃসরণ হয়, যা মিথেন গ্যাসে একেবারে ভরপুর। এই গ্যাস পরিবেশের জন্য কার্বন ডাই-অক্সাইডের চেয়েও ২০ গুণ বেশি ক্ষতিকর।

তবে বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে পারছেন না দেশটির হিন্দুত্ববাদী আরএসএস বা সঙ্ঘ পরিবারের নেতারা। তাদের মদদে প্রতিষ্ঠিত গো-রক্ষা মঞ্চের মুখপাত্র সূর্যকান্ত কেলকার বলছেন, ‘গরুর উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। মানুষের এই কুকর্মের পরিণামে বিষাক্ত গ্যাস নিঃসরণ করছে গরু।’

বিষয়টিকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘গোমাতার (গাভী) চাতুর্দিকে এক পাক ঘুরলেই মানুষের বিকাশ ঘটে। তাকে জবাই দিয়ে কেটে খাওয়া হচ্ছে। এর ফল মানুষকে ভোগ করতে হবে। তাই এখনই সংযত না হলে পরিবেশ ছারখার করে গোমাতা শাস্তি দেবেন।’

কিন্তু গবেষকরা বলছেন, শুধু গরু নয়, মেষ ও ছাগলসহ বেশ কিছু গবাদি পশুরও পায়ুপথে কমবেশি মিথেন গ্যাস ছাড়ে। তাই এ থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছে ভারতীয় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং পরিবেশ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান পুনর্বসু চৌধুরী বলেন, ‘গরু খাদ্য গ্রহণের পর জাবর কাটে। তখন থেকেই এ প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। ফলে গরুর পেটে তৈরি হওয়া মিথেন গ্যাস বাতমর্কের সময় বেরিয়ে আসে। এটি পরিবেশের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’

সম্প্রতি ‘স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে প্রতি বছর ১ কোটি ৬০ লাখ টন গবাদি পশুর মিথেন নিঃসরণ হচ্ছে। এটি পরিবেশের ওপর বেশ বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তার ওপর আবার দেশটি ২০২২ নাগাদ ১৮ কোটি টন দুধ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এই লক্ষ্য পূরণ করতে হলে গরু, ছাগল ও মেষের উৎপাদনও বাড়াতে হবে। ফলে তা পরিবেশের জন্য আরও বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।