ভয়াবহ পরিবেশ দূষণে আধুনিক প্রমোদতরী!

আধুনিক জীবন বিলাসে নতুন নতুন প্রমোদের ব্যবস্থা হচ্ছে। আকাশপথ থেকে সমুদ্র বিলাস- সব জায়গায়ই আধুনিকতার ছোঁয়া। কিন্তু এই আধুনিক প্রমোদ ব্যবস্থাপনায় যদি পরিবেশ দূষণের অভিযোগ থাকে তবে সেই বিলাসী জীবনের দিকে আঙুল তোলাই স্বাভাবিক। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর অভিযোগ, সমুদ্র ভ্রমণে যেসব প্রমোদতরী চলাচল করছে তাদের প্রায় সবই তীব্র বিষাক্ত জ্বালানি ব্যবহার করছে।

পরিবেশ বিধ্বংসী সমুদ্রভ্রমণ নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এনএবিইউ ২০১৭ সালে মোট ৭৭টি প্রমোদ তরীর উপর গবেষণা পরিচালনা করে। এতে ৭৬টি প্রমোদতরীর মধ্যেই বিষাক্ত জ্বালানি ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। এর ভয়াবহ অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, একটি প্রমোদতরী যে পরিমাণ বিষাক্ত জ্বালানি ব্যবহার করছে তা ৫০০টি গাড়ির পরিবেশ দূষণের সমান!

তুলনামূলক কম ক্ষতির প্রমোদতরীগুলো হচ্ছে টুই ক্রুজেস ও হাপাগ লয়েড। কিন্তু এদের ক্ষেত্রেও অবস্থা খুব বেশি উন্নত না হলেও নাইট্রিক অক্সাইডের পরিমাণ দিন দিন কমিয়ে আনা হচ্ছে।

এসব বিলাসী জাহাজে নোঙর করা অবস্থায় বিদ্যুৎ ব্যবহারের সক্ষমতাও রয়েছে বলে জানা যায়। প্রায় সবগুলো জাহাজেই ডিজেল ও অন্যান্য ধোঁয়া ফিল্টারের ব্যবস্থা নেই। ভয়ের কথা হচ্ছে- যে কোনো ব্যস্ততম রাস্তার দূষণের ২০ গুণ বেশি থাকে জাহাজের ডেকের বাতাসে।

৭৭টির মধ্যে যে একটি মাত্র জাহাজ ব্যতিক্রম পাওয়া গেছে তার নাম 'এইডানোভা'। জার্মান কোম্পানি মায়ার শিপইয়ার্ডের তৈরি এ রকম আরো ছয়টি জাহাজ বাজারে আসছে বলে জানা গেছে। তুলনামূলক কম ক্ষতিকর জ্বালানি ব্যবহার করছে এইডানোভা। পরিবেশবান্ধব নতুন প্রযুক্তিতে সীসা নিঃসরণ করছে এই জাহাজটি। তবে জ্বালানি হিসেবে এলপিজি ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করছে এনএবিইউ।

পরিবেশ ধ্বংসকারী অবস্থা রুখতে আধুনিক প্রযুক্তি ও লাগসই প্রযুক্তির ব্যবহার জরুরি। তবে যদি একান্তই এই বিষয়ে উদাসীনতা বিরাজ করে তবে কিছুটা কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়াই সমীচীন বলে জানান সংস্থাটির প্রধান লাইফ মিলার। পরিবেশ রক্ষায় যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিলে এই প্রমোদতরীগুলো বন্ধ করে দেয়াই উচিত বলে মনে করেন তিনি।