ভারতকে ধসিয়ে দিলেন অ্যান্ডারসন

লর্ডস টেস্টের প্রথমদিন ভাসিয়ে নিয়ে গেছে বৃষ্টি। ক্রিকেটের আজন্ম শত্রু হানা দিলো দ্বিতীয় দিনেও। এদিনও প্রায় দুই সেশন খেয়ে নিয়েছে বৃষ্টি। বৃষ্টিভেজা ম্যাচে শুক্রবার খেলা হলো মাত্র ৩৫.২ ওভার। তাতেই সফরকারী ভারতকে প্রায় একাই ধসিয়ে দিলেন জেমস অ্যান্ডারসন।

ইংলিশ এই পেস তোপে একশ রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়েছিল ভারত। শেষ অবধি কোনোরকম দলীয় সংগ্রহ একশ পার করেছে বিরাট কোহলির দল। প্রথম ইনিংসে ভারত গুটিয়ে গেল মাত্র ১০৭ রানে। সফরকারীদের দ্রুত গুটিয়ে দিয়ে অবশ্য শুক্রবার ব্যাটিংয়ে নামতে পারেনি ইংল্যান্ড।

মুদ্রা নিক্ষেপের সুবিধাটা নিজেদের অনুকূলেই পেয়েছিল ইংল্যান্ড। টস জিতে কোহলির হাতে ব্যাট তুলে দেন ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট। শুক্রবার ব্যাট করতে নেমেই দুঃস্বপ্নের মুখোমুখি হলো সফরকারীরা। ১৫ রানের মধ্যে হারাতে হলো টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে।

মুরালি বিজয় (০), রোকেশ রাহুল (৮) এবং চেতেশ্বর পুজারা (১) আউট হয়েছেন দুই অংক ছোঁয়ার আগেই। অ্যান্ডারসনের সুইংয়ের শিকার হয়েছেন প্রথম দুজন। শেষেরজনকে অবশ্য দুর্ভাগ্য বরণ করতে হলো। কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফিরে যান পুজারা।

অবশ্য দুই দলের দ্বিতীয় দিনের প্রথম লড়াইটা হয়েছিল বৃষ্টির সঙ্গে। বৃষ্টি থেমে খেলা শুরু হতেই ইংলিশ পেস আক্রমণে নাকাল হয়ে পড়ে ভারত। ভারতীয়দের ব্যাটিং লাইন গুঁড়িয়ে দিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন অ্যান্ডারসন। ২০ রানের বিনিময়ে তুলে নিলেন পাঁচ উইকেট।

দুটি শিকার বেন স্টোকসের বদলি হিসেবে খেলতে নামা ক্রিস ওকসের। বাকি দুই উইকেটের মালিক স্টুয়ার্ট ব্রড ও স্যাম কুরান। অন্য উইকেটের নেপথ্য নায়ক ইংল্যান্ডের হয়ে ৬৮২ নাম্বার টেস্ট ক্যাপ পড়া অলি পোপ। পুজারার রান আউটে থাকল বিশ বছর বয়সী এই তরুণের হাত।

পোপের অভিষেক ফিরিয়ে নিয়ে গেল সাত দশক পেছনে। ১৯৪৭ সালে এই লর্ডস স্টেডিয়ামেই ইংল্যান্ডের জার্সিতে অভিষেক হয়েছিল আরেক পোপ- জর্জ পোপের। জর্জ অবশ্য তার ক্যারিয়ারটা দীর্ঘায়িত করতে পারেননি। অভিষেক টেস্টেই থেমে গেছে তার পথচলা।

বৃষ্টিতে ভিজে তিন উইকেট হারিয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরে যায় ভারত। বৃষ্টি থামতেই মাঠে ফিরে আসেন সফরকারী দুই ব্যাটসম্যান কোহলি এবং আজিঙ্কা রাহানে। কিন্তু থিতু হতে পারেননি একজনও। দলীয় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৩ রানে ফিরে গেছেন ভারতীয় অধিনায়ক। রাহানে করেছেন ১৮ রান। ৬২ রানে শেষ ভারতের ছয় উইকেট!

ওয়ানডে মেজাজে খেলতে গিয়ে ১১ রানে আউট হন হার্দিক পান্ডিয়া। টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা যেখানে ইংলিশ পেসে দিশেহারা হয়েছেন, সেখানে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। দলীয় ৯৬ রানে নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরে গেছেন তিনিও।

ফেরার আগে ৪৯ বলে দলীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেছেন অশ্বিন। প্রথম ইনিংসে ভারতের সংগ্রহ তিন অংক ছাড়াতে অবদান আছে মোহাম্মদ শামিরও। ৩ বলে ১০ রানের ঝড় তুলে অপরাজিত থাকেন এই পেসার।