মোসাদ্দেক: আগামী বছরের মধ্যে জাতীয় দলে খেলতে চাই

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সম্ভাবনাময় খেলোয়াড়দের তালিকা করা হলে তার নাম থাকবে সবার উপরে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরবর্তী বড় তারকা মনে করা হয় তাকে। বলা হচ্ছে গত এক বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়া মোসাদ্দেক হোসেনের কথা। বন্ধু মহলে এবং সতীর্থদের কাছে যার ডাকনাম সৈকত।

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি নেই কারো। দুটি করে অবশ্য কয়েকজনের আছে। অথচ মোসাদ্দেক এক বছরেই করেছেন তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি! বয়স মাত্র ঊনিশ হলেও ব্যাটসম্যান হিসেবে মোসাদ্দেক পরিণত হয়ে গেছেন বয়সের চেয়েও বেশি। জাতীয় লিগের গত আসরে আট ম্যাচে মোসাদ্দেক করেছিলেন ৭৪২ রান। অর্থাৎ ৮২.৪৪ গড়ে রান তুলেছেন তিনি। গত বছর যেখানে শেষ করেছিলেন, জাতীয় লিগের চলতি আসরে ঠিক সেখান থেকেই শুরু করেছেন তিনি। বরিশালের হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডেই করেছেন বছরের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি।

ক্রমেই তারকা হয়ে উঠা মোসাদ্দেক সম্প্রতি ঢাকা ভিত্তিক একটি ইংরেজি দৈনিককে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপার -এর পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো।

নিজেকে কবে জাতীয় দলে দেখতে চান?

গত বছর ইচ্ছে করেছিলাম এই বছরের মধ্যেই জাতীয় দলে খেলবো। কিন্তু আমি ওই লক্ষ্য পূরণ থেকে এখনো বেশ খানিকটা দূরে আছি। তারপরও আশা করছি আগামী এক বছরের মধ্যে নিজেকে জাতীয় দলে দেখতে পারবো। খেলা শুরু করার পর থেকে এটাই আমার স্বপ্ন।

যুবদলের আপনার তিন সতীর্থ মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন কুমার এবং জুবায়ের এখন জাতীয় দলে খেলছেন। তাদের এই উত্থান কি আপনাকে অনুপ্রাণিত করে?

লিটন আমার খুব ভালো বন্ধু। বন্ধুকে জাতীয় দলে খেলতে দেখা দারুণ ব্যাপার। একই সাথে এটা আমাকে অনুপ্রাণিতও করে। যাদের সাথে আমি বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে একসাথে খেলেছি, আমি আন্তরিকভাবে জাতীয় দলেও তার সাথে খেলতে চাই। সত্যি কথা কি- জাতীয় দলে বন্ধুদের খেলতে দেখে আমি সব সময় অনুপ্রাণিত হই। আমি আকুল হয়ে আমার সুযোগের অপেক্ষায় আছি।

আপনি প্রথম এবং একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ঘরোয়া ক্রিকেটের এক মৌসুমে তিনটি ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। এ বিষয়ে আপনার ভাবনা কী?

খুব ভালো লাগে। আমি কুমার সাঙ্গাকারা এবং মাহেলা জয়াবর্ধনেকে দেখেছি তারা একের পর এক বড় বড় ইনিংস খেলতেন। আমিও চিন্তা করতাম সুযোগ পেলে তা হাতছাড়া হতে দিবো না। রেকর্ড কেউ না কেউ একদিন ভেঙে দিবে। এগুলো অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।

আপনি দীর্ঘ সময় ধরে লম্বা ইনিংস খেলতে পারেন। আবার দ্রুত রানও তুলতে পারেন। আলাদা আলাদা পরিস্থিতিতে নিজেকে কিভাবে কার্যকর করে তুলেন?

আগে ওয়ানডে বা টি-টোয়েন্টি খেলতেই বেশি ভালো লাগতো। কিন্তু ধীরে ধীরে আমি দীর্ঘ পরিসরেও মজা পেয়ে গেছি। আমি ব্যাটিংয়ে নিজের ধরনটা কখনো বদলাই না। দীর্ঘ পরিসরে সুযোগ পেলেই বড় ইনিংস খেলার চেষ্টা করি। দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন ব্যাপার। আমি সাধারণ নিজের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চাই। সব সময় মনোযোগ ধরে রাখি।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও আপনি দারুণ করছেন। বোলিংয়ের জন্য কতোটা পরিশ্রম করেন?

ছোটবেলায় আমি অফস্পিনার ছিলাম। পরে পরিস্থিতি বদলে গেছে। বোলিংয়ের সুযোগ আসলে আমি নিজের শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করি। এ ছাড়া অনুশীলনেও নিয়মিত বোলিং করি। মাঠের খেলায় আমি যে কোনোভাবে দলের সাফল্যের অংশিদার হতে চাই।

বয়স ভিত্তিক সব দলেই আপনি খেলেছেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের মাটিতে যুব দলকে নেতৃত্বও দিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন অধিনায়কত্ব আপনার প্রতিভা আরো বেশি করে ফুটিযে তুলেছে?

ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। নিজের প্রতি যত্ন নেয়াটা আমি সেখান থেকেই শিখেছি। বোর্ডের পরামর্শে বেড়ে ওঠা আমাকে অনেক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। নানা রকম সুযোগ সুবিধাও আমাকে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি হতে সাহায্য করেছে। সঠিক উপায়ে বেড়ে ওঠার পথ পেয়ে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আমি ধন্যবাদ দিতে চাই (নাজমুল আবেদিন) ফাহিম স্যার এবং (জাফরুল) ইহসান স্যারকে। তারা আমাকে সব সময় নানাভাবে সাহায্য করেছেন।

আপনার আদর্শ ক্রিকেটার কে?

আমি বিরাট কোহলির ব্যাটিং স্টাইল এবং খেলার ধরন পছন্দ করি। তার খেলা দেখা খুব আনন্দের। দেশে নাসির (হোসেন) ভাইয়ের খেলা ভালো লাগে। তাকে আমার একজন পরিপূর্ণ ক্রিকেটার মনে হয়।

আপনি আরো পড়তে পারেন

এখনই টেস্ট দলে দেখা যাবে না সাব্বিরকে

চোখ বেধেও দুর্বার পিটারসেন!

টেস্ট খেলতে আসছে জিম্বাবুয়ে