যে তিন ভুলে বাংলাদেশের এমন হার

প্রথম ম্যাচে ৪৮ রানের বড় জয় বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাচ্ছিলো এক ম্যাচ হাতে রেখে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের। যে দলের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে একদম দাঁড়াতেই পারেননি সাকিব আল হাসানরা। টেস্ট সিরিজ হারের ক্ষতে প্রলেপ দেয়ার দারুণ সুযোগ হাতছোঁয়া দূরত্বে এসে‌ও মিলিয়ে গেছে হাওয়ায়।

যে মাঠে ধরা দিয়েছিলো ৪৮ রানের জয়। সে মাঠেই পরের ম্যাচে তিন রানের দুঃখে পুড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। সেটাও একেবারে শেষ ওভারে গিয়ে। হাতে পাঁচ উইকেট রেখে শেষ ওভারে মাত্র আট রান নেয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু মারেননি মুশফিক-মাশরাফিরা। পুরো ম্যাচ বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ফিল্ডিংয়ে কিছু সহজ সুযোগ মিস করার পাশাপাশি এমন তিনটি ভুল মাশরাফিরা করেছেন, যা তাদেরকে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জয়ের সুবর্ণ সুযোগ থেকে ছিটকে দিয়েছে।

সাত থেকে ২৫ ওভারে রান তুলতে ব্যর্থ তামিম-সাকিব

২৭২ রানের লক্ষ্য পূরণ করতে নেমে প্রথম সাত ওভারে বাংলাদেশ করে ৭১ রান, এক উইকেট হারিয়ে। উড়ন্ত শুরুই বলা যায়। এরপর বাংলাদেশ দ্বিতীয় উইকেট হারায় ২৫তম ওভারের শেষ বলে। এর মধ্যে স্কোরবোর্ডে যোগ হয় মাত্র ৫৮ রান! অর্থাৎ তামিম ও সাকিব মিলে ১৮ ওভারে রান তুলেছেন সাড়ে তিনেরও কম করে। প্রথম ম্যাচের জয়ের নায়কজুটির এই শম্বুক গতির ব্যাটিংটা যদি আর সামান্য একটু গতিময় হতো, বাংলাদেশকে তো তাহলে ওই শেষ ওভারে যেতেই হয় না।

ফুলটসে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে ব্যর্থ মুশফিক

শেষ ওভারে দরকার আট রান। হাতে পাঁচ উইকেট। জয় ছাড়া তখন কিছু চিন্তাও করার কথা নয় বাংলাদেশের। ৬৮ রান নিয়ে স্ট্রাইকে মুশফিকুর রহিম। তার আরো একটা অসাধারণ ফিনিশিং দেখার জন্য রাত জেগে অপেক্ষায় পুরো বাংলাদেশ। বোলিংয়ে এলেন জ্যাসন হোল্ডার, ক্যারিবীয় অধিনায়ক। প্রথম বলটাই দিলেন ফুলটস। মুশফিক লোভ সংবরণ করতে পারলেন না। মারতে গেলেন উড়িয়ে এবং যে ভুলটা করলেন তা ফিরিয়ে আনলো ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে তার করা আরো একটা ভুলের স্মৃতি। মিডঅনে ধরা পড়লেন মুশফিক। অথচ ঠিক আগের ওভারের শেষ বলটাতে ফুলটসের লোভ সামলাতে না পেরে ফিরে গেছেন সাব্বিরও। 

৬৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে জয়ের বাতাস পাইয়ে দিচ্ছিলেন মুশফিকই। সেই তিনিই একটা ফুলটস পেয়ে ভুলে গেলেন তার দায়িত্বটা। মুশফিকের এই ভুলটা খেলারই অংশ হয়তো। কিন্তু ভুলই তো! মুশফিক যদি বলটা ডাকও করতেন কিংবা সিঙ্গেল বা ডাবল নিতেন বা চার মারার চেষ্টা করতেন, ম্যাচের ফল হতে পারতো অন্য রকম।

রুবেল হোসেনের দুঃসহ ৪৯তম ওভার

প্রথম ইনিংসের ঘটনা। রুবেল হোসেন এলেন ইনিংসের ৪৯তম ওভার করতে। যা ছিলো তার নবম ওভার। আগের আট ওভারে আট ওভারে ৩৯ রান দিয়ে তিন উইকেট নেয়া রুবেলের কাছে তখন পাহাড়সম প্রত্যাশা। নাহ, উইকেট নেয়ার নয়, বরং রান তিনি রান কম দিলেই হতো। কিন্তু ডেথ ওভারে বাংলাদেশের প্রধান ভরসা রুবেল তালগোল পাকিয়ে দিয়ে বসলেন ২২ রান। দুটি ওয়াইড, একটি নো বলের সাথে হজম করে বসলেন দুটি ছয়ও। ওই ওভারে যদি অর্ধেক রানও দিতেন তিনি, ম্যাচের ফলটা হতো অন্য রকম।