ধোনির বিকল্প ঠিক আছে তো?

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে হেরে গেল ভারত। ২০১৬ সালের পর থেকে বিরাট কোহলির অধীনে যেটা ভারতের প্রথম কোনো দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ হার। টানা নয় সিরিজ জেতার পর হারল ভারত। সময়ের হিসেবে ৩০ মাস পর হারল কোহলির দল। কিন্তু এসব নিয়ে না যতোটা তার চেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে মহেন্দ্র সিং ধোনিকে নিয়ে।

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি হারাতে ভারতের সিরিজ হার নিশ্চিত হয়ে যায়। ওই ম্যাচ শেষে আম্পায়ারের কাছ থেকে ম্যাচ বলটি চেয়ে নেন ধোনি। সেটাকে ইস্যু বানিয়ে চলছে ধোনিকে অবসর নিয়ে নানা গুঞ্জন। ভারতের অনেক সাবেকও বলছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দেয়া উচিত ধোনির। কিন্তু কথা হচ্ছে, ধোনির বিকল্প প্রস্তুত আছে তো? ধোনির অভাব পূরণ করতে পারবেন এমন কেউ কি ভারতের নির্বাচকদের হাতে আছে? 

ধোনির অবসরের আলোচনা উঠেছিল আরও অনেক আগেই। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরপরই। কিন্তু এরপর উইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সিরিজে বেশ ভালো ফর্মে ছিলেন ধোনি। গত আইপিএলেও চেন্নাই সুপার কিংসকে চ্যাম্পিয়ন করতে বড় ভুমিকা ছিল তার।

ধোনি তার সাফল্যের আরো দিয়ে আড়াল করে ফেলেছিলেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার সাময়িক ব্যর্থতা।  কিন্তু ইংল্যান্ডে গিয়ে প্রত্যাশা মতো খেলতে না পারাতেই আবারও সমালোচনা শুরু। ধোনি অবশ্য ইংল্যান্ডে মোটামুটি রান পেয়েছেন। তবে স্ট্রাইকরেটটা ভালো ছিল না। সমালোচনার সূত্রপাত এই কারণেই। কিন্তু ধোনির মতো একজন কি দলে শুধু রান করেই অবদান রাখেন?

অধিনায়ক থাকার সময় মাঝে মধ্যেই দেখা যেতো অসাধারণ কোনো এক সিদ্ধান্তে ম্যাচ বের করে নিয়েছেন তিনি। তার বোলিং পরিবর্তন বা ফিল্ডিং সেট করার বিষয়গুলো নিয়মিত ম্যাচের গতিপত পরিবর্তন করেছে। এখন বিরাট কোহলিকে নিয়মিত দেখা যায় গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ধোনির সাথে পরামর্শ করছেন। অর্থাৎ ধোনি দলে থাকার কারণে এখনো তার ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্ক কাজে লাগাতে পারছে ভারত।

ভারতের দুই তরুণ স্পিনার কুলদিপ যাদব ও জুযবেন্দ্র চাহাল যে অল্পতেই 'তারকা' বলে গেলেন এটাতে ধোনির অবদান আছে মনে করছেন অনেকে। নিজের ১৪ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তরুণ দুই স্পিনারকে বহু কার্যকরি পরামর্শ দিয়েছেন ধোনি। বিরাট কোহলি বারবারই বলে আসছেন, আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত ধোনিকে খুব করেই দরকার ভারতের। এসব কারণেই হয়তো!

সেই ধোনি যদি হঠাৎ করে অবসর নিয়ে নেন, তাহলে তার বিকল্প কে হবে? ভারতীয় নির্বাচকদের এখনই সময় সে সব নিয়ে চিন্তা করার। না হলে ধোনির হঠাৎ শূন্যতা ভারতকে ফেলে দিতে পারে কঠিন বিপদে।