রাশিয়া বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার মাঠের ফুটবল মন কেড়েছে অনেকেরই। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এই মুহূর্তে ২০ নম্বরে ক্রোয়াটরা। কজনই বা এই দলটাকে নিয়ে প্রত্যাশা করেছিলেন! কিন্তু বিস্ময় জাগিয়ে ফাইনাল পর্যন্ত উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া। শুধু ফাইনালে উঠা নয়, লুকা মডরিচ ও ইভান রাকিতিচরা ফ্রান্সের বিপক্ষে কাল ফাইনালে যে ফুটবলটা খেললেন সেটা মোহিত করেছে অনেককেই।

world cup final croatia

এক বাক্যে বলে দেয়া যায়, ফাইনালের সেরা দল ছিল ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচের শুরু থেকে শেষ অবদি বলের দখল ধরে রেখে সুন্দর ফুটবলের প্রদর্শনী দেখিয়েছেন ক্রোয়াটরা। পরিসংখ্যান ঘাটলেও ক্রোয়েশিয়া দাপটের প্রমাণ মিলবে। ম্যাচে ৬৬ শতাংশ বলের দখল ছিল ক্রোয়েশিয়ার। ফ্রান্সের দখলে বল ছিল ৩৪ শতাংশ। ক্রোয়াটরা শট নিয়েছে মোট ১৩টি। অপর দিকে ফ্রান্স শট নিতে পেরেছে ৬টি। ম্যাচে ক্রোয়েশিয়া ৫২৯টি পাস খেলেছে, ফ্রান্স ২৮৫টি। তারপরও কিনা দিন শেষে জয়ী দলের নাম ফ্রান্স।

এর কারণ, অর্থাৎ কোন কারণে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে থেকেও কাল হারতে হলো ক্রোয়েশিয়াকে, চলুন আলোচনা করা যাক বিষয়গুলো নিয়ে-

রক্ষণ দুর্বলতা: ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের শুরু থেকেই বলের দখল ধরে রেখে আক্রমণে উঠার চেষ্টা করে গেছে। দুর্দান্ত ফুটবল খেলছিলেন লুকা মডরিচ ও ইভান রাকিতিচ। ফলে মাঝমাঠটা ক্রোয়াটদের দখলেই ছিল। আর মাঝমাঠ নিজেদের দখলে থাকার কারণে মাঝে মধ্যেই আক্রমণে উঠতে পারছিল ইউরোপের দেশটি। কিন্তু হ-য-ব-র-ল অবস্থা দেখা যাচ্ছিল ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগে।

world cup final croatia1

ফ্রান্সের প্রতি-আক্রমণগুলো ঠিকভাবে সামলে নিতে পারেনি ক্রোয়াটদের রক্ষণ। বলের দখল ঠিকভাবে ধরে রাখতে না পারাতে প্রতি-আক্রমণের ফুটবল খেলে গেছে ফ্রান্স। অ্যান্থনি গ্রিজমান, কিলিয়ান এমবাপ্পে, পল পগবারা বল পেলেই ক্রোয়েশিয়ার অর্ধে ছুটতে চেয়েছে। এই প্রতি-আক্রমণটা রুখতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। ম্যাচে ফ্রান্সের চার গোলের তিনটিই প্রতি-আক্রমণের ফসল। ব্যবধান গড়ে দিয়েছে এটাই।

আত্মঘাতী গোল: একটা আত্মঘাতী গোল যে কোনো ম্যাচেই খেলোয়াড়দের মনোবল বিঘ্নিত করতে যথেষ্ট। ফুটবলের এই চিরাচরিত সত্য কথাটার প্রমাণ মিললো কালকের ফাইনালেও। ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়দেরও মনোযোগ বিঘ্নিত হতে দেখা গেল। ম্যাচের ১৩ মিনিটের সময় কর্নার কিক ঠেকাতে গিয়ে হেডে নিজেদের জালেই বল জড়িয়ে দেন মারিও মান্দজুকিচ। শুরুতেই পিছিয়ে পড়ার এই ধাক্কাটা পরে বড় হয়েই উঠেছিল ক্রোয়েশিয়ার কাছে।

পেনাল্টি: ফাইনাল ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন আর্জেন্টিনার পিতানা। মেসির দেশের এই রেফারির একটা সিদ্ধান্তও ডুবিয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে কর্নার কিক ঠেকাতে গিয়ে হাতে বল লেগে যায় ক্রোয়েশিয়ার একজনের। ডি-বক্সের ভেতর অনিচ্ছাকৃত হ্যান্ডবল হলে সাধারণত পেনাল্টি দেন না রেফারিরা। কিন্তু রিপ্লে দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত জানান পিতানা। আর্জেন্টাইন রেফারির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কড়া সমালোচনা করছেন অনেকে। ওই পেনাল্টি গোলে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে ক্রোয়েশিয়া। প্রথমার্ধ শেষ হয় এই ২-১ ব্যবধানেই। এই বিষয়টাও মনোবল দুর্বল করেছে ক্রোয়েশিয়ার।

সুযোগ মিস: এতো কিছুর পরও ম্যাচে একের পর এক সুযোগ তৈরি করতে দেখা গেছে ক্রোয়েশিয়াকে। কিন্তু সেই সুযোগগুলো কাজে লাগানোর লোক পাওয়া যায়নি। মারিও মান্দজুকিচ বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ক্রোয়েশিয়ার স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেছেন। ফ্রান্সের গোলরক্ষকের ভুলে একটা গোল করা আর নিজেদের জালে বল জড়িযে দেয়ার ছাড়া আর খুঁজেই পাওয়া গেল না তাকে। গোল করার লোকের এই অভাবটাও ডুবিয়েছে ক্রোয়েশিয়াকে।

অভিজ্ঞতা: ১৯৯৮ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল ফ্রান্স। ২০০৬ সালেও ফাইনাল খেলেছে দেশটি। সব মিলিয়ে এর আগে সেমিফাইনাল খেলেছিল মোট পাঁচবার। অন্যদিকে এই প্রথম ফাইনাল খেলতে নেমেছিল ক্রোয়েশিয়া। এর আগে মাত্র একবার ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা ছিল ক্রোয়াটদের। অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকার এই বিষয়টিও এগিয়ে নিয়েছে ফ্রান্সকে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.