ঘরের ছেলেই আজ ফ্রান্সের শত্রু

কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশের মানুষের স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন দিদিয়ের দেশম এবং থিয়েরি অঁরি। ১৯৯৮ সালে প্রথমবারের মতো তারা ফ্রান্সকে উপহার দিয়েছিলেন বহু অরাধ্যের ধন বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটা। আরো একটি বিশ্বকাপ হাতছানি দিচ্ছে দুজনকে।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- আজ তারা সতীর্থ নন। একে অন্যের শত্রু। রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল মুখোমুখি করে দিয়েছে দেশম-অঁরিকে। দেশম যেখানে ডাগ আউটে দাঁড়িয়ে ফ্রান্সকে স্বপ্নের ফাইনালে ওঠাতে মরিয়া হয়ে উঠবেন, তেমনিভাবে সেই অঁরিই আজ চাইবেন দেশের স্বপ্নটা ভেঙে চৌচির করে দিতে।

কারণ অঁরি যে এখন আর ফ্রান্সের নেই! শত্রু শিবিরের সহকারী কোচ এই ফ্রেঞ্চ কিংবদন্তি। বেলজিয়ামের প্রধান কোচ রবার্তো মার্টিনেজকে নিয়ে অঁরি এখন নিজ দেশ ফ্রান্স বধের ছক কষছেন। এ যেন দুধকলা দিয়ে কালসাপ পোষার মতোই ব্যাপার!

জাতীয় দলের এক সময়ের সতীর্থকে প্রতিপক্ষের বেঞ্চে দেখতে কেমন লাগবে? উত্তরে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্স কোচ দেশম বললেন, ‘ও এমন একজন মানুষ যাকে সবসময়ই আমি ভালোবাসি, প্রশংসা করি। অঁরিকে বেলজিয়ামের বেঞ্চে দেখাটা আমার জন্য অদ্ভুত ব্যাপার হবে।’

শত্রু শিবিরের এই অঁরিই আবার ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার কিলিয়ান এমবাপ্পের পথচলার অনুপ্রেরণা। শৈশবের সেই নায়কের মুখোমুখি হওয়ার আগে তিনি বলেছেন, ‘অঁরির সঙ্গে এভাবে দেখা হওয়াটা অদ্ভুত। আমি তাকে খুব পছন্দ করি। তিনি আমাদের দেশের একজন কিংবদন্তি।’

ফ্রান্সের তরুণ তুর্কি আরো বলেছেন, ‘অঁরিই আমাকে পথ চলতে অনুপ্রাণিত করেছেন। অথচ তিনি থাকবেন প্রতিপক্ষের বেঞ্চে। ভাবতেই অবিশ্বাস্য লাগছে। নিজের দেশ ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়াই করাটা তার জন্যেও অস্বাভাবিক হবে।’

পেশাদার ফুটবল এমনই। কখনো নিজ দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে হয়, কখনো বা প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেয়। ফ্রান্সের বিশ্বজয়ী ফরওয়ার্ড এমনই একটা অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন। মাঠের ফুটবলার না হয়েও তাই অবধারিতভাবে লাইম লাইটে থাকছেন ৪০ বছর বয়সী এই কোচ।