ফুটবল বিশ্বকাপ কেনো চার বছর পরপর হয়?

ফুটবল বিশ্বকাপকে 'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ' বলা হয়। যা নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের থাকে তুমুল উত্তেজনা। পুরো একটা মাস সারা পৃথিবী বুঁদ হয়ে থাকে ফুটবল উৎসবে। নিমগ্ন থাকে খেলা উপভোগে। কিন্তু একটা মাস যখন ফুরায়? তখন আবার প্রতীক্ষায় বসতে হয় চার বছরের জন্য! ফুটবলপ্রেমীদের সব সময়ের অভিযোগ- বিশ্বকাপের জন্য কেনো চার বছর অপেক্ষা করতে হয়? এর পেছনে আছে এক নানা কারণ? সেই কারণগুলো কী জানেন?

কারণ জানতে হলে ফিরে যেতে হবে খ্রিস্টীয় বর্ষপঞ্জির চতুর্দশ শতাব্দীতে। প্রাচীন গ্রিসে যে অলিম্পিকের আসর বসতো, সেটিও ছিলো চার বছর অন্তর অন্তর। আর এর মাঝখানের সময়টাকে বলা হতো অলিম্পিয়াড।

এই অলিম্পিয়াডকে সময় মাপার একক হিসেবে ধরা হতো। এখন যেমন ৩৬৫ দিনকে বলা হয় এক বছর। তখন ওই অলিম্পিয়াডকে সময় মাপক ধরা হতো। প্রতি চার বছরকে ধরা হতো এক অলিম্পিয়াড। অর্থাৎ প্রতিটি অলিম্পিকের মাঝখানের সময়টাই ছিলো অলিম্পিক।

এর পর ১৯৩০ সালে যখ্ন প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজন করা হয়, তখন আয়োজকরা অলিম্পিক আয়োজনের চার বছরের ব্যবধানের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে যা আর পরিবর্তন করা হয়নি। 

অলিম্পিকের ঐতিহ্য পরিবর্তনকে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজকরা পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্রপূর্ণ আয়োজনের প্রতি অমসম্মান হিসেবে বিবেচনা করে এবং সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। 

তাছাড়া ফুটবল বিশ্বকাপ খুবই বড় একটা ইভেন্ট। এটার আয়োজনের প্রস্তুতি সারতে লম্বা সময়ের দরকার। সেটাও চার বছর অন্তর অন্তর হওয়ার একটা কারণ।

এর বাইরে, বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগান, এক বিশ্বকাপের পর আরেক বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হতে দলগুলোকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার একটা ব্যাপারও আছে।

ফুটবল বিশ্বকাপ ছাড়াও বিশ্বে এখন বেশ কিছু বড় বড় ক্রীড়া টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। সেগুলোকে সুযোগ করে দেওয়া বা সময় সীমায় সেগুলোর সাথে সংঘর্ষ এড়ানোর চিন্তাও এতে ভূমিকা রেখেছে। এ সব মিলিয়েই বিশ্বকাপ আয়োজনে চার বছর করে বিরতি নেয়া হয়।