টাইব্রেকার ভাগ্যে শেষ আটে ইংল্যান্ড

সম্ভবত শেষ ষোলোর সবচেয়ে ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচটাই খেললো ইংল্যান্ড-কলম্বিয়া। যেখানে যৎসামান্য আক্রমণ-প্রতিআক্রমণের চেয়ে বেশি থাকলো দুই দলের শারীরিক লড়াই। যে ম্যাচে আটজন খেলোয়াড়কে দেখতে হয়েছে হলুদ কার্ড। গোল পেতে দুই দলকেই করতে হয়েছে সংগ্রাম। তারপরও মূল সময়, অতিরিক্ত সময় শেষ হয়েছে সমতায়। ফলাফলের জন্য যেতে হয়েছে টাইব্রেকারের ভাগ্য পরীক্ষায়। যেখানে জিতেছে ইংলিশরা।

এই ম্যাচের আগে আরো তিনবার টাইব্রেকারে ম্যাচের ফলের জন্য যেতে হয়েছে ইংল্যান্ডকে। কিন্তু বিশ্বকাপে কখনোই টাইব্রেকারে জেতার রেকর্ড ছিলো না তাদের। এবার ব্যতিক্রম ঘটলো। কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকার ভাগ্যেই জিতলো ইংল্যান্ড এবং ১২ বছরের মধ্যে প্রথমবার নকআউট পর্বে কোনো ম্যাচ জিতলো তারা।

ইংল্যান্ডের হয়ে ম্যাচের ফল নির্ণায়ক গোলটি করেন এরিক ডায়ার। কলম্বিয়ার গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে তার শটটি জালে পৌঁছাতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে ইংল্যান্ড। অথচ তাদের এই উল্লাস দেখা যেতে পারতো ম্যাচের মূল সময়ের মধ্যেই।

ম্যাচের ৫৩ মিনিটে কলম্বিয়ার ডি বক্সে অহেতুক ফাউলের শিকার হন হ্যারি কেইন। ইংলিশ অধিনায়ককে পেছন থেকে ফাউল করেন কার্লোস সানচেজ এবং পেনাল্টি পেয়ে যায় ইংল্যান্ড। এই পেনাল্টি থেকে গোল করতে মোটেও ভুল করেননি কেইন। এটি বিশ্বকাপে তার ষষ্ঠ গোল। এই গোলের মাধ্যমে সোনার বুট জেতার আরো কাছে চলে গেলেন ইংলিশ অধিনায়ক।

১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর আক্রমণের ধার বাড়ানোর পাশাপাশি রক্ষণেও মন দেয় ইংল্যান্ড। এরপরও বেশ কিছু জোরালো আক্রমণ করে কলম্বিয়া। কিন্তু ইংলিশ রক্ষণে চিড় ধরাতে ব্যর্থ হয় তারা। তারপরও চলতে থাকে কলম্বিয়ানদের প্রচেষ্টা।

ফল আসে ৯৩ মিনিটে গিয়ে। হুয়ান কুয়াদরাদোর কর্নার হেড করে গোল করেন ইয়েরি মিনা। এই গোলই কলম্বিয়াকে ম্যাচে ফেরায় এবং ম্যাচ চলে যায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। এ সময় আর কেউ গোল দিতে পারেনি। ইংল্যান্ডের সামনে দুঃস্বপ্নর মতো হাজির হয় টাইব্রেকার।

কিন্তু এবার তারা দমে যায়নি। প্রথম দুই শটে গোল করে ইংল্যান্ড। কিন্তু তৃতীয়টি মিস করে বসে। আর কলম্বিয়া প্রথম তিনটিতেই সফল হয়। তিনটি করে শট শেষে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে থাকে কলম্বিয়া। কিন্তু পরের দুই শটের দুটিই মিস করে তারা। একটি মিস করেন কলম্বিয়ান বদলি খেলোয়াড়। অন্যটি ঠেকিয়ে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক জরডান পিকফোর্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় শেষ গোলটি করেন এরিক ডায়ার।

গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ড মাঠে নামিয়েছিলো দ্বিতীয় সারির দল। কিন্তু কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেই ঝুঁকি নেননি ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। পূর্ণ শক্তির দল নামিয়ে দেন তিনি। তারপরও অবশ্য কলম্বিয়ার বিপক্ষে এতো সহজে জয় পায়নি ইংলিশরা।

শেষ আটে ইংলিশদের প্রতিপক্ষ সুইডেন। মঙ্গলবারের প্রথম খেলায় তারা হারিয়েছে সুইজারল্যান্ডকে। প্রতিপক্ষ হিসেবে সুইসদের চেয়ে সুইডিশরা তুলনামূলক সহজই হওয়ার কথা। ইংলিশরা হয়তো এরই মধ্যে সেমিফাইনাল দেখতে শুরু করেছে!