জার্মান কোচ: আমরা আশা হারাইনি

তাকে নাকি কখনো আবেগ ছুঁতে পারে না। কিন্তু সুইডেনের বিপক্ষে স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচটায় স্বভাবসুলভ বৈশিষ্ট্য ধরে রাখতে পারলেন না জার্মানি কোচ জোয়াকিম লো। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে টনি ক্রুস যখন দুর্দান্ত গোলটা করলেন তখনই তার উচ্ছ্বাস রীতিমতো বাধ ভেঙেছে।

ম্যাচটা জার্মান কোচকে কতটা ছুঁয়ে গেছে সেটা নাটকীয় জয়ের পর নিজেই বলেছেন, ‘এটা একটা থ্রিলার। আবেগের ঠাসাঠাসি। যা শেষ বাঁশির আগ পর্যন্ত ছিল। ম্যাচের তিন মিনিট বাকি থাকতে ব্রান্ডটের শট পোস্টে লেগে ফিরে এসেছে। যেটা সত্যিই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। এর কিছুক্ষণ আগে আবার গোমেজের হেড ঠেকিয়ে দিয়েছে ওদের গোলরক্ষক।’

প্রথম ম্যাচে মেক্সিকোর কাছে হার। দ্বিতীয় ম্যাচের শুরুতেই আবার গোল হজম। দ্বিতীয়ার্ধে মার্কো রিউস গোল করে সমতায় ফিরলেও জার্মানদের জয়ের আশাটা প্রায় ফিকে হয়ে যাচ্ছিল শেষ বাঁশির কয়েক মিনিট আগে। লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় জেরমি বোয়াটেংকে।

দশ জনের জার্মানির পক্ষে সুইডেনকে হারানোটা প্রায় অসম্ভবই হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ইনজুরি টাইমে মহানাটক। যেটার সমাপ্তি হলো ফ্রি-কিক থেকে ক্রুসের দুর্দান্ত এক গোলে। শেষ মুহূর্তের গোলে এ যাত্রায় বেঁচে গেল জার্মানি। উল্টো ২-১ গোলে হেরে এখন চাপে থাকল সুইডেনই।

অথচ এমন থ্রিলার ম্যাচেও নাকি স্নায়ুচাপে ভোগেনি জার্মানি। বিশ্বজয়ী কোচ লো ম্যাচ শেষে এমনটাই দাবি করলেন। বলেছেন, ‘আজ (শনিবার) আমরা ভেঙে পড়িনি। এমনকি গোল হজম করার পরও বিচলিত হইনি। আমরা কখনোই আশা হারাইনি। জানতাম ম্যাচটা জিতব। তবে যোগ করা সময়ে গোলে আমরা কিছুটা ভাগ্যেরও সহায়তা পেয়েছি।’

জার্মানি কোচের কথাতেই পুরো ম্যাচের চিত্রটা ভেসে উঠছে। তবে এগিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তের গোলে দশ জনের দলের কাছে হেরে যাওয়াটা নিরাশ করেছে সুইডেনকে। ম্যাচ শেষ সুইডিস কোচ জানি অ্যান্ডারসন বলেছেন, ‘তারা খুব বেশি সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। তবে আমাদের গোলকিপার (রবিন ওলসেন) দারুণ কয়েকটা সেভ করেছে। কিন্তু তবু বলতে হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা অন্তত একটা পয়েন্ট পেতে পারতাম।’

ম্যাচের ১২ মিনেট মার্কাস বার্গকে ডি-বক্সে ফেলে দেন জার্মান তারকা বোয়াটেং। সুইডিস স্ট্রাইকার বলে শট নেওয়ার সুযোগটা পর্যন্ত পাননি। অথচ সুইডেন আবেদন জানালেও ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারির সহায়তা নেওয়ার পয়োজন মনে করেননি ম্যাচকর্তা।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রাপ্য পেনাল্টি বঞ্চিত হওয়ার প্রসঙ্গটা অবধারিতভাবেই উঠল। কিন্তু এনিয়ে কোনো অভিযোগ নেই সুইডেন কোচ অ্যান্ডারসনের। বলেছেন, ‘আমি কাউকে দোষারোপ করতে চাই না, এমনকি রেফারির কৌশলগত সিদ্ধান্তকেও না। সম্ভবত আমার ক্যারিয়ারের এটাই সেরা সমাপ্তির ম্যাচ।’