পিছিয়ে থেকেও সুইডেনের বিপক্ষে দারুণ জয় জার্মানির

বিশ্বকাপ খেলতে আসা প্রতিটি দলকেই পড়তে হচ্ছে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে। সেই চ্যালেঞ্জটা সবচেয়ে বেশি জার্মানির জন্য। কারণ তারা যে শুধু খেলতেই আসেনি, তাদের সামনে আছে শিরোপা ধরে রাখার কঠিনতর কাজ। যে কাজ করতে গিয়ে প্রথম ম্যাচেই মেক্সিকোর কাছে বড় এক ধাক্কা খেয়েছে তারা। ধাক্কাটা আরো দীর্ঘ হতে পারতো সুইডেনের বিপক্ষে। কিন্তু তা হয়নি শেষ মুহূর্তে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা টনি ক্রুজের এক অসাধারণ গোলে। দুই ম্যাচে এক হার ও এক জয় নিয়ে জার্মানির দ্বিতীয় পর্বের আশা ভালোভাবেই টিকে যায়।

শনিবার রাতের ম্যাচটা শুরু হয় সুইডেনের দাপট দিয়ে। যা বিশ্বকাপ থেকে চ্যাম্পিয়নদের বিদায়ের করুণ রাগিনীই বাজিয়ে দেয়। সেই বাজতে থাকা রাগিনী শুনতে শুনতেই এক গোলে পিছিয়ে পড়ে জার্মানি। ওলা টইভোনেন ম্যাচের ৩২ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে কাঁপান জার্মানির জাল।

টইভোনেন ফ্রেঞ্চ লিগে তুলুজের হয়ে খেলেন। ২০১৭-১৮ মৌসুমে সেই দলের হয়ে পুরো লিগে ১৯বারের প্রচেষ্টায়ও গোল করতে পারেননি তিনি। কিন্তু বিশ্বকাপে মাত্র দ্বিতীয়বারেই গোল দিয়ে বসেন এই ফুটবলার। যা ম্যাচে সুইডেনকে সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে যায়।

এই গোলটা দেয়ার কিছুক্ষণ আগেই অসাধারণ এক সুযোগ মিস করে সুইডেন। ওই মিস এবং পরে গোল, দুই মিলিয়ে মনে হতে থাকে, জার্মানির বোধহয় শিরোপা ধরে রাখা হবে না। এমন কি তারা দ্বিতীয় পর্বের ‘ইয়েস কার্ড’ পাবে কিনা, তা নিয়েও জোরালো হতে থাকে সংশয়।

সংশয়টা আপাত সময়ের জন্য ঢেকে দেন মার্কো রয়েস। ৪৮ মিনিটে মারিও গোমেজের ক্রস থেকে গোল করেন তিনি। এই গোলের মাত্র দুই মিনিট আগেই জুলিয়ান ড্রাক্সলারের বদলের মাঠে নামেন গোমেজ। নেমেই নিজের উপস্থিতির মূল বোঝান তিনি।

ম্যাচে সমতায় ফেরার পরও জার্মানিকে খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে দেখা যায়নি। বরং ম্যাচের সময় যতো এগিয়েছে, ততোই ত্বরাণ্বিত হয়েছে তাদের বিদায়ের সংশয়। এগিয়ে থেকেও ম্যাচে সমতা প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় সুইডেনও একের পর আক্রমণ করতে থাকে।

এর মধ্যেই, ম্যাচের ৮২ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় জেরোম বুয়াটিংকে। জার্মানির ম্যাচ জেতা তখন হয়ে পড়ে আরো বিপদসঙ্কুল। তাদের তখন এই ম্যাচ থেকে একটা পয়েন্টের বেশি কিছু নেয়ার মতো দেখা যাচ্ছিলো না। ১০ জনের দল জার্মানিকে আরো জোরালো আক্রমণ করতে থাকে সুইডেন।

কিন্তু ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে অনন্য অসাধারণ এক শটে গোল করে দেন টনি ক্রুজ। এই গোলেই ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবার পিছিয়ে থেকেও বিশ্বকাপে কোনো ম্যাচ জিতে যায় জার্মানি এবং এ জয় দ্বিতীয় পর্বে উঠার পথে তাদের যে বাধার প্রাচীর ছিলো, তা কিছুটা কমিয়ে দেয়। পক্ষান্তরে সুইডেনের সামনে তৈরি করে দেয় সংশয়।

সুইডেন প্রথম ম্যাচে কোরিয়ার বিপক্ষে জিতে ১-০ গোলে। দ্বিতীয় ম্যাচটা চ্যাম্পিয়নদের কাছে হারের পর তাদের সামনে এখন মেক্সিকো চ্যালেঞ্জ। ২৭ জুন বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় ম্যাচটি খেলতে নামবে সুইডিশরা।