আইসল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের একাদশ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুনতে হয়েছিলেন আর্জেন্টিনা কোচ জর্জ সাম্পাওলিকে। দেশটির মহাতারকা দিয়েগো ম্যারাডোনা তো রীতিমতো ধুয়ে দিয়ছিলেন তাকে। আর্জেন্টাইন কোচ তোপের মুখে পড়লেন ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের একাদশ এবং রণ কৌশল নিয়েও।

argentina coach jorge sampaoli

বিশ্বকাপ অভিযান শুরুর একদিন আগেই রণ কৌশলের ছকটা প্রকাশ করে দেন আর্জেন্টিনা কোচ। আলবিসেলেস্তেদের পূর্ব ঘোষিত কৌশলকে মাথায় রেখে সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছিল আইসল্যান্ড। আর্জেন্টিনাকে ১-১ গোলে রুখে দিয়ে সেই পরিকল্পনায় সফলও হয়েছিল নবাগত দলটি।

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে শুরুর একাদশে আর্জেন্টিনা দলের পরিবর্তনটা অবধারিত ছিল। এই পরিবর্তনেও বিস্ময় উপহার দিয়েছেন সাম্পাওলি। তিনটি পরিবর্তন আনলেও তিনি সুযোগ দেননি আগের ম্যাচে কুড়ি মিনিটের জন্য বেঞ্চ ছেড়ে এসে দ্যুতি ছড়ানো ক্রিশ্চিয়ান পাভনকে।

সাম্পাওলি শুরুতে মাঠে নামাননি ফরওয়ার্ড ডি মারিয়া, পাওলো দিবালার একজনকেও। বেঞ্চে ঠাঁই হয়েছে তরুণ প্রতিভাময় ডিফেন্ডার লো সেলসোরও। অ্যাগুয়েরোকে শুরুর একাদশে সুযোগ দিলেও দ্বিতীয়ার্ধে তাকে তুলে নেন সাম্পাওলি। সেই ক্ষোভটা ম্যাচ শেষে চাপা রাখেননি অ্যাগুয়েরো।

তার ক্ষোভটা কোচের ওপর। শুধু ডি মারিয়াই নয়, সম্ভবত আর্জেন্টিনার প্রায়সব সমর্থক চটেছেন সাম্পাওলির ওপর। মেসি-হিগুয়েইন-মাশ্চেরানোদের বাজে পারফরম্যান্স ছাপিয়ে কাঠগড়ায় উঠতে হলো আর্জেন্টিনা কোচকে। রক্ষণভাগ নিয়ে ‘জুয়া’ খেলার মাশুলটা গত আসরের ফাইনালিস্টদের দিতে হলো ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে।

হয়তো মধ্যমাঠ ও আক্রমণে লিওনেল মেসির সমর্থন বাড়াতেই রক্ষণে মাত্র তিনজনকে খেলিয়েছেন সাম্পাওলি। আর তাতেই দুই উইং ফাঁকা পেয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। মান্দজুকিচ, পেরেসিচ, মডরিচ, রাকিটিচরা এই উইং দিয়েই আর্জেন্টিনার বিপদসীমার ওপর দিয়ে আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেন। যেটার ফসল তিন গোল।

দুঃস্বপ্নের এই ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাম্পাওলির রক্ষণ বাজি এবং ফরমেশন দুটো নিয়েই প্রশ্ন উঠল। যেখানে আর্জেন্টিনা কোচের সরল স্বীকারোক্তি, ‘আজ আমি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছি।’ দলের এই নির্মম হারের পুরো দায়টাও নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সাম্পাওলি।

ম্যাচ শেষে নিচু স্বরে তিনি বলেছেন, ‘আমি একাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এই ম্যাচ নিয়ে আমার অনেক আশা ছিল। কিন্তু ম্যাচটা আমি পড়তে পারিনি। ম্যাচটা যেভাবে বোঝা উচিৎ ছিল সেটা বুঝতে পারিনি আমি। দলের এমন হারে আমি অত্যন্ত ব্যথিত।’

সাম্পাওলি মেনে নিয়েছেন ৩-৫-২ ছকের কারণে আক্কেল সেলামি দিতে হয়েছে আর্জেন্টিনাকে। মেসি যাতে বলের জোগান বেশি পান সে জন্যই মধ্যমাঠে পাঁচজন খেলিয়েছেন আর্জেন্টিনা কোচ। অথচ তার পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। প্রথমার্ধে মেসি বল পেয়েছেন মাত্র দুবার!

অথচ আগের ম্যাচে দল হোঁচট খেলেও আইসল্যান্ডের রক্ষণে ১১টা শট নিয়েছিলেন মেসি। ওই ম্যাচে তার গোল না পাওয়ার কারণ দুর্ভাগ্য। কাল ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে তো মাত্র একবারই শট নিতেই দেখা গেছে মেসিকে। তাও আবার জটলার মধ্যে। পুরো ছকটা যে বুমেরাং হয়ে গেছে সেটা মানছেন সাম্পাওলি।

তবে এ জন্য কাউকে দায়ী করছেন না তিনি। দোষটা নিজের ওপর চাপিয়েছেন সাম্পাওলি। ম্যাচ শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘আসলে আমরা এমন কোনো ছক তৈরি করতে পারিনি যেটা আমাদের প্রত্যাশিত ফেল এনে দেবে। এই ম্যাচে প্রতিপক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করাই আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু প্রথম গোলটার পর আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। সেখান থেকে ফিরে আসতে পারিনি। আমাদের পরিকল্পনাও সফল হয়নি।’

দল হেরেছে। অধিনায়ক হিসেবে দায়টা এড়াতে পারেন না মেসি নিজেও। এরচেয়ে বাজে ম্যাচ মেসি পুরো ক্যারিয়ারে খেলেছেন কিনা তা নিয়েও চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কিন্তু মেসির ওপর দায় চাপাতে নারাজ সাম্পাওলি। বরং শিষ্যের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেন আর্জেন্টিনা কোচ।

ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাম্পাওলি বলেছেন, ‘এই ম্যাচে আমাদের অনেক ঘাটতি ছিল। এর দায়টা একজন না একজনকে তো নিতেই হবে। আমি যেভাবে বলেছি ছেলেরা সেভাবেই চেষ্টা করেছে। ওরা সফল হয়নি, দায়টা অবশ্যই আমাকে নিতে হবে। সব দোষ আমার।’

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.