রাতে পেরুর মুখোমুখি ফ্রান্স

চলমান রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে তারকাবহুল ও শক্তিশালী দল ফ্রান্সের। এবারের ফুটবল মহাযজ্ঞের হট ফেভারিট দলও ফরাসিরা। কিন্তু ঘটন-অঘটনের বিশ্বকাপে জয় দিয়ে শুরু করলেও ফেভারিট তকমার সঠিক মূল্যায়ন করতে পারেনি সাবেক চ্যাম্পিয়নরা।

তুলনামূলক খর্বশক্তির দল অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল তাদের। আত্মঘাতী গোল ও প্রযুক্তির সহায়তায় কোনারকম জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে দিদিয়ের দেশমের দল। ২-১ গোলের সেই জয়টা তৃপ্ত করতে পারেনি সমর্থকদেরও। ফ্রান্স অবশ্য খুশি ছিল জিততে পেরেই।

বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এমবাপ্পে-গ্রিজম্যান-পগবাদের প্রতিপক্ষ ল্যাটিন আমেরিকান দল পেরু। ডেনমার্কের কাছে হার দিয়ে যাদের শুরু হয়েছিল বিশ্বকাপ অভিযান। বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় ইয়াকাতেরিবুর্গে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে ফ্রান্স-পেরু। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, মাছরাঙা, নাগরিক টিভি ও সনি টেন টু।

‘সি’ গ্রুপের চতুর্থ ম্যাচে একটি পরিবর্তন নিয়ে শুরুর একাদশ সাজাতে পারে দুই দল। ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম প্রথম একাদশেই সুযোগ দিতে পারেন অলিভার জিরার্ডকে। আগের ম্যাচে বেঞ্চ ছেড়ে উঠে এসে এই ফুটবলারই ফ্রান্সের জয়সূচক (আত্মঘাতী) গোলে অবদান রেখেছিলেন।

আগের ম্যাচটাতে বেঞ্চ থেকে উঠে এসেছিলেন পেরুর ফুটবল ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা পাওলো গুরেরোকেও। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে এলেও ডেনমার্কের বিপক্ষে দলের হার ঠেকাতে পারেননি তিনি। আজ তাই শুরুর একাদশেই তাকে দেখা যেতে পারে মাঠে।

গুরেরোর বিশ্বকাপ খেলা নিয়েই অবশ্য সংশয় ছিল। ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় ছয় মাস নির্বাসনে কাটাতে হয়েছে তাকে। দুঃস্বপ্ন ভুলে যখন বিশ্বকাপে খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন গুরেরো তখনই আরেকটা ধাক্কা খেতে হয় তাকে। ১৫ মাসের আরেকটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় তার ওপর।

তাতে করে সুতোয় ঝুলে গিয়েছিল পেরু অধিনায়কের বিশ্বকাপ ভাগ্য। তাকে বিশ্বকাপে চেয়ে আর্জি জানিয়েছিল খোদ গ্রুপ প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোও। শেষ অবধি গুরেরোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সু্ইজারল্যান্ডের ক্রীড়া আদালত কোর্ট অব আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টস (সিএএস)। সেই গুরেরোই আজ ফ্রান্সের সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। পেরুভিয়ানদের আশার প্রদীপ জ্বলছে তাকে ঘিরেই।

প্রথম ম্যাচে অন্তত ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতো পেরু। কিন্তু পেনাল্টির সুযোগ পেয়েও হাতছাড়া করেছে ল্যাটিন আমেরিকার দলটি। ক্রিশ্চিয়ান কুয়েভা ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন বল। পেরু স্পট কিক থেকে গোল তো করতে পারেইনি, উল্টো পেনাল্টি থেকে তাদের হজম করতে হয় একটি গোল।

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স এবং দুই দলের শক্তিমত্তা বিচারে আজকের ম্যাচে এগিয়ে আছে ফ্রান্স। কিন্তু দুই দেশের অতীতের লড়াই কিন্তু পিছিয়ে রাখছে ফরাসিদের। ৩৬ বছর আগে প্রথম ও শেষবারের সাক্ষাতে ফ্রান্সকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল পেরু। প্যারিসের সেই ম্যাচটা আবার ছিল প্রীতি ম্যাচ। তাই এবারই প্রথম বিশ্বকাপের মঞ্চে দেখা হচ্ছে দুই দলের।