ইরানের বিপক্ষে ভাগ্যক্রমে জিতল স্পেন

ইরানের সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচ। স্পেনের জন্য ম্যাচটা যে সহজ হবে না সেটা এক প্রকার অনুমিতই ছিল। অনুমানটাই সত্যি হলো। এশিয়ার দলটির কাছে রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষা দিতে হলো লা রোজাদের। নাটকীয় ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ভাগ্য জিতিয়ে দিয়েছে স্পেনকে।

বুধবার রাতে কাজানে ইরানকে ১-০ গোলে হারিয়ে আসরে প্রথম জয় তুলে নিয়েছে স্পেন। এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডের আশাটা বাঁচিয়ে রাখল লা রোজারা। স্প্যানিশ সমর্থকরা এ জন্য ধন্যবাদ দিতে পারেন ডিয়েগো কস্টাকে। ম্যাচের একমাত্র ও জয়সূচক গোলটা যে তার সৌজন্যেই এসেছে।

কাঠখড় পোড়ানো এই জয়ের ফলে পর্তুগালের সমান চার পয়েন্ট হলো স্পেনেরও। দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে দুই দলই যৌথভাবে ‘বি’ গ্রুপের টেবিলে শীর্ষে আছে। ইউরোপের দুই জায়ান্টের চেয়ে এক পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের তিনে আছে ইরান।

মরক্কোর সঙ্গে নিজেদের প্রথম ম্যাচটা ‘বিশ্বকাপ ফাইনাল’ হিসেবেই নিয়েছিল ইরান। স্পেনের বিপক্ষের ম্যাচটাকে ‘মহাবিশ্বকাপ ফাইনাল’ হিসেবেই আখ্যা দিয়েছিল তারা। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সাবেক চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে দাঁতে দাঁত চেপেই লড়াই করে এশিয়ার দলটি। উত্তেজনার রেণু ছড়ানো ম্যাচের প্রথমার্ধ পর্যন্ত স্পেনকে গোলখরায় ভুগিয়েছে রক্ষণাত্মক ইরান।

আক্রমণ পাল্টা আক্রমণের ম্যাচটার গোলমুখ খোলে ৫৪ মিনিটে। কস্টার গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। তবে এই গোলে ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভুত স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের নয়, মূল কৃতিত্বটা রামিন রেজাইয়ানের। বল ক্লিয়ার করতে শট নিয়েছিলেন ইরান ডিফেন্ডার। কিন্তু তার শট দুর্ভাগ্যবশৎ কস্টার পায়ে লেগে বল জড়িয়ে যায় জালে। যেভাবেই হোক গোলটার মালিক হলেন কস্টা। এই বিশ্বকাপে এটা তার তৃতীয় গোল। সমান গোল চেরিশেভেরও। চার গোল শীর্ষে থাকা রোনালদোর। 

৬২ মিনিটে গোল করে উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিল ইরান, ফিরেছিল সমতায়। কিন্তু তাদের গোলের উল্লাসটা বাতাসে মিশে গেছে একটু পরই। ভিডিও অ্যাসিসটেন্ট রেফারিংয়ে বলি হয় ইজাতোলাহির গোলটা। স্পেনের রিভিউর পর অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় ইরানের গোলটা। ফ্রি-কিক থেকে উড়ে আসা বলটা ছুঁয়ে দিয়েছিলেন রেজাইয়ান। পরে ইজাতোলাহি বল জড়িয়ে দেন স্পেনের জালে। ইরানের দুর্ভাগ্য সমতাসূচক গোলটা শেষ অবধি দেখল না আলোর মুখ।

৬৮ মিনিটে সবচেয়ে স্নায়ুঠাসা কয়েকটা মুহূর্ত পার করেছে কাজানের ম্যাচটা। ডেভিড সিলভার নিচু কর্নার কিকে ইরানের গোলমুখের সামনে ৭-৮ জনের জটলার মধ্যে বল নিয়ে কী কাণ্ডটাই না ঘটে গেল! যদিও শেষ পর্যন্ত বলটা নিজের আয়ত্বে নিয়ে নেন ইরান গোলরক্ষক বেইরানভান্ড। ম্যাচে দুর্দান্ত কয়েকটা সেভও করেছেন তিনি।

অবশ্য এই হারে সব শেষ হয়ে যায়নি ইরানের। দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার আরো একটা সুযোগ পাচ্ছে এশিয়ার প্রতিনিধি দলটি। সোমবার সারানস্কতে রাত ১২টায় নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ইউরোপের আরেক পরাশক্তি পর্তুগালের মুখোমুখি হবে ইরান।

একই দিন একই সময়ে অন্য ভেন্যু কালিনিনগ্রাদে গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচটি খেলতে নামবে স্পেন। ওই দিন আফ্রিকান দল মরক্কোকে মোকাবেলা করবে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে যাওয়ায় অবশ্য মরক্কোর বিদায় আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছে।