শততম ম্যাচে সুয়ারেজের গোল, সৌদির সাথে মিশরেরও বিদায়

স্বাগতিকদের বিপক্ষে পাঁচ গোলের বিশাল হার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা সৌদি আরব দ্বিতীয় ম্যাচেও ঘুরে দাঁড়াতে পারলো না। পরপর দুই ম্যাচের হারে বিশ্বকাপই শেষ হয়ে গেলো তাদের। এবার তারা হারলো লুইস সুয়ারেজের উরুগুয়ের কাছে। যারা আবার প্রথম ম্যাচে মিশরকে হারিয়েছে। অর্থাৎ মিশর ও সৌদি আরবকে হারিয়ে দ্বিতীয় পর্বে চলে গেলো উরুগুয়ে। তাদের জয় সৌদির সাথে বিদায় নিশ্চিত করলো মিশরেরও।

প্রথম ম্যাচে রাশিয়ার বিপক্ষে সৌদি আরবের ডিফেন্স ছিলো বেসামাল। গোল বাঁচানোর জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছে বটে, কিন্তু তাদের চেষ্টার প্রতিফলন পড়েনি খেলার ফলাফলে। সেই ম্যাচের সৌদি গোলরক্ষক আল মায়ুফকে সময় পার করতে হয়েছে জাল থেকে বল কুড়াতে কুড়াতে।

ডিফেন্সের সেই হতশ্রী অবস্থা থেকে শিক্ষা নিতে ভুল করেননি সৌদি আরবের কোচ হুয়ান অ্যান্টোনিও পিজ্জি। উরুগুয়ের বিপক্ষে তাই গোলরক্ষকের জায়গাটাতে বদল এনে ম্যাচ শুরু করেন তিনি। আল মায়ুফের জায়গায় সুযোগ পান আল ওয়াইজ।

পিজ্জি পরিবর্তন আনেন আরো তিনটি। রাশিয়ার বিপক্ষে ভুলে যাওয়ার মতো শুরুর পর এতোগুলো পরিবর্তন অবশ্য একেবারেই স্বাভাবিকি ছিলো। কিন্তু উরুগুয়ে প্রায় মিশরকে হারানো একাদশ নিয়েই খেলতে নামে। মাত্র দুটি পরিবর্তন আনে তারা। এই ম্যাচ দিয়ে উরুগুয়ের হয়ে শততম ম্যাচ খেলার কীর্তি গড়েন লুইস সুয়ারেজ। তার আগে এই কীর্তিতে নাম লেখিয়েছেন মাত্র পাঁচজন।

সুয়ারেজের শততম ম্যাচের দিন শুরু থেকেই সৌদি আরবকে বেশ সতর্ক দেখায়। কিন্তু সেই সতর্কতা কেবল তাদেরকে কিছুক্ষণ গোল হজম করা থেকেই বাঁচিয়েছে। তারা নিজেরা তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি।

কিন্তু ম্যাচের ২২ মিনিটে গিয়ে নিজের রক্ষণটাও আর রক্ষাত করতে পারেনি সৌদি আরব। উড়ে আসা কর্নার কিক ধরতে এগিয়ে আসেন সৌদি আরবের গোলরক্ষক। কিন্তু বলের নাগাল পাননি তিনি। বল পড়ে গিয়ে সুয়ারেজের পায়ে। ছয় গজের মতো দূরত্ব থেকে বলটা জালে ঢুকিয়ে দেন তিনি। সৌদির গোলবার তখন পুরো ফাঁকা!

প্রথমার্ধে আরো অন্তত দুই তিনটি সুযোগ পায় উরুগুয়ে। কিন্তু এই ম্যাচের সৌদি ডিফেন্স ভেদ করে তা আর গোল হয়নি। প্রথমার্ধে বল পজেশনে উরুগুয়ের চেয়ে এগিয়ে থাকে সৌদি আরব। ১-০ গোলে শেষ হয় প্রথমার্ধ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণের ধার বাড়ায় উরুগুয়ে। সৌদিও গোল ফিরিয়ে দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে।

কিন্তু একটা সময়ে গিয়ে দুই দলকেই রক্ষণাত্মক কৌশল নিতে দেখা যায়। সৌদি যেনো নিজেদের বিদায় মেনে নেয়। তাদের খেলা দেখে মনে হয়, প্রথম ম্যাচের মতো পাঁচ গোল না খেয়ে ম্যাচ শেষ করতে পারলেই তারা খুশি। আর উরুগুয়েও বেশি গোলে অনাগ্রহী হয়ে ওঠে। অন্তত তাদের খেলা দেখে তাই মনে হয়।

তারপরও ৮৬ মিনিটে গিয়ে দারুণ এক সুযোগ তৈরি করে উরুগুয়ে। এডিসন কাভানি দারুণ গতিতে এগিয়ে যান সৌদির গোলমুখের দিকে। কিন্তু ওয়াইজ দারুণ দক্ষতায় তা ব্যর্থ করেন। এরপর আর উল্লেখযোগ্য কোনো আক্রমণ করতে পারেনি কোনো দল। ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের ব্যবধানেই শেষ হয়।