মেসির নতুন সঙ্গীকে এবার নামিয়ে দিবেন সাম্পাওলি

বিশ্ব ফুটবলে বোকা জুনিয়র্সের নামটা দারুণ পরিচিত। এটা যতোটা না তাদের সাফল্যের কারণে, তার চেয়ে বেশি দিয়েগো ম্যারাডোনার সাবেক ক্লাব হওয়ার কল্যাণে। আর্জেন্টাইন ক্লাব বোকা জুনিয়র্স আবার আলোচনায় এসেছে ক্রিস্টিয়ান পাভনের বদন্যতায়। তাদের ক্লাবের এই সোনার টুকরা ছেলেকে যে মনে করা হচ্ছে মেসির নতুন সঙ্গী।

রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচের সেরা একাদশে পাভনকে রাখেননি আর্জেন্টিনার কোচ হোর্হে সাম্পাওলি। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে হয়তো তাকে আর উপেক্ষা করতে পারছেন না তিনি। কিভাবেই বা করবেন! প্রথম ম্যাচে তার বাজির অন্যতম ঘোড়া ডি মারিয়া যে ছিলেন নিবু নিবু প্রদীপের মতো। যেনো দুম করে এক বাতাস এলেই নিবে যাবেন একেবারে।

নিষ্প্রভ ডি মারিয়াকে প্রথম ম্যাচের পুরোটা সময় খেলানোর ঝুঁকি নেননি সাম্পাওলি। এবার দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে শুরু থেকে না নামানোরই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। ম্যাচের দিন পরিস্থিতি যদি বদলে না যায়, সেরা একাদশে তাহলে মেসির পাশে দেখা যেতে পারে তার নতুন সঙ্গী পাভনকে এবং সেটা ডি মারিয়ার বদলে।

পাভনকে নাকি এরই মধ্যে সে রকম আভাসও দেয়া হয়েছে। এতে অবশ্য অস্বাভাবিক কিছুই দেখেছেন ফুটবলবোদ্ধারা। সাম্পাওলি কোচের দায়িত্ব নেয়ার পর আর্জেন্টিনা খেলেছে মোট ১২টি ম্যাচ। এর মধ্যে একটিতেও অপরিবর্তিত একাদশ নামাননি তিনি। অর্থাৎ কোচরা সাধারণতম যেমন স্থীতধী হন, সাম্পাওলি ঠিক তেমন নন। ব্যক্তি সাম্পাওলি যেমনই হোন না কেনো, কোচ সাম্পাওলির ফুটবল দর্শন অন্য রকম। তিনি প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জনে পরিবর্তনে বিশ্বাস করেন।

তার সেই বিশ্বাসের প্রয়োগ যে পরের ম্যাচেও হবে, তা প্রায় নিশ্চিত। আর এই নিশ্চয়তার পথ ধরেই একাদশে পাভনকে দেখছেন অনেকে। পাভন এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের কোচ সব পজিশন নিয়েই চিন্তা ভাবনা করছেন। হয়তো আমার পজিশন নিয়েও তার চিন্তা আছে। আমি একাদশে থাকবো কি থাকবো না, তা নিশ্চিত হতে পারবো ম্যাচের দিন।’

পাভনের জায়গা নিয়েই শুধু নয়, ডিফেন্স নিয়েও সাম্পাওলিকে ভাবতে হচ্ছে নানাভাবে। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে মাত্র এক গোলে বেরিয়ে আসতে পারলেও, ডিফেন্স ছিলো কচু পাতার পানির মতো। কখন কোন দিকে টুপ করে হেলে পড়বে, তার কোনো নিশ্চয়তা ছিলো না।

এবার তাই এখানে আরো একটু দৃঢ়তা আনতে চাইছেন সাম্পাওলি। অবশ্য তিন জনের বেশি ডিফেন্ডার তিনি নিচ্ছেন না বলেই জানা যাচ্ছে। তিনি দৃঢ়তা বাড়াতে পারেন খেলোয়াড়ে পরিবর্তন এনে। সাম্পাওলির পরিকল্পনায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে মধ্যমাঠ ও আক্রমণভাগ।

আর্জেন্টাইন দর্শকরা তো বটেই, ফুটবল বিশ্বও আর্জেন্টিনার ডিফেন্স বা মধ্যমাঠ নিয়ে ভাবছে না। সবার চাওয়া হলো আলবেসিলেস্তেদের আক্রমণটা যাতে ঠিক মতো থাকে। মেসির নতুন সঙ্গী বলে পরিচিত হওয়া পাভন যাতে সত্যিই নতুন তারকা হয়ে উঠেন, মনে প্রাণে তাই চাইছেন সবাই। এই চাওয়াটা পূরণ হবে কিনা, তা নির্ভর করছে স্বয়ং পাভনের উপর।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় পাভনের পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। তার পরীক্ষার প্রথম প্রশ্ন ক্রোয়েশিয়া। যারা ইতোমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে যে, মেসিকে ছাড়া আর্জেন্টিনার আর কাউকে তারা পাত্তাটাত্তা দিচ্ছে না। পাভন চাইলে নিজে অনুপ্রাণিত করতে পারেন এখান থেকেই। এখন তিনি সেটা চাইবেন কিনা, এটা কেবলই তার ব্যাপার!