মুখোমুখি সুইডেন-কোরিয়া, কঠিন লড়াইয়ের আভাস

নিঃসন্দেহে এবারের আসরের সবচেয়ে কঠিন গ্রুপের নাম ‘এফ’। এই গ্রুপের উদ্বোধনী ম্যাচে মেক্সিকোর কছে ১-০ গোলে হেরে অঘটনের শিকার হয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। সোমবার মাঠে নামছে গ্রুপের অন্য দুই দল সুইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়া।

নিঝনি নোভগোরাদে গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে এই দুই দল। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ছয়টায় পরস্পরকে মোকাবেলা করবে এশিয়া ও ইউরোপের দুই ফুটবল পরাশক্তি। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে মাছরাঙা, নাগরিক টিভি ও সনি টেন টু।

এই ম্যাচ দিয়েই এক যুগ পর বিশ্বকাপে ফিরছে সুইডেন। গত বছর প্লে-অফে ইতালিকে বিদায় করে মূলপর্বে জায়গা করে নেয় তারা। কিন্তু সুইডিশদের এই স্বপ্নযাত্রায় নেই দেশটির কিংবদন্তি ফুটবলার জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ। যিনি অবসর ভেঙে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েও বিশ্বকাপ না খেলার কথা জানিয়েছেন। তবে দলকে অনুপ্রাণিত করতে ঠিকই রাশিয়ায় ছুটে এসেছেন ইব্রা।

ডেথ গ্রুপের লড়াই হলেও এ ম্যাচে এগিয়ে রাখা হচ্ছে সুইডেনকে। কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে চারবারের সাক্ষাতে একবারও হারেনি সুইডিশরা। বিগত চার লড়াইয়ের দুটিতে জিতেছে তারা। বাকি দুটি শেষ হয়েছে ড্রয়ে। কিন্তু বিশ্বকাপের মঞ্চে এবারই প্রথম এশিয়ান জায়ান্টদের মুখোমুখি হচ্ছে সুইডেন। 

শুধু ম্যাচে নয়, গ্যালারির সম্ভাব্য পজিশনেও এগিয়ে রাখা হচ্ছে সুইডেনকে। এ ম্যাচ দেখতে টিকিট কেটেছেন ৩০ হাজার সুইডিশ সমর্থক। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার দুই হাজার সমর্থকও থাকছেন না স্টেডিয়ামে! তাই বলা যায় আজ ‘ঘরের মাঠে’ পরিচিত দর্শকদের সামনেই খেলতে নামছে সুইডিশরা। যা তাদের জন্য বড় একটা প্রেরণা।

এ যাত্রায় সুইডেনের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে ইতিহাস। গত ৬০ বছর ধরে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে জিততে পারছে না তারা। সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স তাদের হতাশ করছে। শেষ তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষের গোলমুখ খুলতে পারেনি তারা। এই গোলখরা বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই কাটাতে মরিয়া ইউরোপিয়ান দলটি।

সে লক্ষ্যে সম্ভাব্য সেরা শক্তি নিয়েই মাঠে নামছে সুইডেন। দলে নেই কেনো ইনজুরি সমস্যা। পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করবে দক্ষিণ কোরিয়াও। এ যাত্রায় কোরিয়ানদের নেতৃত্ব দেবেন টটেনহাম ফরওয়ার্ড সন হিয়ুং-মিন। তিনিই আবার এই মুহূর্তে দলের সবচেয়ে বড় তারকা।

কোচ শিন তাই-ইয়ংয়ের প্রধান অস্ত্র এই হিয়ুং-মিনই। কোচ হিসেবে প্রথম বিশ্বকাপ রাঙাতে মুখিয়ে আছেন তিনি। এ অভিযানটা জয় দিয়ে শুরু করাটা তার কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচের আগে কোরিয়ান কোচ বলেছেন, ‘আমরা একে অন্যের চেয়ে কতটা ভালো এটা জানি না। তবে সোমবারের ম্যাচের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে।’

সোমবার জিততে চাইবেন সুইডেন কোচ জ্যানি অ্যান্ডারসনও। কারণ সোমবার বিশ্বকাপের ডাগ আউটে অভিষেক হচ্ছে তার। অ্যান্ডারসনকে আশা দেখাচ্ছেন দলের এক ঝাঁক প্রতিভাবান ফুটবলার। সুইডিশ কোচ তাই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সবটুকু নিংড়ে দেওয়ার। তিনি পারবেন তো ১৯৫৮ বিশ্বকাপের রানার্সআপ দলটির প্রত্যাবর্তনটা স্মরণীয় করে তুলতে?

এ যাত্রায় শুরুটাই কঠিন। কারণ শেষ চার বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচের একটিতেও হারেনি দক্ষিণ কোরিয়া। জয় তুলে নিয়েছে তিনটিতেই। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের সেমফাইনালিস্ট কোরিয়ানদের অজেয় তকমা তুলে ফেলার লক্ষ্যেই আজ মাঠে নামছে সুইডেন। পক্ষান্তরে কোরিয়ার লক্ষ্য অতীত সাফল্য ধরে রাখা।