কয়েক সপ্তাহ ধরেই স্বস্তির বাতাস বইছে কোরিয়ায়। বহু বছরের বৈরিতা ভুলে বন্ধুত্বের হাত মিলিয়েছে দুই কোরিয়া। আপাতত রাজনৈতিক অস্থিরতা ভুলে দুটি দেশই ডুবে আছে বিশ্বকাপ নিয়ে। তবে আসন্ন বিশ্বকাপে আছে শুধু দক্ষিণ কোরিয়া। তাই বলে আগ্রহের কমতি নেই উত্তর কোরিয়াতেও। বিশ্বকাপে ভালোর কিছুর প্রত্যাশায় ইতোমধ্যে প্রতিবেশীদের শুভেচ্ছাবার্তাও পাঠিয়েছে তারা।

south korea football team 2018

সত্তর বছর ধরে এশিয়ার রাজনীতির মাঠ গরম করে রেখেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দীর্ঘ সাত দশক ফুটবল মাঠও দাপিয়ে বেরিয়েছে তারা। ধীরে ধীরে এশিয়ান ফুটবলের পরাশক্তি হয়ে উঠেছে দ্য রেডরা। যেটার সবচেয়ে বড় সুফলটা তারা পেয়েছে ১৯৫৬ ও ১৯৬০ সালে। এশিয়ান কাপের পরপর দুটো আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া।

তবে পূর্ব এশিয়ান দলটির ফুটবল ইতিহাসে আরো বড় সাফল্য আছে। ২০০২ বিশ্বকাপ জাপানের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করে চমক উপহার দিয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়া। বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথম জয় তারা পেয়েছিল ওই আসরেই। ফুটবল মহাযজ্ঞে প্রথমবারের মতো তারা জায়গা করে নিয়েছিল সেমিফাইনালে। শেষ অবধি জার্মানির কাছে এসেই থামে তাদের রথযাত্রা।

এই স্বপ্নযাত্রায় দক্ষিণ কোরিয়া পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্পেন এবং ইতালির মতো জায়ান্ট দলগুলোকে হারিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রূপকথার ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা। তবে যা করেছিল তাতেই আত্মতৃ্প্তির ঢেকুর তুলেছিল কোরিয়া। ওই বিশ্বকাপের স্বাগতিক হওয়ায় আগের বছর কনফেডারেনস কাপেও অংশ নিয়েছিল তারা। যদিও প্রথমবার অংশ নিয়ে গ্রুপপর্বেই থেমেছিল তাদের পথচলা।

১৯৫৪ সালে সুইডেনে বিশ্বকাপের মঞ্চে অভিষেক হয় দক্ষিণ কোরিয়ার। তাদের জন্য হতাশার তথ্য হচ্ছে- এরপরের সাতটি বিশ্বকাপের আসরেই খেলতে পারেনি তারা। কিন্তু সেই দুঃস্মৃতিটা দ্য রেডরা কাটিয়ে ওঠে ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ্বকাপে। সেই থেকে টানা আটটি বিশ্বকাপ খেলেছে দক্ষিণ কোরিয়া। যেখানে সেমিফাইনাল ছাড়া বিশ্বকাপে তাদের সেরা সাফল্য ২০১০ সালে নক আউট পর্বে ওঠাটা।

এবার দশম বিশ্বকাপে শেষ ষোলোতে জায়গা করে নেওয়াটাই দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য কঠিন হয়ে উঠবে। কারণ গ্রুপপর্বের ড্র যে মৃত্যুকূপে ফেলে দিয়েছে এশিয়ান জায়ান্ট দলটিকে! ‘এফ’ গ্রুপে তারা প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, উত্তর আমেরিকার পরাশক্তি মেক্সিকো এবং ইউরোপিয়ান জায়ান্ট সুইডেনকে।

শক্তিশালী এসব দেশকে টপকে নক আউট পর্বে উঠেতে গেলে কোরিয়ানদের উত্তীর্ণ হতে হবে অগ্নিপরীক্ষায়। তাই ধারণা করা হচ্ছে গ্রুপ পর্বের বাধা ডিঙানোই হবে এই বিশ্বকাপে এশিয়ান দলটির বড় একটা সাফল্য। এ যাত্রায় ১৮ জুন সুইডেনের বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া শুরু করবে তাদের রাশিয়া বিশ্বকাপ মিশন।

এবারের বিশ্বকাপে আট গ্রুপের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ এটাই। বলা বাহুল্য, দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য সবকটি ম্যাচই চ্যালেঞ্জিং। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রধান কোচ শিন তাই ইয়ংকে ভরসা দিচ্ছেন এই মুহূর্তে দলের সবচেয়ে বড় তারকা সন হিয়ুং মিন। টটেনহামের জার্সিতে অভিষেক মৌসুমেই এই ফরওয়ার্ড কাঁপিয়ে দিয়েছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ। বিদায়ী মৌসুমের ফর্মটা জাতীয় দলেও বয়ে আনতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন হিং মিন।

আসন্ন বিশ্বকাপে দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃত্বে থাকবেন কি সাং ইয়াং। স্পট লাইট খুঁজে নেবে তাকেও। স্বপ্নের এই অভিযানে তিনি পাশে পাচ্ছেন এক ঝাঁক অভিজ্ঞ ও তরুণ ফুটবলারদের। দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্বাস- তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতার উপযুক্ত মিশ্রণ ঘটাতে পারলে রাশিয়ার মঞ্চে আলো ছড়াতে পারবে তারা। কোরিয়ার সেই আশাটা পূরণ হবে কিনা সেটা অবশ্য বলে দেবে সময়।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.