নিপীড়ক ইসরায়েলি সেনাদের ছবি তুললে ৫ বছরের জেল!

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আইন করে বর্ণবাদকে বৈধ রূপ দিয়ে আসছে দখলদার ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল। এরপরও মধ্যপ্রাচ্যের কথিত একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ পশ্চিমা খৃস্টান বিশ্ব। এবার ফিলিস্তিনিদের হত্যা-নির্যাতনের সময় দখলদার ইসরায়েলি সেনাদের ছবি তুললে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে আইন করছে ইসরায়েল। লক্ষ্য ইসরায়েলি সেনাদের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাক্ষ্য-প্রমাণ না রাখা।

বিতর্কিত আইনটিতে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি ইসরায়েলি সেনাদের এবং দেশটির বাসিন্দাদের মনোবলকে দুর্বল করার উদ্দেশ্যে দায়িত্ব পালনরত ইসরায়েলি সেনাদের ভিডিও ধারণ, ছবি তোলা এবং তথ্যাদি সংরক্ষণ করলে, তার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হবে।’

হিব্রু ভাষার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রাশিয়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরটি ডটকম একথা জানিয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, ইসরায়েলি সেনাদের সমালোচনার পথ বন্ধ করতেই এই আইন করা হচ্ছে। কারণ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাদের তথ্য প্রকাশের উদ্বেগজনক ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে দেশটি।

এমন সময় এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যখন ফিলিস্তিনিদের ‘প্রত্যাবর্তনের মহাযাত্রা’ নামে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে প্রাণঘাতি অস্ত্র ব্যবহার করে ১১৯ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত মার্চের শেষ দিকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর এমন হত্যাযজ্ঞে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠে।

ইসরায়েলের এই আইন প্রণয়নের উদ্যোগকে মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ভয়াবহ লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন-পিএলও। তারা বলছে, ইসরায়েলি সেনাদের লুকানোর কিছু নেই। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে তাদের আচরণের তথ্য সংগ্রহে ক্ষতির কিছু নেই।

এক বিবৃতিতে পিএলও বলেছে, নিজেদের যুদ্ধাপরাধ আড়াল করতে এবং সেনাদের যে কোনো ধরনের বিচারিক দায়বদ্ধতা থেকে মুক্তি দিতে ইসরায়েল তাদের কথিত গণতান্ত্রিক আইন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে। এর মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের জীবনের বিনিময়ে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে প্রতিনিয়ত যাদের নির্মমতা এবং সন্ত্রাসের শিকার ফিলিস্তিনিরা।