হায়দরাবাদ না চেন্নাই, কারা যাবে আইপিএল ফাইনালে?

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও চেন্নাই সুপার কিংসের কোয়ালিফায়ার ম্যাচ দিয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) একাদশ আসরের শেষের শুরু হয়ে যাচ্ছে মঙ্গলবার। এ দিন বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুম্বাইয়ের ওয়েংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে এই আইপিএলের শীর্ষ দুই দল। এই লড়াই শেষে কারা যাবে ফাইনালে— সানরাইজার্স না চেন্নাই?

প্রশ্নটির উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরো কয়েক ঘণ্টা। পরিস্থিতি বলছে, পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ অবস্থান নিয়ে শেষ চারে এলেও হায়দরবাদের জন্য কোয়ালিফায়ারের লড়াই সহজ হবে না। ফাইনালযাত্রা সহজ হবে না দুই বছরের নির্বাসন কাটিয়ে আইপিএলে ফিরেই শেষ চারে উঠে যাওয়া চেন্নাইয়ের জন্যও।

লিগ পর্বে চেন্নাইয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের উভয়টি হেরেছে হায়দরাবাদ। এই বিষয়টি নিশ্চিতভাবেই পিছিয়ে রাখছে সাকিব আল হাসানের দলকে। পক্ষান্তরে ওই দুই ম্যাচ জিতেছেন বলেই যে এমএস ধোনিরা নিশ্চিন্তে থাকবেন, তারও উপায় নেই। কারণ আসরের অন্যতম সেরা দুই দলের লড়াইয়ের পরপর তিন ম্যাচে নিশ্চয় একটা দলই জিতবে না!

আরো একটা তথ্য দুই দলকে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে সমান সমান লড়াইয়ের মঞ্চে। কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে মুম্বাইয়ের ওয়েংখেড়েতে। যেখানে লিগ পর্বে একটি করে ম্যাচ খেলেছে এই দুই দল এবং দুটিতেই তারা স্বাগতিক মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে জিতেছে। অর্থাৎ এই ভেন্যুতে জয়ের আত্মবিশ্বাস সমান থাকবে দুই দলেরই।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে ধরনের ক্রিকেট খেলা দরকার এবং যে ধরনের মানসকিতা প্রদর্শন করা প্রয়োজন, কোয়ালিফায়ারের দুই দল আসরের শুরু থেকেই তা দেখিয়ে আসছে। সানরাইজার্সের ব্যাটিং কিছুটা দুশ্চিন্তার কারণ হলেও রশিদ খান, সাকিব আল হাসান ও ভুবনেশ্বর কুমারকে নিয়ে গড়া তাদের বোলিং বিভাগ ছিলো অসাধারণ। নিশ্চিত হারতে হতে পারে, এমন পুঁজি নিয়েও তারা জিতেছে অন্তত তিনটি ম্যাচ।

ফাইনালে উঠার লড়াইয়েও তাই হায়দরাবাদের মূল শক্তি তাদের বোলিং। শুধু বোলিংয়ে নির্ভরতা নিঃসন্দেহে হায়দরাবাদের বড় এক সীমাবদ্ধতা। যা নেই চেন্নাইয়ের। বোলিং ও ব্যাটিং— দুই বিভাগেই চ্যাম্পিয়নদের মতো খেলে শেষ চারে এসেছে এমএস ধোনির দল।

লিগ পর্বে চেন্নাইয়ের হয়ে আইপিএল মাতিয়েছেন আম্বাতি রাইডু, শেন ওয়াটসন ও এমএস ধোনি। তিনজনই চারশর বেশি রান করেছেন। রাইডুর রান আসলে পাঁচশর বেশি। আর বল হাতে তাদের সেরা শার্দুল ঠাকুর। দক্ষিণ আফ্রিকান সেনসেশন লুঙ্গি এনগিডিও ছিলেন অসাধারণ। এ ছাড়া যুজবেন্দ্র চাহাল ও রবিন্দ্র জাদেজাও বল হাতে দলকে দিয়েছে দারুণ ভরসা। ফাইনালে যাওয়ার মঞ্চে এদের প্রতিই থাকবে চেন্নাইয়ের দর্শকদের বিশেষ দৃষ্টি।

হায়দরাবাদের বিশেষ দৃষ্টির বেশির ভাগ থাকবে তাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের উপর। ডেভিড ওয়ার্নারের বদলে অধিনায়কত্ব পাওয়া উইলিয়ামসন ব্যাট হাতেও তার শূন্যতা পূরণ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় ছিলো। সব সংশয় দূর করে দিয়েছেন উইলিয়ামসন। লিগ পর্বে সাড়ে ছয়শর বেশি রান করেছেন তিনি। চারশর বেশি রান এসেছে শেখর ধাওয়ানের ব্যাট থেকে।

বল হাতে হায়দরাবাদকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছেন সিদ্ধান্ত কাউল, রশিদ খান ও সাকিব আল হাসান। সিদ্ধান্ত লিগ পর্বে নিয়েছেন ১৭ উইকেট। রশিদ খানের শিকার ১৬টি আর ১৩ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। এই তিন বোলার কোয়ালিফায়ারেও হয়ে উঠতে পারেন হায়দরাবাদের তুরুপের তাস।

ওয়েংখেড়েতে যে দল আজ শেষ হাসি হাসবে, তারা চলে যাবে ফাইনালে। যারা হারবে, তাদেরও সুযোগ থাকবে। কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রাজস্থান রয়্যালসের মধ্যে যারা এলিমিনেটর জিতবে, প্রথম কোয়ালিফায়ারের পরাজিত দল তাদের বিপক্ষে খেলবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার।

অন্য যে কোনো আসরের চেয়ে এবারের আইপিএল ছিলো বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা আজও বজায় থাকুক, আইপিএলের দর্শকরা নিশ্চয় সেটিই চাইছেন। তাদের চাওয়া পূরণ না হওয়ার কিছু অবশ্য দেখা যাচ্ছে না!