দল পর্যালোচনা: বিশ্বকাপে রাশিয়ার দুই চ্যালেঞ্জ
- Details
- by খেলাধুলা ডেস্ক
আসন্ন বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ হওয়ায় বাছাইপর্ব খেলতে হয়নি রাশিয়াকে। প্রীতি ম্যাচ খেলেই নিজেদের প্রস্তুতি সেরেছে রাশানরা। প্রস্তুতিতে কিছুটা যে ঘাটতি রয়েছে সেটা স্বীকার করে নিয়েছে রাশিয়া। তবু ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে বড় কিছুর স্বপ্ন দেখছে তারা।
শুধু মাঠেই নয়, মাঠের বাইরেও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে রাশিয়ার জন্য। কারণ মাঠের বাইরে বাকি ৩১টি দল নিয়েও ভাবতে হচ্ছে তাদের। তাই অন্যদের চেয়ে রাশিয়ার জন্য কাজটা একটু বেশি কঠিন। হওয়ারই কথা- তবে এক আসরের দুই চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত আছে রাশানরা।
আগামী ১৪ জুন পর্দা উঠবে দুনিয়ার কাঁপানো ফুটবল যজ্ঞের। চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত। পাঁচটি মহাদেশের ৩২টি দল অংশ নিচ্ছে তাতে। বিশ্বকাপের সর্বমোট ৬৪ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে রাশিয়ার ভিন্ন ১২টি ভেন্যুতে। যেখান থেকে প্রথম বাঁশি বাজবে সেই মস্কোতেই মঞ্চায়ন হবে শিরোপা লড়াই।
এনিয়ে চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাচ্ছে রাশিয়া। সবশেষ গত বিশ্বকাপে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল দেশটি। তবে এর আগে সোভিয়েত ইউনিয়ন নামে পরিচিত ছিল দলটি। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত এই নামেই বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেছিল রাশানরা। তখন দলটি কম বেশি সফলও ছিল। ১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। এর ছয় বছর আগে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল দলটি।
১৯৯১ সালে দেশ বিভাজনের পর রাশিয়ার অবস্থান দাঁড়ায় এশিয়া ও ইউরোপিয়ান মহাদেশের মধ্যে। যদিও ইউরোপিয়ান প্রতিনিধি হিসেবেই স্বীকৃতি পেয়ে আসছে দলটি। যে দেশটিতে মূল খেলা ছিল হকি, কালের বিবর্তনে সেই দেশটির জনপ্রিয়তা এখন ফুটবলকেন্দ্রিক।
১৯৯২ সালে ফিফার সদস্যপদ লাভ করে ফিফা। তখন থেকেই বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল দেশটি। ২০১০ সালের ২ ডিসেম্বর স্বপ্নপূরণের বার্তা পায় তারা। ভোটাভুটিতে ২০১৮ বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বীকৃতি লাভ করে রাশিয়া। রাশিয়া স্বাগতিক নিশ্চিত হওয়ায় দুই বিশ্বকাপ বিরতি দিয়ে আবারো ইউরোপে ফিরতে যাচ্ছে ফুটবলযজ্ঞ। এই বিশ্বকাপের অফিসিয়াল মাস্কটের নাম রাখা হয়েছে জাবাভিকা।
বিশ্বকাপের মঞ্চে রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য নেই। ১৯৯৪, ২০০২ ও ২০১৪ বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলটি প্রতিবারই বিদায় নিয়েছে গ্রুপপর্ব থেকে। শুধু বিশ্বকাপ নয়, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও ১৯৯৬, ২০০৪ ও ২০১২ সালে প্রথম রাউন্ডে বেজেছিল রাশিয়ার বিদায়ঘণ্টা। তবে আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে তাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য ২০০৮ ইউরো বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে পারাটা। এবার ঘরের মাঠে আরো দূরে চোখ রাশানদের।
তিন সপ্তাহ পর এবারের রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপের পর্দা উঠবে। মস্কোর লুঝিনিকি স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ম্যাচে এশিয়ান দল সৌদি আরবের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক শিবির। ‘এ’ গ্রুপে রাশিয়ার অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মোহাম্মদ সালাহর মিশর এবং দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে। গ্রুপপর্বেই যে রাশানদের অগ্নিপরীক্ষা দিতে হবে সেটা বোঝা যাচ্ছে তাতেই।
ফিফা সদস্য দেশের মর্যাদা পাওয়ার পর নতুন করে শুরু হয়েছিল রাশিয়ার পথচলা। রাশানদের ওই যাত্রাটা এতটাই সুখের ছিল যে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে সর্বোচ্চ তিন নাম্বারে উঠে এসেছিল তারা। কিন্তু সেই স্মৃতিতে ধুলো পড়েছে গত কয়েক বছরে। বর্তমান র্যাঙ্কিং অনুযায়ী রাশিয়ার অবস্থান ৬৬তম। যা র্যাঙ্কিংয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে অবস্থা রাশানদের।
তবু দলটিকে আশা দেখাচ্ছেন অভিজ্ঞ ফুটবলাররা। ঘরের মাঠে স্বপ্নযাত্রার অন্যতম সারথি আলেক্সান্ডার কারজাকভ। রাশিয়ার ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। কারজাকভ গোল করেছেন ৩০টি। এছাড়া রাশিয়ার বিশ্বকাপ দলে আছেন সার্গেই ইগনাশেভিচের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার। রাশিয়ার জার্সিতে ১২০টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ধারণা করা হচ্ছে এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ।
তবে এবারের আসরে স্বাগতিকদের নেতৃত্ব দেবেন গোলপোস্টের অতন্দ্র প্রহরী আইগর আকিনফাইভ। এ ছাড়া জোরান তোসিক, আইগর ডেনিসভের মতো তারকা ফুটবলাররা আশার প্রদীপ হয়ে উঠেছেন। এসব অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের এক সুতোয় গাঁথার প্রয়াসটা চালাচ্ছেন প্রধান কোচ স্তানিস্লাভ চেরচেশব। কয়েক মাস আগে রাশিয়ার দায়িত্ব নিয়ে আশারবানী শুনিয়েছেন তিনি।
অবশ্য বিশ্বকাপ শুরুর আগেই কয়েকটা ঘটনা রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে রাশিয়াকে। প্রান্তসীমায় আসা মৌসুমের ক্লাব ফুটবলের বেশ কয়েকটি ম্যাচে রাশান সমর্থকদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটা অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। শাস্তিও পেয়েছে রাশান ক্লাবগুলো।
গত কয়েক মাস ধরে দেশটির রাজনীতিও হয়ে উঠেছে উত্তাল। রাশিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কটা শীতল হয়ে উঠেছে যুক্তরাজ্যের। গুপ্তচর হত্যাচেষ্টার ইস্যুটিকে সামনে এনে রাশিয়া বিশ্বকাপ বয়কটেরও হুমকি দিয়ে আসছে ইংল্যান্ড, জাপানোর মতো দলগুলো। যদিও আশারবানী শুনিয়েছে রাশিয়া। আয়োজকর্তারা জানিয়েছেন রাজনৈতিক অস্থিরতার কোনো প্রভাব পড়বে না বিশ্বকাপে।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.