আইপিএল থেকে চ্যাম্পিয়নদের বিদায়

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) এবারের আসর থেকে সবার আগে বিদায় নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। রোববার লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে তাদেরকে সামনে পায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। এই ম্যাচটি জিততে পারলে আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের শেষ চারের আশাটা টিকে থাকতো। কিন্তু পারলো না তারা। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচটা মুম্বাইয়ের জন্য এবারের আইপিএলেরই শেষ ম্যাচ হয়ে থাকলো। দিল্লির কাছে হেরে আইপিএল থেকে বিদায় নিলো তারা।

টিকে থাকার চ্যালেঞ্জের ম্যাচে মুম্বাইয়ের সামনে ১৭৫ রানের লক্ষ্য ছিলো। কিন্তু রোহিত শর্মার দল ১৬৩ হারিয়ে ফেলে সব উইকেট। তিন বল বাকি থাকতে ১১ রানে হেরে যায় মোস্তাফিজদের দল। এরই মাধ্যমে তাদের আইপিএল শেষ হয়ে যায়।

সেরা পারফর্ম্যান্স

দিল্লি বাদ পড়েছিলো আগেই। এবার বিদায় নিলো মুম্বাই। পয়েন্ট টেবিলের নিচের দিকের এই দুই দলের ম্যাচে সেরা পারফর্ম্যান্স ছিলো দিল্লির রিশাব পান্টের। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং কর দিল্লির হয়ে ৪৪ বলে ৬৪ রান করেন তিনি। যা দিল্লির তো বটেই ম্যাচেরই সেরা ইনিংস হয়ে থাকলো।

প্রথম ইনিংস

এবারের আইপিএলে নিজেদের শেষ ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দিল্লি ডেয়ারডেভিলস। ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৮ রানের মধ্যে দুটি উইকেট হারিয়ে ফেলে ধাক্কা খায় তারা। সেই ধাক্কা থেকে দলকে শক্ত করে দাঁড়াতে সহায়তা করেন আইপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করা রিশাব পান্ট। ৪৪ বলে ৬৪ রান করেন তিনি। তাকে দারুণ সহায়তা করেন বিজয় শঙ্কর। তিনি ৩০ বলে করেন ৪৩ রান। এ ছাড়া শুরুর দিকে ১৮ বলে ২২ রান করে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

বেশ কয়েক ম্যাচ বসে থাকার পর এই ম্যাচে একাদশে ফিরেন বাংলাদেশের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু হতাশ করেন এই বাঁহাতি। চার ওভারে ৩৪ রান খরচ করলেও কোনো উইকেট পাননি তিনি। হার্দিক পান্ডিয়া ও বেন কাটিংও ৩০-এর বেশি রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন। বোলারদের সাদামাটা দিনে মুম্বাইয়ের সামনে দিল্লি ১৭৫ রানের পাহাড় দাঁড় করায়।

কেমন গেলো দুই দলের আইপিএল

চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও দিল্লির কাছে টানা তিন হার দিয়ে এবারের আইপিএল শুরু করে মুম্বাই। শুরুর এই ধাক্কা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি আইপিএলের ইতিহাসের অন্যতম সের এই দল। চতুর্থ ম্যাচে গিয়ে ব্যাঙ্গালুরুর বিপক্ষে জিতে মুম্বাই। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে আবার হারে তারা। মুম্বাইয়ের প্লে অফ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তখনই।

এর পরের দুই ম্যাচে জয় ও হারের পর টানা তিন ম্যাচ জিতে শেষ চারের আশাটা জাগিয়ে রাখে তারা। কিন্তু রাজস্থানের বিপক্ষে নিজেদের ১২তম ম্যাচটা হেরে খাদের কিনারে চলে যায় তারা। এরপর কিংস এলিভেন পাঞ্জাবের বিপক্ষে জিতলেও শেষ ম্যাচে এসে আবার হারে রোহিত শর্মার দল। যা নিশ্চিত করে দেয় তাদের বিদায়। সব মিলিয়ে ১৪ ম্যাচের আটটিই হারলো মুম্বাই।

দিল্লি ডেয়ারডেভিলস আইপিএল শুরু করে ঘরের ছেলে গৌতম গম্ভিরকে অধিনায়ক বানিয়ে। কলকাতা নাইট রাইডার্সকে দুটি আইপিএল জেতানো গম্ভিরের কাঁধে ভর করে নতুন কিছু করার স্বপ্ন দেখছিলো দিল্লি। কিন্তু তাদের স্বপ্ন ‘প্রায়’ সমাধিস্থ প্রথম সাত ম্যাচের পাঁচটি হারের পর। দলের এমন ব্যর্থতার দায় কাঁধে নিয়ে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন গম্ভির। দিল্লির নেতৃত্বের ভার উঠে শ্রেয়াস আয়ারের কাঁধে। এই তরুণ চেষ্টাও করেছেন ভালোই। কিন্তু দিল্লির আইপিএল শেষ হয়ে যায় সবার আগে।

নিজেদের প্রথম ১২ ম্যাচের নয়টিই হেরে যায় তারা। যা তাদের শেষ চারে যাওয়া অসম্ভব করে তুলে। চেন্নাই ও মুম্বাইয়ের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচ জেতাও তাই দিল্লির কোনো কাজে লাগলো না। পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে পড়ে থেকেই শেষ হলো তাদের আইপিএল।