‘আমি তিন ফরম্যাটের জন্যই প্রস্তুত’

তার চেহারা থেকে এখনো কৈশরের ছাপ মুছে যায়নি। যাওয়ার কথাও অবশ্য নয়। কারণ বয়সটা যে এখনো বিশের ঘরে যায়নি। সে জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুদিন। তার ২০তম জন্মদিন আসছে এ মাসের ২৫ তারিখে। বয়স খুব বেশি না হলেও ক্রিকেটার হিসেবে তিনি এতোটাই পরিণত হয়ে উঠেছেন যে, আমি তিন ফরম্যাটের জন্যই প্রস্তুত— এমন কথা বলার সাহসও পেয়ে যাচ্ছেন!

বলা হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর কথা। দুই বছর আগেই অনূর্ধ্ব-১৯ দলে থাকা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে এখণ মনে করা হচ্ছে বাংলাদেশ দলের ভবিষ্যত হিসেবে। কেনো তাকে নিয়ে এতো বড় স্বপ্ন দেখা হচ্ছে, শান্ত তা প্রমাণ করেছেন গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেই।

ঢাকা লিগে শান্ত খেলেছেন আবাহনীর হয়ে। আসরের শিরোপা জিতেছে তার দলই। দলের এই সাফল্যে শান্ত ছিলেন সবচেয়ে উজ্জ্বল। ১৬ ম্যাচের চার সেঞ্চুরি ও দুই হাফ সেঞ্চুরিতে করেছেন ৭৪৯ রান। আসরে তার চেয়ে বেশি রান নেই আর কারো! বয়সের তুলনায় তিনি যে হয়ে উঠেছেন অনেক বেশি পরিণত, এই দাবির সত্যতা প্রমাণে কি আর কিছু দরকার?

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সামনে রেখে দুদিন আগে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রাথমিক দলের অনুশীলন পর্ব। এই অনুশীলনে আছেন নাজমুল হোসেনও। মঙ্গলবার অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। এ সময় তাকে জাতীয় দলের জন্য তিনি প্রস্তুত কিনা, এমন প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে দারুণ আত্মবিশ্বাসী শোনালো এই তরুণের কণ্ঠ।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই বিশ্বাস করি যে, আমি তিন ফরম্যাটে খেলার জন্যই প্রস্তুত। যখন অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে ছিলাম, তখন আমার স্ট্রাইক রেট অতো ভালো ছিলো না। কিন্তু ধীরে ধীরে আমি এই জায়গায় উন্নতি করতে চেয়েছি। আশা করি কিছুটা সফলও হয়েছি। প্রিমিয়ার লিগে আমার স্ট্রাইক রেট খুব ভালো ছিলো। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করছি। যদি সুযোগ পাই, ভালো কিছু করতে পারবো বলেই বিশ্বাস করি।’

স্ট্রাইক রেট নিয়ে যে বিশেষভাবে কাজ করেছেন, তার প্রমাণ পাওয়া যাবে গত প্রিমিয়ার লিগে তার ব্যাটিংয়ের দিকে তাকালে। ১৬ ম্যাচে ৭৪৯ রান করার পথে ৯৭.৫২ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন শান্ত। গত লিগে ৬০০-এর বেশি রান করেছেন মোট নয়জন ব্যাটসম্যান। এদের মধ্যে শান্তর স্ট্রাইক রেট ই সবচেয়ে বেশি। তিনি ছাড়া ৯০-এর ঘরে স্ট্রাইক রেট আর কারো নেই।

সীমিত ওভারের তুলনায় দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে শান্ত এখনো কিছুটা অনুজ্জ্বল। গত বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের (বিসিএল) ছয় ম্যাচের ১১ ইনিংসে তিনি করেছেন ৩৯০ রান। কোনো সেঞ্চুরি না থাকলেও করেছেন দুটি হাফ সেঞ্চুরি। স্ট্রাইক রেট ছিলো ৫৯.৯০।
তিন ফরম্যাটের জন্য প্রস্তুত বলে দাবি করা নাজমুলের অবশ্য টেস্ট খেলা হয়ে গেছে আগেই।

২০১৭ সালের নিউজিল্যান্ড সফররের সময় বাংলাদেশ দলে হানা ইনজুরির বিষাদী বাতাস। যে বাতাসে কাত হয়ে পড়েছন বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান। ফলে এক রকম নিরুপায় হয়ে শান্তকে নামিয়ে দেন সে সময়ের কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহে।

শান্ত বললেন ওই ম্যাচটা তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে, ‘একদম হঠাৎ করেই টেস্টটা খেলে ফেলেছি। ওই ম্যাচ থেকে শিখেছি টেস্টে কিভাবে খেলতে হয়। পরে সেভাবেই চিন্তা করেছি এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে তা মাথায় রেখে ব্যাটিং করেছি।’