ইয়াবা কেলেঙ্কারি, এসআইসহ ৪ পুলিশ প্রত্যাহার

চট্টগ্রামে আটকের পর আসামিকে ছেড়ে দিয়ে ইয়াবা আত্মসাত চেষ্টার ঘটনায় সীতাকুণ্ডে হাইওয়ে পুলিশের এসআইসহ চার পুলিশকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন-হাইওয়ে পুলিশের বার আউলিয়া থানার এসআই আদম আলী, কনস্টেবল মামুন, ইমাম হোসেন ও মোস্তফা। হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিন দিন ধরে তদন্ত শেষে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তাদের হাইওয়ে থেকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ৭ মে এসআই মহিউদ্দিনকে প্রত্যাহার করে কুমিল্লা হাইওয়েতে নেয়া হয়।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মে বিকালে বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের এসআই মো. মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের পুলিশ দল মহাসড়কে দায়িত্বরত অবস্থায় ২১ হাজার ৮০০ পিস ইয়াবাসহ ( যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৬৬ লাখ টাকা) মো. মোস্তাকিম (৩৬) নামে এক যুবককে আটক করে।

আটক মোস্তাকিম গাজীপুর জেলা সদরের বারান্ডা গ্রামের তসলিম উদ্দিন খোন্দকারের পুত্র। কিন্তু অভিযোগ ওঠে এসআই মহিউদ্দিন ইয়াবা পাচারকারীকে থানায় না এনে ছেড়ে দেন এবং জব্দকৃত ইয়াবা আত্মসাৎ করেন।

অপরদিকে মোস্তাকিমের ইয়াবা পাচারের তথ্যটি পূর্ব থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম পর্যবেক্ষণ করছিল।

হাইওয়ে পুলিশের কাছ থেকে ছাড়া পেলেও বাসটি ঢাকায় পৌঁছলে গোয়েন্দা পুলিশের টিম বাসটিতে তল্লাশি চালায়। কোনো ইয়াবা না পেয়ে মোস্তাকিমকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি হাইওয়ে পুলিশ ইয়াবা আটক করে তাকে ছেড়ে দিয়েছে বলে জানান।

এ তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি তদন্তের জন্য কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানায়।

একই দিন রাতে পাচারকারী মোস্তাকিমকে নিয়ে বার আউলিয়া হাইওয়ে থানায় আসেন কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি আতিকুল ইসলাম, হাইওয়ে এসপি কুমিল্লা নজরুল ইসলামসহ পুলিশ কর্মকতারা। মুস্তাকিমকে বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের মুখোমুখি করলে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।

এরপর তাৎক্ষণিকভাবে এসআই মহিউদ্দিনকে প্রত্যাহার করে কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

কিন্তু ইয়াবা বাণিজ্যের এই তথ্য হাইওয়ে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে বলে গোপনে ব্যবস্থা নিলেও এ তথ্য প্রকাশ্যে স্বীকার করতে চাননি সীতাকুণ্ড হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা।

ওই দিন হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম এসআই মহিউদ্দিনকে সাময়িকভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, আসলে এ ধরনের জিনিসপত্র উদ্ধার করলে কিছু নিয়ম মানতে হয়। এসআই মহিউদ্দিন সেসব নিয়মকানুন না মানায় আমরা তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করেছি।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি আহসান হাবিব বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি দায়িত্বে ছিলাম না, ছুটিতে ছিলাম। পরে কাজে যোগ দিয়ে ঘটনা জেনেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তাদের এখান থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। ইউএনবি।