ছাত্রলীগের সম্মেলন: শেষ মুহূর্তে জোর তদবির

সব জল্পনা-কল্পনা শেষে আগামী ১১ থেকে ১২ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। এই ২৯তম সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনটি।

২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সাইফুর রহমান সোহাগ ও এসএম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের দুই বছর মেয়াদী বর্তমান কমিটি গঠিত হয়েছিল। গত বছরের ২৬ জুলাই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটের সম্মেলন হয়ে গেছে। তবে সেখান থেকে কোনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি।

গত কয়েক বছর ধরে কাউন্সিলরদের সরাসরি ভোটে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছে। তবে এবছর তাদের বাছাই করে নেয়া হবে।

অভিযোগ রয়েছে, কাউন্সিলরদের ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হলে প্রতিবারই ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের (২০০২ থেকে ২০০৬) নেতৃত্বে সংগঠনের সাবেক নেতাদের একটি চক্র গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেন। এমন পরিস্থিতিতে গত সোমবার নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, এ বছর নির্বাচন নয়, যোগ্যতা, পারিবারিক ইতিহাস ও প্রতিভা বিবেচনায় নিয়ে ছাত্রলীগের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব বাছাই করা হবে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন ইউএনবিকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের পরবর্তী মেয়াদের নেতা বাছাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। কারণ তিনি এই ছাত্র সংগঠনের অভিভাবক। তবে নির্বাচন এবং বাছাই নিয়ে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখব।’

বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী যোগ্য এবং প্রতিভাবান প্রার্থীরা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবেন বলেও জানান তিনি।

ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু ইউএনবিকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মেলনে যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতা বাছাই করবেন। যারা কর্মীবান্ধব, পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারী ও নির্ভরযোগ্য, তাদের তিনি নেতৃত্ব দেবেন।’

‘নেতা বাছাইয়ে প্রতিষ্ঠান ও অঞ্চল কোনো বিষয় হবে না। যে কোনো প্রতিষ্ঠানের যে কেউ যদি যোগ্যতা সম্পন্ন হন তাহলে তিনি সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন,’ যোগ করেন তিনি।

এদিকে, সম্মেলনের শেষ মুহূর্তে এসে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদপ্রত্যাশীরা আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ে এবং ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের কাছে জোর তদবির শুরু করেছেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার দৌড়ে যারা এগিয়ে রয়েছেন তাদের মধ্যে আছেন- কেন্দ্রের সহসভাপতি আদিত্য নন্দী, আরেফিন সিদ্দিক সুজন ও চৈতালী হালদার চৈতী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈকতুজ্জামান সৈকত ও আশিকুল পাঠান সেতু, আইন সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়, ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদ, পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম।

এছাড়া আছেন দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক বরকত হোসেন হাওলাদার, প্রচার সম্পাদক সাইফুদ্দিন বাবু, শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুল ইসলাম জুয়েল, পাঠাগার সম্পাদক ইলিয়াস সানি, উপ-আইন সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, উপ-পরিবেশ সম্পাদক সুরঞ্জন ঘোষ, উপ-স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ আরাফাত, উপ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক রাসেল হোসেন, সহসম্পাদক এনামুল হক প্রিন্স, খাদিমুল বাশার জয় এবং ঢাবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স।

তবে বয়সের সীমা যদি বাড়িয়ে ২৭ থেকে ২৯ বছর এবং জানুয়ারির বিকল্প হিসেবে জুলাই থেকে গণনা করা হয় তাহলে ঢাবি ইউনিটের সভাপতি আবিদ আল হাসান, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মেহেদী হাসান রনি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েম খানও আলোচনায় এগিয়ে আছেন।

ইমরান হোসেন, ইউএনবি।