স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল: অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা চান প্রধানমন্ত্রী
- Details
- by নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠার জন্য বাংলাদেশের মানব সম্পদের আরো দক্ষতা প্রয়োজন, আর এজন্য অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতাও দরকার বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের পরবর্তী স্তরে যাচ্ছে, তখন আমাদের মানব সম্পদের আরো দক্ষতা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ এবং কারিগরি শিক্ষায় সহায়তা করতে পারে অস্ট্রেলিয়া।’
অস্ট্রেলিয়া সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার সকালে সিডনির প্যারাম্যাটায় ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির সাউথ ক্যাম্পাস পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, সামুদ্রিক অর্থনীতির ব্যাপক উন্নয়নে বাংলাদেশের পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়ার কাছে সক্ষমতা বৃদ্ধি, উদ্ভাবনী অর্থায়ন, কারিগরি প্রযুক্তি বিনিময়, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের দক্ষতা বাড়াতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশেনোনগ্রাফি বিভাগের প্রশিক্ষণে ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় সমুদ্র থেকে মৎস্য সম্পদ আহরণ এবং প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষক বিনিময়ে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে সেরা জ্ঞান আহরণের সুযোগ নিতে সেদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া একটি প্রিয় গন্তব্যস্থল। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের যারা এখানে আছেন তাদের অস্ট্রেলিয়া থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমরা সমুদ্রসীমা সমস্যার সমাধান করে ফেলেছি। সমুদ্রসীমার যে সম্পদ আছে সেই সম্পদকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এই সম্পদ অনেক অবদান রাখতে পারে। এখান থেকে শুধু ডিগ্রি নিয়ে যাওয়া না, অনেক কিছু শিখতে হবে।’
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়টিতে স্থাপিত বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাও জানান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির সাউথ ক্যাম্পাসে ইন্সটিটিউট অব ওসন গভার্নেন্সের সামনে ২০১৭ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধুর এই আবক্ষ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সমুদ্রসীমা নির্ধারণে ১৯৭৪ সালে সংসদে আইন করায় ইন্সটিটিউট অব ওসন গভার্নেন্সের সামনে বাংলাদেশের জাতির জনকের আবক্ষ ভাস্কর্যটি স্থাপন সঠিক বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতির জনক আমাদের সংসদে ১৯৭৪ সালে এই আইনটি করেন। আর সমুদ্রসীমা বিরোধ নিয়ে ১৯৮২ সালে জাতিসংঘ আইন করে।’
নিজের সময়ে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দুই প্রতিবেশীর সঙ্গেই সমাধান করি।’
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমস্যা সমাধানের অনেকে ক্ষেত্রই তিক্ততা সৃষ্টি হওয়ার কথাও বলেন তিনি।
১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে উষ্ণ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার পর বিশ্বনেতাদের মধ্যে যারা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা এডওয়ার্ড গফ হুইটলামকেও স্মরণ করেন তিনি।
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক উইলিয়াম এ এস অডারল্যান্ডের বীরোচিত ভূমিকার কথাও স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।
ভিনদেশি এই মুক্তিযোদ্ধাকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাব দিয়েছে বাংলাদেশ; ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয় তাকে।
বাংলাদেশর তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য আমরা অস্ট্রেলিয়া আর ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা নিচ্ছি।’
ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ওয়েস্টার্ন সিডনি ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক বার্নি গ্লোভার।
এডওয়ার্ড গফের বাংলাদেশ সফরের বিভিন্ন আলোকচিত্রও প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন তিনি।
এদিকে ক্যাম্পাসে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠনের ব্যানার নিয়ে স্লোগান দেন। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.