এশিয়ার সর্ববৃহৎ আমগাছ, ফলের মূল্য দেড় লাখ টাকা!

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারীতে অবস্থিত এশিয়ার সর্ববৃহৎ এই আম গাছ। স্থানীয়রা জানান, আম গাছটির বয়স প্রায় দুই শতাধিক বছর। চলতি বছর প্রকাণ্ড এই আম গাছটির ফল বিক্রি হয়েছে দেড় লাখ টাকায়। গাছটির মালিক সাইদুর রহমান ও নূর ইসলাম গাছের ফল পাকার আগেই বিক্রি করে দিয়েছেন।

সোলেমান আলী নামের এক ব্যবসায়ী আম গাছটি লিজ নিয়েছেন। তিনি বলেন, গাছটি তিন বছরের জন্য দেড় লাখ টাকায় লিজ নিয়েছি। ফল ধরার মৌসুমে গাছটি আমাকে দেখাশোনা করতে হয়। চলতি বছর গাছটিতে ভালোই আম ধরেছে। এর মধ্যে বৈশাখী ঝড়ে বেশকিছু আম ঝরে পড়েছে। তারপরও আমি আশাবাদী প্রায় ৮০ মণের মতো আম পাবো।’

গাছটির মালিক নূর ইসলাম জানান, আমগুলো সূর্যাপুরী জাতের। যা খুবই সুস্বাদু ও মিষ্টি। কয়েক বছর আগেও ১শ মণের বেশি আম পাওয়া যেত। বর্তমানে ৭০ থেকে ৮০ মণের মতো আম পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক ব্যবসায়ী অগ্রিম টাকা দিয়ে আম বুক করতে আগ্রহ দেখায়। তবে আগামী তিন বছরের জন্য গাছটির সব আম বিক্রি হয়ে গেছে।

গাছটি সম্পর্কে নূর ইসলাম আরো বলেন, ‘আম ছাড়াও গাছটি দেখতে প্রতি মৌসুমেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মানুষ এখানে ছুটে আসেন। দুই শতাধিক বছর বয়সী এই গাছটিকে ঘিরে আগামীতে পিকনিক স্পট গড়ে তোলার ইচ্ছে রয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা হলে পিকনিক স্পট হিসেবে গড়ে তোলা আরো সহজ হবে।’

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শফিয়ার রহমান বলেন, ‘গাছটি যেমন প্রকাণ্ড তেমনি এর জাতও ব্যতিক্রমী। বাজারের অন্যান্য গাছের আমের তুলনায় এই গাছের আমের চাহিদা অনেক বেশি। আমের পাশাপাশি গাছটির চারারও ব্যাপক চাহিদা। গাছটির জাত সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে প্রতি বছর অসংখ্য চারা করা হয়।’

প্রকাণ্ড এ আমগাছটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের একদল গবেষক পরিদর্শন করেছিলেন। তারা গাছটিকে বিরল বলে আখ্যা দেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী গাছটি পরিদর্শন করেন। তিনি গাছটিকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার আশ্বাস দেন।

বালিয়াডাঙ্গীতে সূর্যাপুরী জাতের এই আমগাছটি প্রায় ২ বিঘা জমিজুড়ে অবস্থান নিয়েছে। এর ডালপালাগুলো বটগাছের মতো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। গাছটির আঁকাবাঁকা ডালপালা দেখে অনেকেই এটিকে বটগাছ ভাবেন।