গয়েশ্বর: আ’লীগের প্রার্থীকে শক্তিশালী মনে করি না

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে কেন্দ্র গঠিত ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে আমি শক্তিশালী মনে করি না। কারণ ১০ বছরের সরকার সম্পর্কে পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ অবগত।’

তিনি বলেন, এই সরকারের কর্মের গায়ে যে দোষ; তা তো নৌকার উপরেই বর্তায়। সুতরাং নৌকার মাঝি যতোই ভালো হোক না কেন, নৌকার তলা যেখানে ঠিক নাই, সে নৌকা পার করা বড় কষ্টের।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য।

গয়েশ্বর বলেন, আমি শতভাগ নিশ্চিত খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ফলাফলে যে আমরা জয়ী হবো সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নাই। কিন্তু নির্বাচনটা কেমন হবে? সাংবাদিকদের মাধ্যমে যে খবর পাই; তাতে এই বিজয়কে ছিনিয়ে নেয়া খুব কঠিন কাজ না। তাতে এই নির্বাচনটা অনেকটাই তারাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। মাহবুব-উল আলমদের মতো লোকদের যে ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাবটা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ। বহুদলীয় গণতন্ত্রে এটা হয় না; একদলীয় গণতন্ত্রে হয়। তাদের ভাষা কিন্তু সব সময় একদলীয়।

তিনি বলেন, ‘মাহবুব-উল আলম হানিফ যদি বলেন যতদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্থ আছেন ততদিন প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই থাকবেন, তাহলে আমি বলবো প্রধানমন্ত্রী সুস্থ নাই। যদি তিনি বলতেন যতদিন তিনি অসুস্থ আছেন, ততদিন ক্ষমতায় থাকবেন; তাহলে কথাটার অর্থ থাকে। কারণ রাজনীতিতে অসুস্থ না হলে এধরনের বক্তব্য আসে না।’

বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ক্ষমতায় থাকা- না থাকার বিষয়টা যেহেতু জনগণের ইচ্ছার একটা বিষয় আছে, সেখানে এই ধরনের দাম্ভিকতা থাকাটা ভালো না। আর যতোদিন জীবিত আছেন ততদিন ক্ষমতায় থাকবেন এটা যদি হয় তাহলে বলবো, এই শব্দটা কিন্তু গণতান্ত্রিক শব্দের সাথে সাংঘর্ষিক। কথাটা যদি হতো জনগণ যতদিন চায় ততদিন ক্ষমতায় থাকবেন, তাহলে ঠিক ছিল।

গয়েশ্বর বলেন, দেশটার মালিক যদি জনগণ হয়, তাহলে আমার ক্ষমতায় থাকার ইচ্ছা যদি জনগণের ইচ্ছার বাইরে হয়; তাহলে আমি বলবো তারা সুস্থ নয়। তারা রাজনৈতিকভাবে অসুস্থ। অসুস্থ ভাবনাকে সফল করে এবং অসুস্থ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী ও চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করতে পারে। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে তাদের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনগণ কি করবে। আর ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য সম্পর্কে মন্তব্য করতেও আমার রুচিতে বাঁধে।

তিনি বলেন, ব্যাপক জনগোষ্ঠীর কাছে যেমন ভোট চাচ্ছি, তেমনি নেত্রীর মুক্তি আন্দোলনের বার্তাও ভোটারদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি। খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে স্থানীয় ইস্যুর থেকেও জাতীয় ইস্যু স্থান পাবে। সে কারণেই বিএনপির প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে খুলনাবাসী ভোট দেবেন।

প্রশ্নোত্তর বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা নির্বাচনী মাঠে থাকতে চেষ্টা করবো। তারপরে মাঠে থাকতে চাইলেও অনেক সময় থাকা যায় না, সরকার থাকতে দেয় না।’

কেসিসি নির্বাচন পরিচালনায় খুলনা ২০ দলীয় জোটের সমন্বয়ক জেলা বিএনপি’র সভাপতি এসএম শফিকুল আলম মনার সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবীব, রবিউল ইসলাম খান রবি, মো. মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, মনিরুজ্জামান মন্টু, বিজেপি নেতা সিরাজুল ইসলাম সেন্টু, বিএনপি নেতা আশরাফুল আলম নান্নু ও শফিকুল আলম তুহিন প্রমুখ।