কমছে মধুর পরিমাণ, পুড়ে ধ্বংস হচ্ছে মৌমাছি

বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনে শুরু হয়েছে মধু আহরণের মৌসুম। তবে সনাতন পদ্ধতিতে মধু আহরণ করায় মৌমাছি আগুনে পুড়ে ধ্বংস হচ্ছে এবং মধুর পরিমাণ কমে যাচ্ছে। প্রতিবছর পহেলা এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সুন্দরবন থেকে মধু আহরন কার্যক্রম। এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত বনে মধু আহরণ চলবে। প্রায় আড়াই মাসব্যাপী মৌয়ালরা সুন্দরবনে মধু আহরণ করবে।

বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, মৌয়ালরা বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট (বিএলসি) এবং পাস পারমিট নিয়ে বনে প্রবেশ করছে।

সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ থেকে জানা গেছে, এ বছর পশ্চিম বন বিভাগে মধু আহরণ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭শ’ ৫০ কুইন্টাল ও মোম ৪৪০ কুইন্টাল। এর মধ্যে খুলনা রেঞ্জে মধু ৭শ’ কুইন্টাল ও মোম ১৭৫ কুইন্টাল এবং সাতক্ষীরা রেঞ্জে এক হাজার ৫০ কুইন্টাল মধু ও মোম ২৬৫ কুইন্টাল আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা  হয়েছে। প্রতি কুইন্টাল মধু আহরণের জন্য ৭৫০ টাকা এবং মোমের জন্য এক হাজার টাকা রাজস্ব দিতে হবে বন বিভাগকে।

সুন্দরবনে প্রবেশের জন্য মোয়ালদের মাথাপিছু প্রতিদিন ৮ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবন থেকে সুন্দরী, খলিসা, গরাণ, গেওয়া, বাইন ও কেওড়া গাছের মধু আহরণ করা হয়।

মৌয়ালদের কাছ থেকে জানা গেছে, তারা সনাতন পদ্ধতিতে মধু আহরণ করেন। মৌচাক কাঁটার সময় মশাল জ্বালিয়ে ধোঁয়া তৈরি করে মৌচাক থেকে মৌমাছি তাড়ানো হয়। তাড়াহুড়োর কারণে অনেকসময় মৌচাক আগুনে পুড়িয়ে ফেলেন। এতে অনেক মৌমাছি মারা যায়।  আবার অনেক সময় না বুঝে পুরো মৌচাক কেঁটে ফেলেন মৌয়ালরা। এসব কারণে সুরন্দবনের মধু সম্পদ হুমকির মুখে পড়েছে।

এ ব্যাপারে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশির উল আল মামুন জানান, মৌয়ালরা মধু আহরণের সময় যাতে মৌমাছি না পুড়ায়, পুরো চাক না কেঁটে ফেলেন এবং ব্যবহৃত মশাল যেন বনের মধ্যে ফেলে না দেয় সেজন্য মৌয়ালদের পরামর্শ ও পাশাপাশি তদারকি জোরদার করা হয়েছে।

এছাড়া বাঘের হামলা এড়াতে সতর্ক ও দলবদ্ধভাবে মৌয়ালদের চলাফেরা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। চলতি মধু আহরণ মৌসুমে মৌয়ালদের নির্বিঘ্নে মধু আহরণে বনদস্যুদের তৎপরতা রোধে টহল জোরদার করা হয়েছে। ইউএনবি।