আর্সেনালকে জিততে দিলেন না গ্রিজম্যান

ঘরের মাঠ এমিরেটস স্টেডিয়ামে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে হারানোর সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করল আর্সেনাল। শুরুতে দশ জনের দলে পরিণত হওয়া অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে এগিয়ে থেকেও জিততে পারেনি স্বাগতিকরা। বৃহস্পতিবার উয়েফা ইউরোপা লিগ সেমিফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনালকে ১-১ গোলে রুখে দিয়েছে স্প্যানিশ ক্লাবটি।

এই ড্রয়ের পর ভীষণ খুশি হয়েছে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। কারণ আর্সেনালের মাঠ থেকে প্রাপ্ত অ্যাওয়ে গোলটা ফিরতি লেগে এগিয়ে রাখবে তাদের। আগামী বৃহস্পতিবার অ্যাটলেটিকোর মাঠ ওয়ান্ডা মেট্রোপলিটানোতে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।

তবে আর্সেনাল ঘরের মাঠে জয়বঞ্চিত হলেও প্রত্যাশিত ফল নিয়েই মাঠ ছেড়েছে অলিম্পিক মার্শেই। সেমিফাইনালের প্রথম লেগের অন্য ম্যাচে রেড বুল সালবার্জকে ২-০ গোলে হারিয়েছে ফ্রেঞ্চ ক্লাবটি। এই জয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকল মার্শেই।

তবে পাদ প্রদীপে ছিল এমিরেটসের মহারণটাই। দ্বৈরথটা ধ্রুপদী একটা লড়াই-ই উপহার দিয়েছে। ম্যাচের শুরুতে দশ জনের দলে রূপান্তর হওয়ার পরও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ দেখিয়েছে তাদের অদম্য মানসিকতা। আর্সেনালের সঙ্গে শেষ বাঁশির আগ পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে লড়েছে ডিয়েগো সিমনের দল।

শুরুতেই অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে বিপদে ফেলে দেন সিমে ভরসাল্জকো। দশ মিনিটের মধ্যে দেখলেন পরপর দুটি হলুদ কার্ড। এই মৌসুমে ২৫ ম্যাচের মধ্যে এনিয়ে সাতবার লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হলো ক্রোট ডিফেন্ডারকে।

দশ জনের অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের ওপর হিংস্র বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে আর্সেনাল। কিন্তু গোলের জন্য উত্তর লন্ডনের ক্লাবটিকে অপেক্ষা করতে হয় ৬১ মিনিট পর্যন্ত। জ্যাক উইলশারের দুর্দান্ত ক্রস থেকে মাথা ছুঁয়ে স্বাগতিকদের স্বস্তির গোলটি এনে দেন অ্যালেক্সান্দ্রে লাকাজেত্তে। কিন্তু লিডটা ধরে রাখতে পারেনি আর্সেনাল।

৮২ মিনিটে প্রায় নিশ্চিত হার থেকে দলকে রক্ষা করেন অ্যান্তনিও গ্রিজম্যান। স্বাগতিক সমর্থকদের স্তব্ধ করে ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার করে বসেন সমতাসূচক গোল (১-১)। তাতে শুধু হারই ঠেকায়নি অ্যাটলেটিকো, পেয়েছে মহামূল্যবান অ্যাওয়ে গোল। এই মৌসুমে ক্লাবের জার্সিতে এনিয়ে ২০তম গোল করলেন গ্রিজম্যান।

গ্রিজম্যানের গোলের মুহূর্তটা বাদ দিলে এদিন পুরো ম্যাচে অ্যাটলেটিকোকে প্রায় কোণঠাসা রেখেছিল আর্সেনাল। এদিন স্বাগতিকরা কতটা প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে সেটা বলে দিচ্ছে ম্যাচের পরিসংখ্যান। গতকাল ৭৬ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছিল আর্সেন ওয়েঙ্গারের দল।

অ্যাটলেটিকোর বিপদসীমায় ২৮টি আক্রমণ চালিয়েছে আর্সেনাল! বিপরীতে অতিথিদের আক্রমণ সংখ্যা মাত্র ছয়টি। এমন ম্যাচের প্রথমার্ধে আবার ডাগ আউট ছেড়ে যেতে হয় অ্যাটলেটিকো কোচ ডিয়েগো সিমনকে। পরে দর্শক সারিতে দাঁড়িয়ে এবং বসেই আর্জেন্টাইন কোচ দেখেছেন শিষ্যদের দুর্দান্ত লড়াইটা।

স্প্যানিশ ক্লাবটিকে হারানোর জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর পেতে পারতো না আর্সেনাল। সুযোগটা হাতছাড়া হওয়ায় বেশ হতাশ হয়েছেন স্বাগতিক কোচ ওয়েঙ্গার। ম্যাচ শেষে বিটি স্পোর্টকে ফ্রেঞ্চ কোচ বলেছেন, ‘আমাদের জন্য এই ফলটা খুবই হতাশার। অবশ্যই আমরা বড় একটা সুযোগ হাতছাড়া করেছি। আমরা আজই (বৃহস্পতিবার) ফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করতে পারতাম।’

আর্সেনালকে মূলত জিততে দেননি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ গোলরক্ষক ইয়ান অবলাক। এদিন গোলপোস্টের নিচে অতিমানব হয়ে উঠেছিলেন স্লোভেনিয়ান গোলরক্ষক। না হলে ম্যাচের ফলটা অন্যরকম হতে পারতো। আর্সেনাল কোচ ওয়েঙ্গার যথার্থই বললেন, ‘তাদের গোলরক্ষক বেশ কয়েকটা গোল বাঁচিয়েছে। তবে এই হতাশা ভুলে আমাদের পরের ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’