রাতে মহারণে নামছে রিয়াল-বায়ার্ন

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের গত আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে সাক্ষাৎ হয়েছিল তাদের। এবার এক সিঁড়ি ‌উপরে দেখা হচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদ ও বায়ার্ন মিউনিখের। আজ অ্যালিয়েঞ্জ এরিনায় সেমিফাইনালের প্রথম লেগে মুখোমুখি হচ্ছে ক্লাব ফুটবলের দুই জায়ান্ট।

গত মৌসুমে দুই লেগেই জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৩ গোলে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়েছিল বায়ার্ন মিউনিখ। স্বাভাবিকভাবেই এবারের সেমিফাইনাল পর্বটা বাভারিয়ানদের জন্য প্রতিশোধের উপলক্ষ্য হয়ে এসেছে।

এ জন্য আজ তাদের কাছে সবচেয়ে বড় প্রেরণার নাম পরিচিত দর্শকদের সামনে খেলতে পারাটা। সাবেক ও বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের লড়াইটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে সনি টেন টু।

শুধু গত মৌসুমই নয়, চার বছর আগেও সেমিফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে ছিটকে দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। দুই আসরে দুবার একই দলের হাত ধরে বিদায়। প্রতিশোধ শব্দটা তাই ঘুরেফিরেই আসছে। মঙ্গলবার ম্যাচ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও এলো প্রসঙ্গটা।

তবে এমনটা মানতে নারাজ বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ড লেভানডফস্কি। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিশোধ? এটা দুই দলের জন্য আলাদা একটা মৌসুম। আগে যাই ঘটুক না কেন প্রত্যেকটা মৌসুমই আলাদা। অতীতে কী হয়েছে আমরা সেটা ভুলে গেছি। আমরা শুধু জানি এটা অনেক বড় একটা ম্যাচ। ফাইনালের টিকিটের জন্যই আমরা মাঠে নামব।’

কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে এই লেভাডফস্কিই বায়ার্নের প্রধান ভরসা। কয়েক বছর আগে সেমিফাইনালে একাই চার গোল করে রিয়ালকে উড়িয়ে দিয়েছিলেন পোলিশ সেনসেশন। তখন থেকেই লেভাকে দলে টানার স্বপ্ন দেখছে। এবার মহাযুদ্ধের আগেও পুরনো গুঞ্জনটা নতুনভাবে উঠল।

কিন্তু সেদিকে মোটেও ভ্রুক্ষেপ নেই লেভার। তার চোখ শুধুই আজকের ম্যাচের দিকে। তবে সবচেয়ে বেশি নজর থাকবে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দিকে। লিগের এই মৌসুমে ১৫ গোল করে সেরা ফর্মে আছেন রিয়াল প্রাণভোমরা। গতবার বায়ার্নকে রিয়াল বিদায় করতে পেরেছিল পর্তুগিজ যুবরাজের দারুণ পারফরম্যান্সের সুবাদেই।

এবারো তার কাছে তেমনকিছুই প্রত্যাশা রিয়াল মাদ্রিদের। ক্লাবকে টানা হ্যাটট্রিক শিরোপা উপহার দিতে মুখিয়ে আছেন তিনিও। কিন্ত বায়ার্নের মাঠে অগ্নিপরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতিটা ঠিক সুখের হয়নি স্প্যানিশ জায়ান্টদের। লা লিগায় রিয়াল বেটিসের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করার দুঃস্মৃতি নিয়ে জার্মানিতে এসেছে জিনেদিন জিদানের দল।

ড্রয়ের সেই অস্বস্তিটা হয়তো থাকতে পারে দলের। তবে আজ মাঠে নামার আগে একটা ভালো খবর আছে রিয়ালের জন্য। নিষেধাজ্ঞার খড়্গ কাটিয়ে এদিন মাঠে ফিরছেন রক্ষণদুর্গের সেরা তারকা ও অধিনায়ক সার্জিও রামোস। পূর্ণশক্তির দল নিয়েই আজ মাঠে নাম নামলেও কঠিন পরীক্ষা দেওয়া লাগতে পারে রিয়ালকে।

কারণ বায়ার্ন মিউনিখের আসল শক্তি ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। অ্যালিয়েঞ্জ এরিনায় ধারাবাহিক ১৫ ম্যাচ ধরে অপরাজিত আছে বাভারয়িান ক্লাবটি। তন্মধ্যে জয়-ই ১৩টি। এসব কিছুর পরও নির্ভার হতে পারছে না বায়ার্ন। কেননা শেষ চার মৌসুমেই তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে স্প্যানিশ ক্লাবগুলোর কাছে।

তবে স্বাগতিকদের জন্য আশার কথা হচ্ছে- কোয়ার্টার ফাইনালে স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়া বাধা ডিঙিয়ে সেমিতে এসেছে তারা। ট্রেবল স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে এবার আরেক স্প্যানিশ কাঁটা উপড়ে ফেলতে হবে ইয়ুপ হেইঙ্কেসের দলকে।

কাজটা অবশ্যই কঠিন। কারণ চোট ভালোভাবেই ঘিরে রেখে বায়ার্নকে। ইনজুরির কারণে আজ তারা একাদশে পাচ্ছে না নিয়মিত গোলরক্ষক ম্যানুয়েল ন্যুয়ার, মধ্যমাঠের সারথি আর্তুরো ভিদাল ও কিংসলে কোম্যানকে। তবে যাকে ঘিরে এতো আলোচনা সেই হ্যামেস রদ্রিগেজকে নিয়েই মাঠে নামবে বায়ার্ন।

ম্যাচটা জার্মান ক্লাবের জন্য আট-দশটা সাধারণ ম্যাচের মতো হলেও কলম্বিয়ান মিডফিল্ডারের কাছে এ ম্যাচটার আবহ অন্যরকম। নিজ দলের বিপক্ষেই আজ খেলতে নামবেন তিনি। যিনি আপাতত ধারে খেলছেন বায়ার্নে, মৌসুম শেষেই তার ফিরে যাওয়ার কথা রিয়াল মাদ্রিদে।