‘মেসি-রোনালদো-মরিনহোও কিছু করতে পারবে না’

একটা সময় বাংলাদেশে ফুটবল মানেই ছিলো তুমুল উন্মাদনার জোয়ার। খুব বেশি পুরোনো দিনের কথা নয় তা। কিন্তু এখন বাংলাদেশ ফুটবলে কান পাতলে যা শোনা যায়, তাকে বলা যেতে পারে কেবলই 'বেলা শেষের' গান। বাংলাদেশ ফুটবলে এখন যেনো চলছে 'অন্ধকার যুগ'। যোগ্যতা নেই বলে দেড় বছর ধরে বাংলাদেশ ফুটবল পড়ে আছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বাইরে। ফিফার অধীনে তো নয়ই, এএফসির অধীনেও কোনো ম্যাচ খেলতে পারছে না বাংলাদেশ! চরম লজ্জা আর হতাশার এই পরিস্থিতি থেকে যে সহসা উত্তরণ ঘটবে, সে সম্ভাবনাও দেখছেন না জাতীয় দলের এক সময়ের তারকা জুয়েল রানা। 

বাংলাদেশ ফুটবল যে কজন আন্তর্জাতিক মানের তারকা জন্ম দিয়েছে, জুয়েল রানা সেই দলেরই একজন। দেশের ফুটবলকে অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত এনে দিয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে সাফ ফুটবলে রানার্স আপ হয়েছিল বাংলাদেশ।

ওই বছরই সাফ গেমস ফুটবলে প্রথম স্বর্ণ জিতে বাংলাদেশ। সেই দুই দলের অধিনায়ক ছিলেন জুয়েল রানা। শুধু ‘আর্মব্যান্ড’ পরে থেকে দায় সারা অধিনায়কত্ব নয়, জুয়েল রানা ছিলেন উদাহরণ তৈরি করার মতো অধিনায়ক।

সেরাটা বের করে নিতে সতীর্থদের শাসন করতে কার্পণ্য করতেন না তিনি। দলের ওপর প্রভাব খাটাতে পারা অমন অধিনায়ক আর দ্বিতীয়টি আসেনি বাংলাদেশ ফুটবলে।

ফুটবল ছাড়ার পর কোচিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন খ্যাতিমান এই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার। দেশের একাধিক ক্লাবে কোচিং করিয়েছেন। কিন্তু অনিয়মের সঙ্গে আপোস করতে পারার ‘গুণ’ না থাকার কারণে ক্লাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি তিনি। কোচিং পেশাটা চালিয়ে নিতে অনেক বাঁধা বিপত্তি মোকাবিলা করতে হচ্ছিল।

এ সবের মধ্যে আর পড়ে না থেকে পরিবারসহ যুক্তরাষ্ট্রে পারি জামাচ্ছেন জুয়েল। যাওয়ার আগে হতাশ জুয়েল বলে গেলেন, মেসি-রোনালদোর মতো ফুটবল বা হোসে মরিনহোর মতো কোচ নিয়ে এলেও বাংলাদেশের ফুটবলের অগ্রগতি হবে না। যতোক্ষণ না ফুটবল কর্মকর্তারা নিজেদের দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করেন।

গণমাধ্যমকে জুয়েল বলেন, ‘এই দেশে মেসি-রোনালদোকে এনেও কোনো লাভ হবে না। মেসিরা তো এসেছিলেন, কই তাতে কোনো লাভ হয়েছে? যদি নিজেদের কোনো পরিকল্পনা না থাকে, তাহলে হোসে মরিনহোকে কোচ হিসেবে নিয়ে এলেও জাতীয় দলের কোনো পরিবর্তন হবে না।’ জুয়েলের কথা কি বাফুফে কর্তাদের কান পর্যন্ত পৌঁছাবে?