এই উপযুক্ত পরামর্শটা কি শুনবেন মেসি?

বার্সেলোনার হয়ে ছোট বড় মিলিয়ে ত্রিশটি শিরোপা জিতেছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু জাতীয় দল আর্জেন্টিনার জন্য মেসির যে শোকেসটা বরাদ্দ সেটা প্রায় শূন্য। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। ওই বয়সভিত্তিক দলের হয়েই অলিম্পিক জিতেছিলেন ২০০৮ সালে। আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির অর্জন এই্-ই। বারবার ব্যর্থ হওয়াতে কম সমালোচনা সহ্য করতে হয়নি তাকে। আরেকবার যেন কঠিন সমালোচনার মুখোমুখি না হতে হয় তাই মেসিকে দারুণ এক পরামর্শ দিলেন অস্কার রুগেরি।

১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন রুগেরি। বিশ্বকাপ কিভাবে জিততে হয় তার একটা অভিজ্ঞতা আছেই এই কিংবদন্তি ডিফেন্ডারের। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই মেসির প্রতি রুগেরির পরামর্শ, ‘বার্সেলোনার হয়ে খেলা কমিয়ে দাও।’ অর্থাৎ চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার যতো ম্যাচ তা থেকে মেসিকে সংযত হওয়ার পরামর্শ রুগেরির। আগামী সপ্তাহে কোপা দেল রের ফাইনাল খেলবে বার্সেলোনা। রুগেরির চাওয়া, সেই ম্যাচটি ছাড়া অন্য ম্যাচগুলো থেকে নিজেকে সরিয়ে নিক মেসি।

কিংবদন্তি এই ডিফেন্ডারের চাওয়া অবশ্য যুক্তিসঙ্গতই। কারণ বার্সার লা লিগা শিরোপা জয় এখনো নিশ্চিত হয়নি ঠিকই কিন্তু, শিরোপা জয় অনেকটা সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। লিগ শিরোপা জিততে আর মাত্র দুটি জয় লাগবে বার্সেলোনা। পয়েন্ট টেবিলে অনেক আগ থেকেই শীর্ষে কাতালান ক্লাবটি। দুই নম্বরে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ১২ পয়েন্টে পিছিয়ে। ফলে মাত্র দুটি জয় হলেই সব হিসেব এক পাশে রেখে শিরোপা জয়ের উদযাপন করবে বার্সেলোনা। তাহলে বার্সার সব ম্যাচ খেলে নিজের বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হারাবেন কেন মেসি?

রুগেরি বলেন, "আপনার কি মনে হয়, যে মেসি যদি আর না খেলে বার্সেলোনার লিগ শিরোপা হারানোর কোনো সম্ভাবনা আছে? মেসি বার্সেলোনা সভাপতিকে ফোন করে বলে দিতেই পরে যে, 'বিশ্বকাপ আসছে, আমি জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুত থাকতে খেলতে চাই না।' ওর উচিত জাতীয় দলের কোচকে ফোন করে বলা বিশ্বকাপকেই এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে সে।"

নিজের বিশ্বকাপ জয়ের অভিজ্ঞতা মনে করে তিনি বলেন, ‘মেক্সিকো বিশ্বকাপের (১৯৮৬ সালে) ৬৫ দিন আগে আমরা একাত্রিত হয়েছিলাম। মেসি যদি এখন কোচের সঙ্গে দেখা করে (বিশ্বকাপে মনোযোগ দেয়), তাহলে বাকিরা কী করবে বুঝতে পারছেন?’

রুগেরি হয়তো ঠিকই বলছেন। মেসি সব বাদ দিয়ে বিশ্বকাপে মনোযোগ দিলে অন্যরাও এগিয়ে আসবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু আর্জেন্টিনা অধিনায়ক এই পরামর্শ শুনবেন তো। বিশ্বকাপের আর বেশি সময় নেই। মাস দেড়েক বাকি।

অবশ্য একটু দূরে তাকালেই এই সিদ্ধান্ত নিতে অনুপ্রেরণা পাবেন মেসি। গত ফেব্রুয়ারির শেষ ভাগে পায়ের চোট পান নেইমার। তারপর অস্ত্রোপচার করে জানানো হয় তিন মাস মতো সময় লাগবে নেইমারের মাঠে ফিরতে। অর্থাৎ পিএসজির হয়ে এবারের মৌসুমে আর খেলতে পারবেন না ব্রাজিল তারকা। অনেকেই নেইমারের এই চোট থেকে ফিরে আসার সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।

বলাবলি হচ্ছে, আসলে নেইমার আগেই সেরে উঠবেন। কিন্তু ব্রাজিলের ডাক্তাররা সময় বেশি দেখাচ্ছেন কারণ বিশ্বকাপের আগে যেন পিএসজির হয়ে আর না খেলতে হয় নেইমারকে। যেন লম্বা একটা বিশ্রাম নিয়ে বিশ্বকাপে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন তিনি। এতোদিনে বিশ্রাম পেলে নিঃসন্দেহে শারীরীক ও মানসিক ভাবে অনেকটাই তরতাজা থাকবেন নেইমার। যা বিশ্বকাপে বড় উপকারে দিবে মনে করে তার ইনজুরি থেকে ফেরার সময়কে বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। মেসি এখান থেকে শিক্ষা নিতেই পারেন!