প্রধানমন্ত্রী: অবশ্যই তারেককে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে

বাংলাদেশের আদালতে দণ্ডিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা হবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারের সাথে আলোচনা করছি। আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে নিতে চাই এবং অবশ্যই একদিন তাকে আদালতের মুখোমুখি হতে হবে।’

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার লন্ডনে ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটে (ওডিআই) ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন উপাখ্যান: নীতিমালা, অগ্রগতি এবং সম্ভাবনা’ বিষয়ক এক সেমিনারে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ওডিআই আয়োজিত অনুষ্ঠানটির মূলবক্তা ছিলেন তিনি। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের উন্নয়ন, সম্ভাবনা ও রোহিঙ্গা সংকটসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য একটি উদার দেশ। যে কেউ এখানে উদ্বাস্তু হতে আশ্রয় নিতে পারে।’ তবে তারেক রহমানের মতো একজন দণ্ডিত ব্যক্তিকে আশ্রয় দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের সমালোচনা করেন তিনি।  

রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারা কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না, যা সমস্যা সৃষ্টি করছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ, সরকার তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করছে। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয় দেশের মন্ত্রী সফর করেছেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশ-চীন, লাওস ও থাইল্যান্ডের সাথে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য উপায় নিয়েও আলোচনা করেছেন।

‘মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে আগ্রহ দেখালেও বাস্তবে তাদের ফেরত নিচ্ছে না। এজন্য রোহিঙ্গা নাগরিকদের অবিলম্বে নিজ দেশে ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমারের ওপর আরো আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োজন।মিয়ানমার সরকারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা, পুনর্বাসন ও জীবিকার উপায় নিশ্চিত করতে হবে’, যোগ করেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আরো ভালো জীবনযাপন করার জন্য সরকার একটি দ্বীপে আবাসন ব্যবস্থা করছে যেখানে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিতে পারবে।

রোহিঙ্গারা এখন পাহাড়ে বসবাস করছে যা বর্ষাকালে বিপজ্জনক হবে। যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বর্ষা মৌসুমে সেখানে বাস করা সম্ভব নয়।’

সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের একটি পরিবারের ‘প্রত্যাবাসন’ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ক্যাম্প থেকে কোনো পরিবারকে নেয়া হয়নি। অনেক রোহিঙ্গা সীমান্ত রেখায় বসবাস করছেন। মিয়ানমার সীমান্ত এলাকার শূন্য রেখা থেকে একটি পরিবারের অর্ধেক লোককে ফিরিয়ে নিয়েছে। পরিবারটির অন্যান্য সদস্য বাংলাদেশ ক্যাম্পে বসবাস করছেন।

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, ‘সম্ভবত রোহিঙ্গাকে ফেরত নেয়ার বিষয়টি বিশ্বকে দেখাতে চায় মিয়ানমার সরকার। এটি ভাল লক্ষণ। কেন তারা মাত্র একটি পরিবারকে ফিরিয়ে নিল? আমরা আট হাজার পরিবারের নাম দিয়েছি, কিন্তু তারা তাদের কাউকে ফেরত নিচ্ছে না।’

মিয়ানমার সরকারকে অবিলম্বে পূর্ণ প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

ফাহাদ ফেরদৌস, ইউএনবি।