প্রধানমন্ত্রী: ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করুন

দারিদ্র এবং বৈষম্যকে পেছনে ফেলে ভবিষ্যতের শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ‘যার কেন্দ্রে থাকবে বিশ্ব শান্তি এবং নারীর ক্ষমতায়ন’।

মঙ্গলবার লন্ডনে এক আলোচনা সভায় ‘শিক্ষার মাধ্যমে ক্ষমতায়ন: কমনওয়েলথ দেশগুলোতে মেয়েদের সমানাধিকার এবং গুণগত প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা’ বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থপানকালে তিনি এ কথা বলেন। কুইন এলিজাবেথ-২ কনফারেন্স সেন্টারে কমনওয়েলথ মহিলা ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে চাই, যেখানে থাকবে না কোনো দারিদ্র ও বৈষম্য এবং তার কেন্দ্রে থাকবে বিশ্ব শান্তি এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি।’

তিনি আরো বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার পাশাপাশি বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে সবার জন্য শিক্ষা বাংলাদেশের প্রধান লক্ষ্য। আমরা এমন একটি ভবিষ্যৎ দেখতে চাই যেখানে নারী ও পুরুষ হাতে হাত লাগিয়ে মানব উন্নয়নে কাজে করে যাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে সপ্তম পঞ্চবর্ষিকী পরিকল্পনাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জাতীয় পরিকল্পনা ও নীতি গ্রহণ করা হয়েছে।

নিজ সরকারের লক্ষ্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে ছেলে এবং মেয়েদের গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করা আমার সরকারের অন্যতম প্রাধান কাজ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মেয়েদের শিক্ষাকে অনেক গুরুত্বের সাথে দেখছে, যার ফলে সমাজের অনেক সমস্যা দূর করার পাশাপাশি গ্রামীন জীবনযাত্রার মানও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

পাশাপাশি মেয়েদের শিক্ষার অগ্রগতির ফলে পারিবারিক নির্যাতন এবং শোষণ অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে বলেও দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের যে সংবিধানের কাঠানো তৈরি করেছেন, সেখানে লিঙ্গ সমতা এবং বৈষম্যহীন সমাজকে মৌলিক অধিকার হিসেবে দেখানো হয়েছে। লিঙ্গ সমতা অর্জনে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়াকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলেও দাবি করেন শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশে নারীরা প্রশাসনের বিভিন্ন উচ্চপদগুলোতে আসীন হয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনের সচিব, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উচ্চ আদালতের বিচারক থেকে রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন আমাদের মেয়েরা।

তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের পদের পাশাপাশি নারীরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং প্রফেশনেও আসছেন। যার মধ্যে রয়েছে- পাইলট, গাড়ির চালক, সেনাবাহিনীর সদস্যসহ বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য।

বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সূচকে ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৪৭তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম অবস্থান তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, রাজনীতিতে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৫৫টি দেশের মধ্যে সপ্তম।

এ কারনে সরকার ২০১১ সালে নারী উন্নয়ন নীতিমাল গ্রহণ করেছিল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে সকল নীতি ও পরিকল্পনায় নারীর অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে’র আমন্ত্রণে কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের বৈঠকে (সিএইচওজিএম) যোগ দিতে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন প্রধানমন্ত্রী। ইউএনবি।