ম্যানসিটির সামনে ‘অসম্ভবের’ চ্যালেঞ্জ

ট্রেবল জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। আপাতত সুতোয় ঝুলে আছে সিটির স্বপ্নটা। উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম লেগে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়ে তাদের একটা শিরোপা হাতছাড়ার উপক্রম।

স্বপ্ন বাঁচাতে আজ লিভারপুলের বিপক্ষে ইতিহাস-ই গড়তে হবে পেপ গার্দিওলার দলকে। ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় লেগে জিততে হবে ৪-০ গোলে। গোল হজম করলেই বিপদ! এমনই অসম্ভব জয়ের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পেপ গার্দিওলার শিষ্যরা।

সিটির জন্য সেমিফাইনালে যাওয়া যতটা কঠিন, ততটাই সহজ সমীকরণ লিভারপুলের সামনে। আজ অ্যাওয়ে ম্যাচটাতে ২-০ গোলে হারলেও সমস্যা হবে না অল রেডদের। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে প্রস্তুতিটা অবশ্য ভালো হয়নি ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের।

মার্সিসাইড ডার্বিতে এভারটনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছে লিভারপুল। আসলে ওই ম্যাচে অল রেডরা পা হড়কানোর কারণ গোলমেশিন মোহাম্মদ সালাহর অনুপস্থিতি। চোটের কারণে ইংলিশ লিগের মহারণে খেলতে পারেননি মিশরীয় স্ট্রাইকার।

গত সপ্তাহে এই ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে ইংলিশ ক্ল্যাসিকোতেই ইনজুরিতে পড়েছিলেন সালাহ। কিন্তু চোট নিয়ে মাঠ ছাড়ার আগে সিটির যা সর্বনাশ সেটা করে গেছেন তিনি। তার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে অ্যানফিল্ডে প্রথম লেগে ৩১ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করেছিল লিভারপুল।

স্বাগতিকদের হয়ে সেদিন সালাহ ম্যাচের প্রথম গোলটি করেছেন, সতীর্থকে দিয়ে করিয়েছেন তৃতীয়টি। সিটিকে গোলবন্যায় ভাসাতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত চোট নি সালাহ বেড়িয়ে গেছেন মাঠ থেকে। সেই চোট এখনো ভোগাচ্ছে সালাহকে। আজ দ্বিতীয় লেগে তার মাঠে নামার নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না খোদ লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপ-ও।

শেষ অবধি সালাহ মাঠে নামতে না পারলে সেটা সিটির জন্য হবে বিরাট সুসংবাদ। কিন্তু সিটি ভাবছে নিজেদের নিয়ে। আগের ম্যাচে ম্যানচেস্টার ডার্বিতে দুই গোল এগিয়ে থেকেও তাদের হারতে হয়েছে ৩-২ গোলে। দুঃসময়ের মধ্যে সিটির জন্য স্বস্তির খবর এলো আক্রমণভাগের প্রধান সারথি সার্জিও অ্যাগুয়েরোর ফিট হয়ে ওঠাটা। তাছাড়া লড়াইটাও ঘরের মাঠে। ম্যানচেস্টার জায়ান্টরা তাই আশায় আছে অলৌকিক কিছুর।

প্রায় অসম্ভবকে সম্ভব করতে নিখুঁত ফুটবল খেলার ঘোষণা দিয়েছেন সিটি কোচ গার্দিওলা। সোমবার দ্বিতীয় লেগপূর্ব সংবাদ সম্মেলেন স্প্যানিশ কোচ বলেছেন, ‘আমাদের সামনে একটাই পথ খোলা আছে। ভালো ফুটবল খেলতে হবে, ইতিবাচক থাকতে হবে। যদি আপনি নিখুঁত একটা ম্যাচ খেলতে পারেন, সুযোগ তৈরি করতে পারেন তাহলে এটা (সেমিফাইনালে যাওয়া) সম্ভব।’

সিটির ফিরে আসার জন্য একটা অনুপ্রেরণা হতে পারে ইতিহাদে লিভারপুলের সঙ্গে তাদের শেষ ম্যাচটা। যেখানে অল রেডদের ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল সিটিজেনরা। কিন্তু ময়দানী লড়াইয়ে সেদিকে তাকানোর সুযোগ কই। কারণ এটা ইংলিশ লিগ নয়, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ।

ইউরোপিয়ান শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগিতার আবহটা একটু অন্যরকমই। তাছাড়া ইউরোপের মঞ্চে অভিজ্ঞতায় লিভারপুলের কাছে সিটি নিতান্তই ‘শিশু’। অল রেডরা যেখানে পাঁচবার ইউরোপ সেরা হয়েছে সেখানে কখনো ফাইনালেই উঠতে পারেনি সিটি। কখনো পারবে না বলে যে এবারো পারবে না তাও কিন্তু নয়।