সিটির মাঠে ম্যানইউর নাটকীয় জয়

দুই গোলে এগিয়ে থেকেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলো না ম্যানচেস্টার সিটি। শনিবার ‘ম্যানচেস্টার ডার্বি’তে সিটিকে ৩-২ গোলে নাটকীয়ভাবে হারিয়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ফর্মের তুঙ্গে থাকার পরও পেপ গার্দিওলার দল এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে হারল।

গত সপ্তাহে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছিল তারা। আরেক ইংলিশ ক্লাব লিভারপুল উড়িয়ে দিয়েছিল সিটিকে। পরিচিত দর্শকদের সামনে সেই হারের ধকলটা প্রায় কাটিয়ে উঠেছিল গার্দিওলার দল। কিন্তু মর্যাদার লড়াই ‘ডার্বি’তে শুরুর ত্রিশ মিনিটে দুই গোল করার পর কোথায় যেন হারিয়ে যায় সিটি।

আসলে মহারণের দুই অর্ধটা দুই দল ভাগ করে নিয়েছে এ দিন। ২৫ মিনিটে স্বাগতিক দর্শকদের উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছিলেন ভিনসেন্ট কোম্পানি। পাঁচ মিনিট পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইকেই গান্ডোগান। দুই গোল পিছিয়ে পরা ইউনাইটেড বিরতীর পর কী দুর্দান্তভাবেই না ফিরে এলো!

আসলে রেড ডেভিলসদের ম্যাচে ফিরিয়েছেন মৌসুমের শুরু থেকে উপেক্ষিত থাকা পল পগবা। ৫৩ এবং ৫৫ মিনিটে পরপর দুই গোল করেন ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে দামি ফুটবলার। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে পগবার দুই গোলের সঙ্গে ব্যবধান ছিল মাত্র ৯৭ সেকেন্ডের!

৬৯ মিনিটে হেডে গোল করে অতিথিদের প্রথমবারের মতো এগিয়ে দেন ক্রিস স্ম্যালিং। এই গোলটা আর নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ফিরিয়ে দিতে পারেনি সিটি। ‘ডার্বি’ জয়ের জন্য স্ম্যালিংয়ের দুর্দান্ত গোলটাই ইউনাইটেডের অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়।

ম্যাচের প্রায় শেষ দিকে সমতায় ফেরার সম্ভাব্য সেরা একটা সুযোগ পেয়েছিলেন সিটি স্ট্রাইকার সার্জিও অ্যাগুয়েরো। কিন্তু ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্প্যানিশ গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়াকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন আর্জেন্টাইন তারকা। দুর্দান্ত একটা সেভ করে ইউনাইটেডের জয়ে ভূমিকা রাখলেন ডি ডিগয়া।

ইংলিশ লিগে দশ বছর পর দুই গোলে এগিয়ে থেকেও হারল সিটি। অথচ এমন ম্যাচে ৬৫ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রেখেছিলেন গার্দিওলার শিষ্যরা। কিন্তু কিইবা লাভ যদি না সেটা দলের জয়ের রূপরেখা না হয়। এই বল দখলের লড়াইয়ের মধ্যেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের খেলোয়াড়রা।

তবে এই হারের পরও পয়েন্ট টেবিলে যথারীতি শীর্ষে থাকল সিটি। ৩২ ম্যাচে তাদের অর্জন ৮৪ পয়েন্ট। সিটিজেনদের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট পিছিয়ে দুইয়ে আছে ইউনাইটেড। দুই ম্যানচেস্টারের পেছনে যথাক্রমে লিভারপুল ও টটেনহাম হটস্পার।

উভয় দলের ঘরে আছে সমান ৬৭ পয়েন্ট। যদিও লিভারপুল এক ম্যাচ বেশি খেলেছে (৩৩)। গতকাল ‘মার্সিসাইড ডার্বি’তে এভারটন গোলশূন্য ব্যবধানে রুখে দিয়েছে মোহাম্মদ সালাহবিহীন লিভারপুলকে।

ইংলিশ লিগে মৌসুমের মাঝপথ থেকেই প্রায় শিরোপা সুবাস পাচ্ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। চিরশত্রুদের হারিয়ে এদিনই রাজত্ব উদ্ধারের সুযোগ ছিল তাদের সামনে। কিন্তু উল্টো হেরে যাওয়ায় সিটির শিরোপা উৎসব বিলম্বিত হলো।

সঙ্গে আত্মবিশ্বাসে আরো ফাটল ধরেছে। কারণ সামনেই যে লিভারপুলের সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগে বাঁচা-মরার ম্যাচ! ট্রেবল স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে মঙ্গলবার রূপকথার জন্ম দিতে হবে কোম্পানি-অ্যাগুয়েরো-জেসুসদের। জিততে হবে ৪-০ গোলে!