আইপিএলের প্রথম ম্যাচে শ্বাসরুদ্ধকর জয় চেন্নাইয়ের

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের একাদশ আসরের প্রথম ম্যাচে অসাধারণ জয় পেয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। ম্যাচে অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেছেন ডোয়াইন ব্রাভো। তার ৩০ বলে ৬৮ রানের ইনিংসই মূলত চেন্নাইকে এনে দেয় দারুণ স্মরণীয় এক জয়। ম্যাচ এক বল বাকি থাকতে এক উইকেটে জিতে যায় এমএস ধোনির দল।

শেষ দুই ওভারে জেতার জন্য চেন্নাইয়ে দরকার ছিলো ২৭ রান। ১৯তম ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহ এক উইকেট নেন বটে, কিন্তু দিয়ে ফেলেন ২০ রান। ওই ওভারেই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় মুম্বাই। তারপরও শেষ ওভারের প্রথম তিন বলে কোনো রান না দিয়ে প্রায় মুম্বাইকে জিতিয়ে দিচ্ছিলেন মোস্তাফিজ। কিন্তু কেদার জাদব শেষ চতুর্থ ও পঞ্চম বলে ছয় ও চার মেরে শ্বাসরুদ্ধকর জয় এনে দেন চেন্নাইকে।

এর আগে ৩০ বলে ৬৮ রান করে নিশ্চিত হার থেকে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান ডোয়াইন ব্রাভো। ৭৫ রানে প্রথম পাঁচ উইকেট পড়ে গেলেও তারা ১৬৬ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে মূলত ব্রাভোর অসাধারণ ইনিংসে ভর করেই।

সেরা পারফর্ম

এই ম্যাচের সেরা পারফর্মার নিঃসন্দেহে ডোয়াইন ব্রাভো। প্রথমে বল হাতে তিনি চার ওভারে ২৫ রান দেন। তবে উইকেটে পাননি। ব্রাভো তার আসল খেল দেখান ব্যাট হাতে, ৩০ বলে ৬৮ রান করে। এই ইনিংসে সাতটি ছয় ও তিনটি চার মারেন তিনি।

এ ছাড়া ক্রুনাল পান্ডিয়ার ২২ বলে ৪১ রানও এই ম্যাচের সেরা পারফর্মের একটি। বল হাতে সেরা ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া ও মায়াঙ্ক মারকান্দে। দুজনই তিনটি করে উইকেট নেন। কিন্তু দুই পান্ডিয়া ভাই ও মায়াঙ্ককে মাঠ ছাড়তে হয় হারের দুঃখ নিয়েই।

প্রথম ইনিংস

দুই বছর পর আইপিএলে ফেরা চেন্নাই সুপার কিংস প্রথম ম্যাচেই জিতে যায় টস এবং বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন এমএস ধোনি। টি-টোয়েন্টিতে চেজ করে জেতা সব সময়ই সহজ এবং ইতিহাসও এর পক্ষেই কথা বলে। ধোনি তাই বোলিং নিতে দ্বিতীয়বার ভাবেননি। যদিও প্রথাগতভাবে ওয়েংখেড়ের উইকেট ব্যাটিংবান্ধব।

শুরুটা একদম ভালো হয়নি মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের। স্কোরবোর্ডে ২০ রান উঠার আগেই তারা দুই উইকেট হারিয়ে বসে। কোনো রান না করে দিপক চাহারের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন এভিন লুইস। আউটটা অবশ্য বিতর্কিত ছিলো।

এবারের আইপিএলে প্রথমবারের মতো ডিআরএস প্রয়োগ করা হচ্ছে। ডিআরএসের প্রথম প্রয়োগেই ধরা পড়ে জটিলতা। চাহার আবেদন করার সাথে সাথে লুইসকে এলবিডব্লিউর সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। এভিন লুইস রিভিউ চান। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বল পিচ করেছিলো মিডল ও লেগ স্টাম্পের মাঝামাঝি। পরে তা সরে যাচ্ছিলো লেগ স্টাম্পের বাইরের দিকে। কিন্তু ডিআরএস দেখাচ্ছিলো বল লেগ স্টাম্পে লাগছে। যদিও তা ছিলো খুবই সামান্য। নিয়ম অনুসারে এ সব ক্ষেত্রে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই যেহেতু চূড়ান্ত, সেহেতু শূন্যতে আউট হয়ে ফিরতে হয় লুইসকে।

মুম্বাইকে স্বস্তি এনে দেন সূর্যকুমার যাদব ও ইশান কিষান। তৃতীয় উইকেটে এই দুই তরুণ যোগ করেন ৭৮ রান। পঞ্চম উইকেটে ৫২ রান যোগ করে অবিচ্ছিন্ন থাকেন দুই সহোদর হার্দিক পান্ডিয়া ও ক্রুনাল পান্ডিয়া। এই দুই জুটিতেই মূলত ১৬০-এর উপরে পুঁজি পায় মুম্বাই। চেন্নাইয়ের হয়ে দুটি উইকেট নেন শেন ওয়াটসন।

দুই দলের পরের ম্যাচ

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স তাদের পরের ম্যাচ খেলবে ১২ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটায়। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের প্রতিপক্ষ সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ওই ম্যাচে মুখোমুখি হতে পারেন বাংলাদেশের দুই তারকা মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান। ম্যাচটি হবে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে।

চেন্নাই সুপার কিংসের পরের ম্যাচ ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে আটটায়। ম্যাচটিতে তাদের প্রতিপক্ষ কলকাতা নাইট রাইডার্স। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়াম, চেন্নাইয়ে।