এবার খালি হাতে ফিরতে নারাজ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স

ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) দুটি ফাইনাল খেলেছে যে কটি দল, তারা অন্তত একবার জিতেছে শিরোপা। ব্যতিক্রম শুধু রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। তিন তিনটি ফাইনাল খেলেও স্বপ্নের শিরোপাটা অধরা রয়ে গেছে তাদের কাছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালে তীরে এসে তরী ডুবেছিল দলটির।

গতবার তো আট দলের মধ্যে অষ্টম হয়েছিল তারা! ১৪ ম্যাচের মাত্র তিনটিতে জিতেছিল। সেই দুঃস্বপ্ন ভুলে এবার শিরোপার জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নামছে বিরাট কোহলির ব্যাঙ্গালুরু। দলটির সমর্থকরা ইতোমধ্যেই স্লোগান তুলেছেন, ‘এই বছরটা আমাদের।’ ব্যাঙ্গালুরুর দল দেখলে অবশ্য যে কেউই বলবে তাদের দাবিটা একেবারে অমূলক নয়।

শিরোপা জিততে যে কাড়িকাড়ি অর্থ এবং বড় মাপের ক্রিকেটার লাগে তা নয়। কখনো কখনো ভাগ্যেরও সহায়তার দরকার পড়ে। এটার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ব্যাঙ্গালুরু। এক মৌসুম আগে ক্রিস গেইল, এবি ডি ভিলিয়ার্স এবং বিরাট কোহলিদের নিয়ে গড়া ফ্র্যাঞ্চাইজিটির শিরোপাবঞ্চিত হওয়া শুধুই দুর্ভাগ্যের। মোস্তাফিজুর রহমানের সানরাইজার্স হায়দরাবাদের কাছে ফাইনালে হেরে যাওয়ার আফসোসটা এখনো আছে তাদের। 

ওই আসরের অসাধারণ প্রতাপ এবং ছন্দ দুটোই অবশ্য গত আসরে হারিয়ে ফেলেছে তারা। নেপথ্য কারণ যতটা না পারফরম্যান্স, তার চেয়েও বেশি অপ্রত্যাশিত ইনজুরি। গত মৌসুমের প্রায় পুরোটা সময় ব্যাঙ্গালুরুর তারকা খেলোয়াড়রা ইনজুরিতে ভুগেছেন। চোটের কারণে তো গেইল পুরো আসরে ছিলেন দর্শকের কাতারে। সেই গেইলকে এবার হেলায় ফেলায় ছেড়ে দিয়েছে ব্যাঙ্গালুরু। গেইলকে ছেড়ে দেওয়াটা তাদের সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল কিনা সেটা অবশ্য বলে দেবে সময়।

অসাধারণ টপ অর্ডার

গেইলকে ছেড়ে দিলেও তার ভালো একটা বিকল্প খুঁজে নিয়েছে ব্যাঙ্গালুরু। ফ্র্যাঞ্চাইজিটি নিয়ে এসেছে ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে। সঙ্গে আছেন ডি ভিলিয়ার্স এবং কোহলি। এই ত্রয়ীকে নিয়ে শক্তিশালী টপ অর্ডার অব্যাহত রেখেছে ব্যাঙ্গালুরু। ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিতে এই তিনজনের একজনই যথেষ্ঠ। দুজন কিংবা তিনজন এক সঙ্গে জ্বলে উঠলে প্রলয় ঘটতে পারে। আইপিএলের আগের আসরে সেটার দৃষ্টান্ত কম বেশি দেখিয়েছেন তারা। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত ২২৫ রানের বেশি ইনিংস পাঁচবার উপহার দিয়েছে দলটি।

শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ

এই আসরেও যদি তেমন কিছু করে ব্যাঙ্গালুরু সেটা বিস্ময়কর হবে না। কোহলি, ম্যাককালাম, ডি ভিলিয়ার্স ছাড়াও টপ অর্ডারে আছেন কুইন্টন ডি কক, পার্থিব প্যাটেল, সরফরাজ খান। মিডল অর্ডারে ঝড় তুলতে পারেন কোরি অ্যান্ডারসন, মঈন আলি, ক্রিস ওয়াকস কিংবা কলিন ডি গ্রান্ডহোমদের কেউ। অবস্থা এমন যে একাদশ নির্বাচনেই হিমশিম খেতে হবে ব্যাঙ্গালুরু নির্বাচকদের। কাকে রেখে কাকে খেলাবেন এ নিয়ে মধুর সমস্যাতেই থাকার কথা তাদের। কারণ এই আসরে অন্য দলগুলোর তুলনায় ব্যাঙ্গালুরুর রিজার্ভ বেঞ্চ সবচেয়ে শক্তিশালী। তাই খেলোয়াড়দের ইনজুরি নিয়ে এবার আর ভাবতে হচ্ছে না তাদের।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স স্কোয়াড

বিরাট কোহলি, এবি ডি ভিলিয়ার্স, সরফরাজ খান, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, ক্রিস ওকস, কলিন ডি গ্রান্ডহোম, মঈন আলি, কুইন্টন ডি কক, উমেশ যাদব, যুজবেন্দ্র চাহাল, মনন ভোহরা, কুলওয়ান্ত খেজরলিয়ে, অনিকেত চৌধুরি, নাভদিপ সাইনি, মুরুগান অশ্বিন, মনদিপ সিং, ওয়াশিংটন সুন্দর, পাওয়ান নেগি, মোহাম্মদ সিরাজ, পার্থিব প্যাটেল, অনিরুদ্ধ জোসি, পবন ডেফান্ডে, টিম সাউদি, কোরি অ্যান্ডারসন।