কিপিং ছাড়ার সিদ্ধান্তই জন্ম দিয়েছিলো অন্য সাঙ্গাকারার

জীবনের শেষ টেস্ট সিরিজ খেলছেন লঙ্কান ক্রিকেটের অন্যতম সেরা আবিস্কার কুমার সাঙ্গাকারা। শেষ সিরিজ চলার সময় সংবাদ মাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় তিনি জানিয়েছেন, টেস্টে কিপিং ছেড়ে দেওয়াটাই জাগিয়ে তুলেছিলো তার ভিতরে লুকিয়ে থাকা সেরা ব্যাটসম্যানকে। নিজের ক্যারিয়ারের সেরা সিদ্ধান্তও বলেছেন এটিকে।

এখন এ কথা বললেও, সাঙ্গাকারাকে যখন কিপিং ছাড়তে বলা হয়েছিলো, তখন এই সিদ্ধান্তকে ভালোভাবে নেননি তিনি। সংবাদ মাধ্যমের এ কথা নিজেই বলেছেন সাঙ্গা।

তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন কিপিং ছাড়তে বলা হলো, আমার ভালো লাগেনি। নির্বাচকরা আমাকে বলেছেন, তোমার ব্যাটিং যাতে আরো ভালো হয়। সে কারণেই আমরা কিপিংটা ছাড়তে বলছি। এতে দলের লাভ হবে। তোমারও লাভ হবে। সে সময় আমার মনে হয়েছে। এটা ঠিক নয়। আমি দুটোই এক সাথে করতে পারবো। এখন যখন পিছনে ফিরে তাকাই, মনে হয় আমার হয়ে নির্বাচকরা সিদ্ধান্তটি নিয়ে দিয়েছিলেন। এটাই আমার ক্যারিয়ারের সেরা ঘটনা। আমি পরে যতো রান করেছি। তাতে ওই সিদ্ধান্তের প্রভাব আছে।’

রোমেশ কালুভিথারানার পরিবর্তক হিসেবে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেন সাঙ্গাকারা। তার প্রধান কাজ ছিলো উইকেট কিপিং করা। সে সময় ব্যাট হাতেও দারুণ সফল ছিলেন তিনি। ২০০৬ সালের মাঝামাঝি তার ব্যাটিং গড় ছিলো ৪৬-এর উপরে। 

পরে অশান্ত ডি মেলের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি সাঙ্গাকারার ব্যাটিং ক্ষমতাকে আরো বিকশিত করার জন্য তাকে কিপিং ছাড়ার পরামর্শ দেন। তাদের বিশ্বাস ছিলো বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাঙ্গার আরো অনেক কিছু দেয়ার আছে। সেই বিশ্বাস থেকেই তাকে তিন নম্বরে নিয়মিত ব্যাটিং করানো হয়। পৃথিবী পেয়ে যায় ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের সেরা রূপটা।

পরে নয় বছরের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যান সাঙ্গাকারা। বিশেষজ্ঞ টেস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে ৮৪টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এতে করেছেন ৯১৮৮ রান। গড় ৬৮.০৫। উইকেট কিপার নয়, এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে অন্তত ১০০০ রান করাদের দ্বিতীয় সেরা গড় এটি। প্রথম স্থানটি ডন ব্র্যাডম্যানের দখলে। কে জানে, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে যদি শুধু ব্যাটিংটাই করতেন, তবে নিশ্চয় আরো উঁচুতে উঠতে পারতেন সাঙ্গাকারা।

দুটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছেন সাঙ্গাকারা। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে জেতা হয়নি কোনোটি। তারপরও এ নিয়ে আফসোস নেই তার। তবে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতে টেস্ট জিততে না পারা নিয়ে অনুতাপ আছে। সেটাও অবশ্য মুছে যাচ্ছে ইংল্যান্ডে তাদের সাফল্যের কারণে। 

সাঙ্গাকারা বলেন, ‘গত বছর ইংল্যান্ড সফরের টেস্ট সিরিজটি আমরা ১-০ ব্যবধানে জিতেছি। এটাই আমার ক্যারিয়ারের সেরা সফর। এর আগে ২০০৬ সালেও তাদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র করেছিলাম আমরা। সেবার ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিলাম ৫-০ ব্যবধানে।’

ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে নিজের সাবেক সতীর্থ জয়সুরিয়া, মারভান আতাপাত্তু, চামিন্দা ভাস, অরভিন্দ ডি সিলভাদের কথা মনে করেছেন। তরুণদের মধ্যে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, ল্যাসিথ মালিঙ্গা, উপুল থারাঙ্গাকে তিনি বলেছেন তার সময়ে উঠে আসা সেরা ক্রিকেটার। একই সাথে তার প্রশংসাধন্য হয়েছেন রঞ্জনা হেরাথও। 

আপনি আরো পড়তে পারেন

ইংলিশদের বল ব্যবহার করবে অসিরা

বাংলাদেশ- জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রস্তাবিত সূচি

আইসিসির বিদায় ঘণ্টা বাজাতে প্রস্তুত মোদি