কেপটাউন টেস্টে চাপে অস্ট্রেলিয়া

ডিন এলগারের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি, মরনে মরকেলের মাইলফলক এবং কাগিসো রাবাদার দুর্দান্ত বোলিংয়ে কেপ টাউন টেস্টের লাগাম নিজেদের হাতে তুলে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে তিনশ পাড়ি দেওয়ার পর অস্ট্রেলিয়াকে আড়াইশ রানের মধ্যে অল আউট করার সম্ভাবনা জাগিয়েছে প্রোটিয়ারা।

শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে নয় উইকেটে ২৪৫ রান করেছে সফরকারীরা। স্বাগতিকদের চেয়ে এখনো ৬৬ রানে পিছিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। ৩৩ রানে অপরাজিত থাকা টিম পেইন শনিবার জস হ্যাজলউডকে নিয়ে দিন শুরু করবেন। 

এর আগে আট উইকেটে ২৬৬ রানে দিনের খেলা শুরু দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের প্রথম ইনিংস শেষ পর্যন্ত ৩১১ রানে থামাতে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে সব ব্যাটসম্যানকে সাজঘরে পাঠালেও ডিন এলগারকে আউট করতে পারেনি অজিরা।

১৪১ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার। এ দিন ২০ রান যোগ করেছেন তিনি। কিন্তু সঙ্গীর অভাবে ক্যারিয়ারের একাদশ সেঞ্চুরিটা আর লম্বা করতে পারেননি এলগার। ২২ রানে ফিরে গেছেন কাগিসো রাবাদা। তার আউটে পঞ্চাশ রানে জুটি ভাঙার পর মরনে মরকেলের যোগ্য সঙ্গ পাননি এলগার।

চার বল ও রানের মধ্যে প্রোটিয়াদের ইনিংস গুটিয়ে দেন নাথান লায়ন। তবু এলগারকে আউট না করতে পারায় আক্ষেপে পোড়ার কথা লায়নের। কারণ অপরাজিত থেকে দারুণ এক রেকর্ড হয়ে গেছে এলগারের। এদিন এলগার নাম লেখান ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ডেসমন্ড হেইন্সের পাশে। যিনি উদ্বোধনী জুটিতে ব্যাট করতে এসে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে জবাব দিতে নেমে শুরুতেই চেনা রূপে ডেভিড ওয়ার্নার। তাণ্ডব চালান ইনিংসের শুরু থেকেই। টি-টোয়েন্টি মেজাজে কচুকাটা করেন রাবাদাদের। কপাল ভালো দক্ষিণ আফ্রিকার, ওয়ার্নার বিস্ফোরণ অল্পতেই থামাতে পেরেছে তারা!

তাকে ফেরান রাবাদা; স্ট্যাম্প উপড়ে ফেলেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনারের। তাতেই ভাঙে ৪৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। ফেরার আগে ১৪ বলে ৩০ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে গেছেন ওয়ার্নার। ইনিংসে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।

বেশি দূর এগুতে পারেননি উসমান খাজা ও স্টিভেন স্মিথ। ব্যক্তিগত পাঁচ রানে দুজনই মরকেলের শিকারে পরিণত হয়েছেন। ৭২ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে তখন দারুণ চাপে অস্ট্রেলিয়া। শন মার্শকে নিয়ে কিছুটা বিপর্যয় কাটিয়ে তোলেন ওপেনার ক্যামেরন ব্যানক্রফট। দুজন মিলে চতুর্থ উইকেটে গড়েন ৭৮ রানের জুটি। ব্রেক থ্রু এনে দেন মরকেল; মার্শকে ফিরিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে তিনশতম উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি।

তিন উইকেটে ১৫০ থাকা অস্ট্রেলিয়া পরের ২৫ রানের মধ্যে হারিয়ে বসে পাঁচ উইকেট। একপ্রান্ত আগলে রেখে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ওপেনার ব্যানক্রফট সাজঘরে ফিরেছেন এই ঝড়েই। ৭৭ রানে আউট হন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার।

অজিরা দলীয় সংগ্রহ দুশো ছাড়াতে পারবে কিনা তা নিয়েও জেগেছিল সংশয়। নবম উইকেটে ৬৬ রানে এলো প্রতিরোধ। পেইন ও নাথানকে আলাদা করে দিনের চতুর্থ উইকেট তুলে নেন মরকেল।

লায়ন ফেরেন ওয়ার্নারের মতো আগ্রাসী মেজাজে খেলতে গিয়ে। আউট হওয়ার আগে দলকে ৩৮ বলে ৪৭ ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। দশ নাম্বারে ব্যাট করতে নামা এই ব্যাটসম্যান বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন আটটি। অস্ট্রেলিয়ার পতন হওয়া উইকেটের চারটি নিয়েছেন মরকেল, একটি কম শিকার রাবাদার। দুটি উইকেট  ভেরনন ফিল্যান্ডারের।