অধারাবাহিক তরুণরাই বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা

ক্রিকেট দুনিয়ায় বাংলাদেশের উন্নতি ঘটছে চোখে পড়ার মতো রূপ নিয়ে। কিন্তু এই উন্নতিতে তরুণরা তেমন একটা অবদান রাখতে পারছেন না। তাদের তুলনায় দুর্দান্ত পারফর্ম করছেন অভিজ্ঞরা। বেশির ভাগ সময় অভিজ্ঞরা ব্যর্থ হলে মিলছে না প্রত্যাশিত ফল। খালেদ মাহমুদ সুজন মনে করছেন, তরুণদের এই রকম অধারাবাহিক পারফর্মই বাংলাদেশের দুশ্চিন্তা।

নিদাহাস ট্রফি থেকে ফেরার পর সুজন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে। লিগে তিনি আবাহনীর কোচ। দুদিন বাদে শুরু হচ্ছে লিগের সুপার লিগ পর্ব। তার আগে বৃহস্পতিবার দল নিয়ে বিসিবি একাডেমি মাঠে ছিলেন তিনি। এ সময় মাহমুদ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।

বাংলাদেশ দল কেনো প্রত্যাশিত সাফল্য পাচ্ছে না— তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের তরুণরা ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করতে পারছে না। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ দলের সাফল্য এসেছে কেবল অভিজ্ঞদের হাত ধরে। তামিম-সাকিব-মুশফিক-রিয়াদরা যেভাবে পারফর্ম করছে, সেভাবে তরুণরা পারছে না। আমরা এটি খুবই চিন্তিত।’

পরিসংখ্যানের পাতায় চোখ বুলিয়ে মাহমুদের দাবির সত্যতা মিলেছে। গত তিন বছরে তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তামিম ইকবালের। এই সময়ে তিনি ৮১ ম্যাচের ৯৫ ইনিংসে ৩৮১৮ রান করেছেন। এই তালিকায় দুই, তিন ও চার নম্বরে আছেন যথাক্রমে মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। পাঁচ নম্বরে আছেন সাব্বির রহমান। তিন বছরে ৮৫ ম্যাচের ৯০ ইনিংসে তিনি করেছেন মোটে ২০৮৬ রান।

হতাশ করেছেন সৌম্য সরকার, লিটন দাস। সৌম্য অনেক ম্যাচ খেললেও লিটন অবশ্য অতো সুযোগ পাননি। তারপরও এ দুজনের উপর থেকে ভরসা হারাচ্ছেন না মাহমুদ। তিনি মনে করেন, সৌম্য ও লিটনের স্কিল যতোটা ভালো, ততোটা যদি তারা পারফর্ম করতে শুরু করেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বহু দূর।

বোলিংয়ের চিত্রটা অবশ্য একটু ভালো। সেখানে মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদি হাসান মিরাজ যথেষ্ট ভালো খেলেছেন। পরিসংখ্যান বলছে গত তিন বছরে বাংলাদেশের সেরা বোলার সাকিব আল হাসান। এই সময়ে তিন ফরম্যাটের ৮০ ম্যাচের ৮৭ ইনিংসে তিনি ১২৪টি উইকেট নিয়েছেন। দুই নম্বরে আছেন মোস্তফিজ। তিনি এই সময়ে ৬১ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১১৩টি উইকেট। ৬৪ ম্যাচে (শুধু ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি) মাশরাফি নিয়েছেন ৬৪টি উইকেট। আর মেহেদি হাসান ২৮ ম্যাচে নিয়েছেন ৫৮টি উইকেট। বোলিংয়ে হতাশ করেছেন তাসকিন।

দেখা যাচ্ছে ব্যাটিং-বোলিং মিলিয়ে অভিজ্ঞরাই কেবল দলকে টানছেন। তরুণরা যে একেবারে অবদান রাখছেন না, তা নয়। তবে তাদের অবদান সেভাবে উল্লেখযোগ্য হতে পারছে না।

এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী— এমন প্রশ্ন করা হয়েছিলো মাহমুদকে। উত্তরে তিনি বলেন, ‘এদেরকে আরো সময় দিতে হবে। এরা যতো খেলবে, ততো উন্নতি করবে।’

সুজন এ সময় জানান, নিদাহাস ট্রফির পর ছুটিতে যাওয়া কোর্টনি ওয়ালশ শিগগিরই বাংলাদেশে ফিরবেন। ছুটিতে যাওয়া চাম্পাকা রামানায়েকেও দেশে ফিরবেন শিগগিরই। তারা ফিরলেই শুরু হয়ে যাবে ক্রিকেটারদের অনুশীলন। জুনের আগে জাতীয় দলের আর খেলা নেই। মাহমুদ মনে করেন, এই সময়ে টানা অনুশীলন করে দারুণ উন্নতির সুযোগ আছে ক্রিকেটারদের সামনে।